শনিবার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ সাতক্ষীরা জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সদর উপজেলার জলাবদ্ধতা কবলিত দামারপোতা, ছাগলা স্লুইসগেট, কামারডাঙ্গা, বাগডাঙ্গা, বেতনা নদীর ওয়াপদা বাঁধ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক জলাবদ্ধতার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক এসময় অবলোকন করেন পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা জলাবদ্ধ রয়েচে। একইসাথে পৌরসভার বাইরেও রয়েছে জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতার ভয়াবহ চিত্র ও জনদুর্ভোগ জেলা প্রশাসক সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ডাঙা কৃষি জমিও এখন জলাবদ্ধতার কারণে বিলের রূপ ধারণ করেছে। এগুলোকে ‘কৃষিজমি’ না বলে ‘বিল’ বলাই শ্রেয়! পাশাপাশি ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও এখনো কিছু বসতবাড়িতে পানি রয়েছে। এসব বসতবাটির লোকজন অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে আছে।
এ সময় জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের সাথে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত একজন যুগ্ম সচিব। মূলত যুগ্ম সচিব মহোদয়ের ব্যক্তিগত অনুরোধে জেলা প্রশাসক স্বচক্ষে তাঁর এলাকা পরিদর্শনে যান।
এসময় জলাবদ্ধতার ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে তিনি কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে যান! কোন বৃষ্টি নেই, বন্যা নেই, তারপরও জলাবদ্ধতা!
যুগ্ম সচিব এবং স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জানা যায়, এ সমস্যা এক যুগেরও পুরোনো। পানি বের হওয়ার পথ নেই। পাশের বেতনা নদী খনন করা হলেও এলাকার কাছাকাছি স্লুইসগেট এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী একজন নেতার কারণে নদী খননের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বাঁধা দেওয়ায় প্রায় ৬০০-৭০০ মিটার জায়গা ভরাট অবস্থায় থাকায় স্লুইসগেট অকার্যকর রয়েছে এবং নদীর প্রবাহদ্বার বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। একজন ব্যক্তির ক্ষমতার অপব্যবহার ও ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার কারণে সদর উপজেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ জলাবদ্ধতার শিকার!
জেলা প্রশাসক জানতে পারেন, উক্ত স্থান তথাকথিত ক্ষমতাধর ব্যক্তি মাছের ঘের করে স্থানে স্থানে নদীর প্রবাহ মূখ আাটকে দিয়েছে। এই কারণে স্লুইসগেট দিয়েও লোকালয়ের পানি নদী দিয়ে বের হতে পারছেনা।
জেলা প্রশাসক তাৎক্ষণিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবিহিত করিয়ে অনতিবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেন। তাঁকে সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়, যাতে আগামী পনেরো দিনের মধ্যে নদীর অখননকৃত অংশটুকু খনন শেষ করে স্লুইসগেটের মুখ খুলে দেন। আশা করা যায়, দ্রুতই সদর উপজেলার বেতনা নদীতে অবস্থিত ‘ছাগলা’ স্লুইসগেট এলাকার লক্ষ লক্ষ মানুষ জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে অচিরেই মুক্তি পাবেন!
Check Also
সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে দুবলার চরে গেলেন ৪০১জন পূণ্যার্থী
উপকূলীয় অঞ্চল (শ্যামনগর): পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে অনুমতি নিয়ে বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরে রাস মেলায় গেছেন …