দেবহাটার যুবলীগের সভাপতি মিন্নু জেল হাজতে

স্টাফ রিপোর্টার: দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি ও দুর্ধর্ষ ক্যাডার মিজানুর রহমান মিন্নুর (৪৭) কে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার পারুলিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে দক্ষিণ পারুলিয়া গ্রামের মৃত দীন আলী গাজীর ছেলে। জানা গেছে, ২০১৩-১৪ সাল থেকে জামায়াত-বিএনপি নেতা কর্মী ও নিরীহ মানুষকে দমন নিপীড়নের লক্ষে ব্যাপক তান্ডব চালাতে থাকে। বিশেষ করে ২০১৪ সালে দেবহাটার নাংলা গ্রামের জামায়াতকর্মী আনারুল ইসলামকে মৎস্যঘের থেকে তুলে নিয়ে কথিত বন্দুক যুদ্ধ দেখিয়ে বিচার বহির্ভূত হত্যা করা হয়েছে এমন দাবি করে ২০২৪ সালের ৩০ আগস্ট নিহতের ভাই একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলা সহ আরো দুটি মামলায় অভিযুক্ত করে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। আরো জানা গেছে, যুবলীগ নেতা মিন্নুরের নেতৃত্বে পারুলিয়া এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে ওঠে। এই বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে জমি দখল, মৎস্যঘের দখল, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান দখল, ভাংচুর, লুটপাট, মানুষের উপর হামলা, চোরা ঘাট, মাদক পাচার সহ বিভিন্ন অপকর্ম চলে আসছিল। এমনকি নিরীহ মানুষ, সংবাদকর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন মানুষকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে চাঁদাবাজী, হয়রানি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুথানে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা পালিয়ে গেলে মিন্নুরও আত্নগোপনে চলে যান। এদিকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাসহ আরও দুইটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। পারুলিয়ার এক যুবক জানায়, ২০২৩ সালে মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী মারা যাওয়ার পরের দিন ১৫ আগস্ট দুপুরে বাড়ি থেকে মিন্নুরের অফিসে ডেকে নিয়ে তাকে মিথ্যা নাশকতা মামলায় পুলিশের কাছে তুলে দেয়। পরে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। তার মত অসংখ্য মানুষকে মিথ্যা ভাবে মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করে মিন্নুর। সাম্প্রতিক দেবহাটায় ৫ সংবাদ কর্মীকে জড়িয়ে একটি মিথ্যা মামলার ইন্ধন দেয় যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিন্নুর। তার এক সহযোগীকে দিয়ে এ মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করলে তার তদন্ত করে সিআইডি পুলিশ। পরে তদন্ত কর্মকর্তাদের নানা ভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে মিন্নুর সহ আওয়ামী লীগের নেতারা। পরে মামলাটি মিথ্যা হওয়ায় আদালত তা খারিজ করেছেন বিজ্ঞ বিচারক। এদিকে গ্রেফতার মিন্নুরকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তার বাহিনীর কাছে থাকা অস্ত্র সহ বিভিন্ন তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে মানে করেন অনেকে। দেবহাটা থানার ওসি মো. হযরত আলী জানান, জামায়াত কর্মী আনারুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে যুবলীগ নেতা মিজানুর রহমান মিন্নুরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাছাড়া তিনি ২০১৯ সালের আরও দুটি মামলায় অভিযুক্ত। বুধবার তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

Check Also

দেশের সর্বাধিক শহীদের জেলা সাতক্ষীরা: ডাঃ শফিকুর রহমান

আমীরে জামায়াত ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে দেশকে ধ্বংস করা হয়েছে। এ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।