সাতক্ষীরা সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ নানাবিধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যদিও এ অভিযোগ নতুন নয়। এর আগেও একাধিকবার এসব অভিযোগের বোঝা কাঁধে নিয়ে অনেকবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন তিনি। বিশেষ করে পতিত সরকারের আমলে শিক্ষা অফিসকে দুর্নীতির দোকানঘরে পরিণত করেছিলেন তিনি। এবার সেই দুর্নীতি আড়াল করতে নতুন কৌশল অবলম্বন করেছেন এই কর্মকর্তা। এমনটি বলছেন অভিযোগকারীরা। তারা বলছেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও সহকারী প্রাথমিক জেলা শিক্ষা অফিসারদের বশ করতে এবার এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে নজরুল ইসলাম। জানা গেছে, কর্মকর্তাদের গিফট প্রদান করা হবে ও ভুড়িভোজের আয়োজন করা হবে। এর আগেও দুর্নীতির অভিযোগের সত্যতা পায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তাতে কোন কাজ হয়নি। এবার দুর্নীতির অভিযোগে প্রকাশ্যে এসেছেন শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ ২জন সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ও উপজেলায় দাপ্তরিক কাজ ফেলে রেখে দাওয়াত খাওয়া ও গিফট নেওয়ার প্রবণতা সংক্রান্ত অভিযোগের অভিযোগ একাধিক মহল থেকে উঠেছে।
এদিকে অপর এক অভিযোগে বলা হচ্ছে, গত ২৫ নভেম্বর সকাল ১০টায় যথারীতি তথাকথিত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অল্প কিছুক্ষণ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী ও সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. কামরুজ্জামান ও মো. মোজাফফর উদ্দীন উপস্থিত হয়ে ক্রেস্ট ও সম্মানী নিয়ে অতি দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন। সম্মানী বাবদ (রূপান্তরিত উৎকোচ) খামে ভরে হোসনে ইয়াসমিন করিমীকে ১০হাজার এবং মো. কামরুজ্জামান ও মো. মোজাফফর উদ্দীন প্রত্যেককে ৫হাজার করে মোট ১০ হাজার টাকা দেওয়া হলে তারা টাকা নিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। জেলার কর্মকর্তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন প্রধান শিক্ষকগণ।
এদিকে সূত্র বলছে, নজরুল ইসলামের বড় ভাই সিন্ডিকেটের সক্রিয় একজন সদস্য এবং নজরুল ইসলামকে সহায়তাকারীগণ বড় ভাই গ্রুপের ৫স্তর বিশিষ্ট সিন্ডিকেটের কোন না কোন স্তরের সদস্য।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নজরুল ইসলাম তার ২টি ক্লাস্টারে অনলাইন বা অফলাইন কোন পরিদর্শন করে না। বিভিন্ন স্কুল থেকে স্লিপের কাজ না করে অর্থ ভাগাভাগি করেন, যার দালাল শওকত আলী নামের একজন প্রধান শিক্ষক। শওকত আলী ১১টার দিকে স্কুলে গিয়ে স্বাক্ষর করে সেখান থেকে শিক্ষা অফিসে এসে নজরুল ইসলামের সাথে পরামর্শ করেন। যে স্কুল টাকা দিতে রাজি হয় না বা বিলম্ব করে শওকত-নজরুলকে পরেরদিন জাস্ট ৯টায় সেই স্কুলে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়। নজরুল যথারীতি সকাল ৯টা ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে সেই স্কুলে হাজির হয়। নজরুল ইসলামের অনলাইন পরিদর্শনের তালিকা থেকে জানা যায়, অধিকাংশ স্কুল ৬ মাসেও ভিজিট হয়নি অথচ ভিজিটিং খরচ বাবদ শওকতের মাধ্যমে উৎকোচ নেওয়া অব্যাহত রয়েছে। শওকতের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে সত্য প্রমাণিত হলেও বড় ভাই সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য হওয়ায় তদন্তে বদলির সুপারিশ থাকলেও তা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ তার ২জন সহযোগী সহযোগিতা করে আসছেন। এ বিষয়ে গত সেপ্টেম্বর মাসে তার তদন্ত রিপোর্ট জমা হয়েছে কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়নি জেলার ওই শীর্ষ কর্মকর্তা।
উৎকোচ গ্রহণ, অনলাইনে পরিদর্শন না করা, রেমালের অর্থের কাজ না করে অর্থ ভাগাভাগি যা তদন্তে প্রমাণিত, খাতা বিক্রি করে ১৫লক্ষ টাকার সরকারি সম্পদ আত্মসাৎ, ঘোনা কাজীপাড়া সপ্রাবির গাছ ও পুরাতন সীমানা প্রাচীর বিক্রি করে অর্থ ভাগাভাগি, একই দিনে দুই ভেন্যুতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সরকারি সম্পদ আত্মসাৎ, স্লিপের বরাদ্দ হতে কাজ না করে ভাগাভাগিসহ বহুবিধ অভিযোগ মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। কিন্তু সর্ষের মধ্যে ভূত থাকায় প্রতিকার পাচ্ছে না সাতক্ষীরাবাসী। ফলে কোমলমতি শিশুদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থের সিংহভাগ চলে যাচ্ছে নজরুলগংয়ের সিন্ডিকেটের হাতে। এ চিত্র শুধু সাতক্ষীরা সদরের নয়, বাকি ৬টি উপজেলায় একই দশা বলে জানায় সূত্র। তবে এ ব্যাপারে
Check Also
৩০ নভেম্বর জামায়াতের আমীরের আগমন উপলক্ষে সাতক্ষীরায় সংবাদ সম্মেলন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সাতক্ষীরায় আগমন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে …