শাহ জাহান আলী মিটন , সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:
ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ মোকাবিলায় সাতক্ষীরা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ডানা’ আগামী ২৫ তারিখ সকালের ভিতরে সাতক্ষীরা উপকূল অতিক্রম করবে। ডানা ১৫ কিমি. বেগে তার দাপট দেখাবে। তবে, ঘুর্ণিঝড় কেন্দ্রে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) নাগাদ গতি বৃদ্ধি করে উপকূলের দিকে আসবে। জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা খুবই কম। আর সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় ডানা’র আঘাত হানার সম্ভাবনা কম। তবে আমরা প্রস্তুত থাকবো। ইতোমধ্যে জেলায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। থাকবে আগামী ৩ দিন। এজন্য এ ঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আমাদের উপকূলীয় উপজেলা শ্যামনগর, আশাশুনিসহ কালিগঞ্জ ও দেবহাটা এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা; শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা; জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করা; একই সঙ্গে প্রত্যেক ইউনিয়নে মেডিক্যাল টিম প্রস্তুত করা; পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও খাওয়ার পানি মজুত রাখা; দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি জরুরি ত্রাণকাজে ব্যবহারের জন্য নগদ টাকা মজুত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ডানা’ মোকাবিলায় জেলার সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শুক্রবার ও শনিবারের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দুর্যোগকালীন কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যে কোন তথ্যের জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত থাকবো।
এদিকে, সাতক্ষীরা জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ মোকাবেলায় ১৬৯টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ ৮৮৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যবহারের উপযোগী করা হচ্ছে। দুর্যোগকালীন সময়ে জরুরি কাজে অংশগ্রহণের জন্য ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোস্তক আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক মাশরুবা ফেরদৌস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সরোয়ার হোসেন, পানি উন্নয়ন অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা আকাশ আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়াইব আহমাদ, জেলা তথ্য অফিসার জাহারুল ইসলাম টুটুলসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের প্রধানগন উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, শ্যামনগর উপজেলা ছাড়াও আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর, শ্রীউলা, কুড়িকাহুনিয়া, হরিশখালী, বিছট এলাকাগুলো মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ। তাছাড়া, আশাশুনি সদরের বলাবাড়িয়া, দয়ারঘাট এবং মনিপুর থেকে ভোলানাথ পর্যন্ত দেড় কি.মি. রাস্তা খুব নাজুক। কালিগঞ্জের শুইলপুরে বেড়িবাঁধে ফাটল রয়েছে। এজন্য ইউনিয়ন ভিত্তিক জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা প্রয়োজন।
সভায় জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এনজিও প্রতিনিধি ও সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।#