রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে বঙ্গভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণজমায়েত শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেল ৪টার দিকে এ গণজমায়েত শুরু হয়।

গণজমায়েতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, কী খেয়ে, কার কথা শুনে, মানসিক অবস্থার কোন পর্যায়ে গিয়ে, এখন মুখ দিয়ে কার চক্রান্ত উচ্চারণ করছেন, আপনার কাছে পদত্যাগপত্র নাই। আমরা ফ্যাসিস্ট চুপ্পুসহ সব ফ্যাসিস্ট দোসরদের একটি কথা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আমরা যদি বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট ও খুনিদের কোনো উৎপাত লক্ষ্য করি ছাত্র-জনতা ৫ আগস্টের মতো ঐক্যবদ্ধভাবে তা প্রতিহত করবে।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদেরও দেশব্যাপী ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সারজিস বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন স্পষ্ট বার্তা দিতে চায়, আমরা চোখ দিতে প্রস্তুত, পা হারাতে ও রক্ত দিতেও প্রস্তুত। জীবন দিয়ে হলেও ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নামধারী ফ্যাসিস্টদের প্রতিহত করতে আমরা আমৃত্যু লড়াই করব।

এ সময় বৃহস্পতিবারের মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানান সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ।

পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে বঙ্গভবন ঘেরাওয়ের হুঁশিয়ারি দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এ সমন্বয়ক।

তিনি বলেন, সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত বিপ্লব চলবে।

আন্দোলনকারীরা বলেন, বর্তমান রাষ্ট্রপতি আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার দোসর। আমরা চাই না তিনি রাষ্ট্রপতি পদে থাকুন। তাই আমরা তাকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছি তিনি যেন রাষ্ট্রপতির পথ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ না করেন তাহলে আমরা জানি তাকে কীভাবে সরাতে হবে। ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটামে কাজ না হলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিজে আহত হয়েছেন জানিয়ে বাহার উদ্দিন নামে একজন বলেন, রাষ্ট্রপতি চুপ্পু যে পর্যন্ত তার পদ থেকে পদত্যাগ না করবেন সে পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না। চুপ্পু একজন মিথ্যাবাদী। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসর। আমরা চাই না কোনো স্বৈরাচারের দোসর এ পদে থাকুক।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার তোপের মুখে গত ৫ আগস্ট পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি পালিয়ে যাওয়ার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং আমি তা গ্রহণ করেছি।’

তবে সম্প্রতি মানজমিন পত্রিকার সম্পাদক মতিউর রহমানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানান, তিনি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে এ-সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়ত সময় পাননি।’

এরপর নতুন করে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সরকার পতনে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজ।

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।