পাটকেলঘাটা সংবাদদাতা: পাটকেলঘাটা থানার ধনদিয়া, নগরঘাটা, সরুলিয়া, কুমিরা ও খলিশখালি ইউনিয়নে দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে বোরো চাষাবাদ নিয়ে অনিশ্চিয়তার মুখে পড়েছে হাজারো কৃষক। তবে দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেল ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল আমিন। তারা বিভিন্ন নদ-নদী ও খালের অবৈধ নেটপাটা অপসারণ ও স্কেভেটর মেশিনের সাহায্যে খাল প্রশস্ত করতে কাজ করছেন। এ সময় নদী ও খালের পানি প্রবাহ নিরবচ্ছিন্ন করার লক্ষ্য অববাহিকার লোকজন নিয়ে চারটি কমিটি গঠন করেছেন। সূত্র জানায়, পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা, সরুলিয়া ও খলিশখালি ইউনিয়নের ৭০টি গ্রামে অতিবৃষ্টিতে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়েছে মৎস্য ঘের ও ফসলি জমিতে। এখনো ৫-৭ ফুট পানিতে তলিয়ে আছে হাজার হাজার একর ফসলি জমি। এবার ইরিবোরো মৌসুমে কৃষকের ধান চাষের অনিশ্চিয়তা দেখা দেওয়ায় উপজেলা প্রশাসন বিশেষ ভাবে নজর দিয়েছেন পানি নিষ্কাসন করার। সে লক্ষ্যে তারা দিনরাত কাজ করছেন।
গত এক সপ্তাহে উপজেলার জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য শুভাষিনী-শিরাশুনি থেকে নওয়াপাড়া ও জিয়ালা-নলতা পর্যন্ত খালে থাকা অবৈধ নেটপাটা অপসারণ করা হয়েছে। এছাড়া গত শনিবার দলুয়া-শালিখা নদীতেও একইভাবে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় স্থানীয় ভুক্তভোগী জনসাধারণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের কাজে সহযোগিতা করেন। অভিযান শেষে তাদের নিয়ে দলুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ মো. রাসেল। এসময় নগরঘাটা, সরুলিয়া, খলিশখালি ও মাগুরা ইউনিয়নের নদী সংলগ্ন ওয়ার্ডের ভুক্তভোগী জনসাধারণের সমন্বয়ে ৪টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। নদীর পানি প্রবাহ নিরবিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে এই কমিটিগুলো কাজ করবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন খলিষখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাব্বির হোসেন, সরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শেখ মাসুদসহ সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও জনসাধারণ।
শাঁকদাহ গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, অতিবৃষ্টিতে এলাকায় এবার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য ঘের, ফসলি জমি, সবজির ক্ষেত এখনও পানির নিচে তলিয়ে আছে। কবে পানি শুকাবে আর আমরা ফসল চাষ করতে পারব জানিনা। আমাদের চিন্তার অন্তনেই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সহকারী কমিশনার (ভূমি)ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার প্রত্যন্ত নি¤œ-অঞ্চলগুলো দীর্ঘস্থায়ী জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার নদ-নদী ও খালে অবৈধভাবে নেটপাটা দিয়ে পানি প্রবাহে বিঘœ সৃষ্টি করেছে এক শ্রেণীর মানুষ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মো. রাসেল বলেন, এলাকার মুষ্টিমেয় কিছু দুষ্ট প্রকৃতির মানুষের কারণে উপজেলা ব্যাপী মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। বর্ষাকাল শেষ হয়ে শিত চলে আসছে। অথচ এখনও হাজার হাজার মানুষ পানির নিচে বসবাস করছে। তাদের আকুতির কথা বিবেচনায় নিয়ে রাতদিন এক করে কাজ করে যাচ্ছি।
Check Also
আশাশুনি সদর ইউনিয়ন জামায়াতের ৮টি ওয়ার্ডে আংশিক কমিটি গঠন
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি প্রতিনিধি।।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আশাশুনি সদর ইউনিয়নের ৮টি ওয়ার্ডে আংশিক কমিটি গঠন করা …