আশিয়া বেগমের বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই। মাথায় পাকা চুল। সোজা হয়ে দাঁড়াতেও পারেন না। লাঠিতে ভর দিয়েই চলাফেরা তার। আত্মীয়স্বজনও তেমন নেই। আশিয়ার ঠাঁই হয়েছে একমাত্র ছেলে রিপনের সংসারে। রিপনও তিন সন্তান নিয়ে কোনোরকম অটোরিকশা চালিয়ে জীবনযাপন করেন। শীত এলে কষ্টের সীমা থাকে না আশিয়াসহ পুরো পরিবারের
উপহারের কম্বল হাতে পেয়ে আশিয়া বলেন, দিনে রোদ উঠে রাতে অনেক ঠাণ্ডা পড়ে, তখন শীতে অনেক কষ্ট হয়। ভোররাতে টপটপ করে কুয়াশাও পড়ে তখন বেশি ঠাণ্ডা লাগে। ভোটের সময় অনেকেই আহে কম্বল দিতে। এখন কেউ আহে না, তোমরাই দিলে (নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশন)। কম্বল পেয়ে আমার খুব উপকার হইল।
মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকার দোহার উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নে ‘নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের’ উদ্যোগে অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আর এ কম্বল হাতে পেয়ে কথাগুলো বলছিলেন আশিয়া বেগম।
এর আগে দোহারের রাইপাড়া, কুসুমহাটি, নয়াবাড়ি ও মাহামুদপুর ইউনিয়নের শীতার্ত মানুষকে কার্ড বিতরণ করে প্রতিটি ইউনিয়নে সহস্রাধিক পরিবারকে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে।
কুসুমহাটি এলাকায় কম্বল পেয়ে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে কুদ্দুস বেপারী (৬০) বলেন, শীতের মধ্যে সারারাত কষ্টে থাকি। জানুয়ারি মাসে শীত একটু বেশি পড়বে মনে হচ্ছে। কম্বলটা পেয়ে অনেক ভালো হইল।
বিলাশপুর এলাকায় কিছু অসহায় ও বয়স্ক মানুষের হাতে কম্বল দেওয়াতে পুরো এলাকার লোকজন বেশ খুশি হয়েছেন। ওই এলাকার স্থানীয় আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা অনেক বেশি খুশি হয়েছি। সাধারণত এত প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে তেমন একটা সহযোগিতা পৌঁছায় না। সেখানে ‘নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশন’ শীতার্ত মানুষদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে বৃদ্ধরা অনেক বেশি খুশি হয়েছেন। প্রকৃত উপকারভোগীদেরই কম্বলগুলো পৌঁছে দিয়েছেন।
লাঠিতে ভর করে কম্বল নিতে মাঠে এসেছেন অমল রায়। কম্বল হাতে কেঁদে ফেলেন তিনি। অমল রায় বলেন, আমাদের সন্তান নুরুল ইসলাম সাহেবের জন্য আশীর্বাদ করি। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতবাসী করেন। পাশাপাশি তার স্ত্রী নুরুল ইসলাম ফাউন্ডেশন ও যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এত দূরে এসে আমাকে খুঁজে একটা কম্বল দেওয়ার জন্য খুব ভালো লাগল।
কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দোহার উপজেলার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।