নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপি কোনো আপস করবে না : তারেক রহমান

নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপি কোনো আপস করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীতে কৃষক দলের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের এক অনুষ্ঠানে মাঠ পর্যায়ে এই বার্তা পৌঁছে দেয়ার জন্য সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি নির্দেশনা দেন।

তারেক রহমান বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে আপনারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিটি ইউনিয়নে যাচ্ছেন। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলবেন, প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলবেন, হয়তো একজন গৃহিণী, একজন ছোট দোকান কর্মচারি কিংবা মালিকের সঙ্গে কথা বলবেন। এ রকম বহু শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। তাদের প্রত্যেককে একটি মেসেজ দিতে হবে। ভাই, তুমি যে রাজনীতিতেই বিশ্বাস করো না, কেন? একটি জায়গায় এসে দাঁড়াও। অর্থাৎ তুমি যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দাও। কিন্তু ভোট যাতে হয়- এই ব্যবস্থাটা করতে হবে যে কোনো মূল্যে। আমাদের স্পষ্ট বার্তা। নিরপেক্ষভাবে ভোট হতে হবে, এটার সঙ্গে কোনো কম্প্রোমাইজ নেই। যদি এটি নিশ্চিত করা যায়, ইনশাআল্লাহ, ধীরে ধীরে আমরা দেশের সমস্যার সমাধান করতে পারব, মানুষের সমস্যা কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে। কাজেই এর সঙ্গে কোনো আপস নেই।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, তোমার যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দাও, আমাকেও ভোট দেয়ার দরকার নেই। তোমার যাকে ইচ্ছা মনে হয় বুদ্ধি-বিবেক, জ্ঞান দিয়ে তাকে ভোট দাও। কিন্তু ভোট হতে হবে সকাল-বিকেল। যাকে খুশি আমি ভোট দেব, নিশ্চিন্তে-নিরাপদে ভোট দেবো- এটার সাথে কোনো আপস নেই। এই মেসেজটা আপনাদের নিয়ে যেতে হবে।

কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান। কৃষক দল আগামী তিন মাস ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষক সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, ওই ডামি নির্বাচন হবে না, নিশিরাতে নির্বাচন হতে পারবে না। দিনের আলোতে ভোট হতে হবে, যাকে খুশি তাকে ভোট দেয়ার স্বাধীনতা থাকতে হবে, নিরাপদে ভোট দেয়ার স্বাধীনতা থাকতে হবে। কেউ কাউকে ডিস্টার্ব করবে না ভোট দেওয়ার সময়ে। ভোটকেন্দ্রে যাবে, লাইন ধরবে, ভোট দিয়ে আসবে। তার মত সে প্রকাশ করবে-কোনো ভয়-ভীতি থাকবে না।

তিনি বলেন, দেশ, দেশের মানুষ এবং এ দেশের জাতীয়তাবাদী শক্তি- এই তিনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। এই ষড়যন্ত্র যে থেমে নেই সেটা আপনারা কমবেশি প্রতিনিয়তই পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এবং বিভিন্ন টেলিফোনের আলাপেও জানতে পারছেন। জাতীয়তাবাদী শক্তির সকল নেতা-কর্মীদের বলব, ষড়যন্ত্র যে থেমে নেই- এই কথাটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা যতক্ষণ পর্যন্ত দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম না হবো, ততক্ষণ পর্যন্ত বাজারমূল্যের যে সিন্ডিকেট তা ভাঙা সম্ভব হবে না। কারণ, এটিকে যদি ভাঙতে হয়, বাজারের দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনতে হয়, তাহলে প্রকৃত জনপ্রতিনিধি দরকার- যারা মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে। যেদিন এ রকম একটি সিস্টেম তৈরি করা সম্ভব হবে, সেদিনই বাজার পরিস্থিতি অনেকাংশে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ করে নিয়ে আসা যাবে মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ঠিক একইভাবে শিক্ষাব্যবস্থা বলেন, শিল্প বলেন, দেশের যে ব্যবস্থার কথা বলেন না কেন- সেটাকে যদি উন্নত করতে হয়, দুর্নীতিকে যদি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসতে হয়, স্বাস্থ্য-শিক্ষা যেটারই উন্নত করতে চাই না কেন, জনগণের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করতে না পারলে, জনগণের কাছে জবাবদিহি করে এ রকম ব্যক্তিদের সামনে আনতে না পারলে কোনোভাবেই আমরা কিছু করতে পারব না।

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের স্বার্থে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীতে ইনশাআল্লাহ বিএনপি জনগণের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করলে আমরা শহীদ জিয়ার খাল খনন কর্মসূচি শুরু করব। এটি আমাদের শুরু করতে হবে কৃষকের পানির সুবিধার কারণে, রিজার্ভ ওয়াটারের কারণে। পানির লেভেল নিচে নেমে গেছে, এটাও কিন্তু আমাদের বিপদের কারণ। এমন অনেক কারণেই আমাদের খাল খনন করতে হবে। পানির অভাবে ফসল উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয়। খাল খননের মাধ্যমে শহীদ জিয়া পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। যেখানে একটি ফসল হতো সেখানে পানির কারণে দুইটি হয়েছিল, দুইটি ফসলের জায়গায় ৩টি ফসল হয়েছিল।

আলোচনা সভায় কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সাধারণ সম্পাদক (পদ স্থগিত থাকা) শহিদুল ইসলাম বাবুল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন প্রমুখ।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।