সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ লাগামহীন দূর্ণীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল গ্রেফতার। শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারী নাশকতার অভিযোগে আশাশুনি পুলিশ তাকে আটক করেছে । তিনি কয়েক ডর্জন মামলার আসামী বলে পুলিশ জানায়।
ভিন্নমত দমনে বিগত ১৫ বছরে আবু হেনা শাকিল বিএনপি জামায়াতের অসংখ্য নেতাকমীর্ও কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা অর্থ বাণিজ্য করেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
আবু হেনা শাকিল ঘোলা— হিজলা— কল্যাণপুর খেয়াঘাট ও হাজরাখালি— বিছট খেয়াঘাটের খেয়াাঘাট ইজারার ১০ লাখ ৬০ হাজার ১২৮ টাকা আত্মসাৎসহ অপর চারটি খেয়াঘাটের আরো সোয়া তিন লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০২১ সারৈর গত ২৭ জানুয়ারি দুদকের খুলনা বিভাগীয় উপপরিচালক নাজমুল আহসান বাদি হয়ে আবু হেনা শাকিলসহ ১২ জনের নামে দুদকে মামলা দায়ের করেন।
বাংলা ১৪২০—১৪২১ সালে ঘোলা— হিজলা— কল্যাণপুর খেয়াঘাট ইজারাদার আবু হেনা শাকিল ইজারার চার লাখ ২০ হাজার ৪৮০ টাকা পরিশোধ না করায় ২০১৬ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি তৎকালিন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী শেখ মোঃ মনিরুজ্জামান আশাশুনি উপজেলা নির্বাচন অফিসারকে চিঠি দিয়ে আবু হেনা শাকিল যাহাতে ইজারার টাকা পরিশোধ না করে ওই বছরের ২২ মার্চ ইউপি নির্বাচন না করতে পারেন সেজন্য ব্যবস্থা নিতে বললেও তিনি কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় টাকা পরিশোধ না করেও বিগত নির্বাচন করেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আবু হেনা শাকিল।
আবু হেনা শাকিলকে মহাদূর্ণীতিবাজ ব্যক্তি উল্লেখ করে স্থানীয়রা বলেন, গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নে ভূয়া প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলন, কোন কাজ না করে বিভিন্ন প্রজেক্ট দেখিয়ে এডিপি ও এলজিএসপির টাকা তুলে আত্মসাৎ, আর্থিক সুবিধা নিয়ে ধনী লোকদের ভিজিডি কার্ড দেওয়া ও গরীবের পরিবর্তে পাকা বাড়ির মালিক বিত্তশালী ঠাকুর দাস, মানিক চক্রবর্তী, রাসেদ সরদার, রহিমা খাতুন ও ভারতীয় নাগরিক বীরেন্দ্রনাথ সানা, সরকারি চাকুরিজীবী আব্দুল খালেককে ১০ টাকা কেজি দরের চাল পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিলের বিরুদ্ধে।
সরকারি খাস জমিতে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ, খাস জমি দখল করে চিংড়ি ঘের করেছেন চেয়ারম্যান শাকিল। ইউপি সদস্যদের সম্মানি ভাতা দেননি তিনি। সরকারি খাস জমিতে তৈরি করেছেন বিলাস বহুলবাড়ি। চেয়ারম্যানের সহায়তায় পুইজালা গ্রামের রমেশচন্দ্র মন্ডলের স্ত্রী কনিকা মন্ডলের টিপসই জাল দুই বছর ধরে ভিজিডি’র চাল উত্তোলন করেছেন তার লোকজন। নামমাত্র প্রকল্প সভাপতি ও সম্পাদক করে, একই ব্যক্তিকে পাঁচ বছর কাজ দেখিয়ে ৪০ দিন কর্মসূচীর কাজ ৩০দিনে শেষ করে ভুয়া মাষ্টাররোলের মাধ্যমে অতিরিক্ত ১০ দিনের টাকা উত্তোলন করে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটেয়ারা করে নিয়েছেন চেয়ারম্যান। এডিপিও এলজিএসপির আওতায় ভূয়া প্রকল্পের তালিকা করে লাখ লাখ টাকা, রয়ার সিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের নামে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে ২লাখ ৫০ হাজার টাকা, মহিষকুড়া বিজিএম ক্লাবের মাঠ ভরাটের নামে ৩ বারে ২৪ টান চাল তুলে, অস্ত্বিবিহীন বুড়াখারাটি ইয়ং ক্লাব, কাকড়াবুনিয়া সবুজ সংঘ, শহিদ মিনার নির্মান, নাকতাড়া পাঞ্জেগানা সমজিদ সংস্কার করার নামে লাখ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন চেয়ারম্যান।
বকচর ডিজিটাল রেডিয়েন্ট এন্ড ফ্রেন্ডশীপ ক্লাব সংস্কার করার কথা বলে একই প্রতিষ্ঠানের নামে ৩ বার টাকা তুলেছেন। ভুয়া প্রকল্প দেখানো ও দূর্ণীতি করা বিভিন্ন প্রকল্পের বেশিরভাগের সভাপতি চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারি তার গাড়িচালক আবদুল্লাহ আল মুামন। এখন তার আছে প্রাইভেট গাড়ি, মাছের ঘের, বাগান বাড়ি আর কয়েক কোটি টাকা। বাপের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় মাদকাসক্ত ছেলে সৌরভ রায়হান সাদ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের হাতে নির্যাতিত হয়ে মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন অনেকে। চেয়ারম্যান শাকিলের বিরুদ্ধে নাকতাড়া কালী মন্দিরের জমি দখল করে বিগত ইপি নির্বাচনের পরদিন ভাড়া মোটর সাইকেল চালকদের স্টাণ্ড বানানোর অভিযোগ রয়েছে।
আবু সাইদ বিশ^াস
সাতক্ষীরা
২২/২/২৫