হুসাইন বিন আফতাব,
শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা :
“জীবাশ্ম জ্বালানীতে বিনিয়োগ বন্ধ করো, আমাদের ভবিষ্যৎ বিক্রি করো না”—এই প্রত্যয় নিয়ে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল শ্যামনগরের মথুরাপুর গ্রামে শুক্রবার সকালে খোলপেটুয়া নদীর পাড়ে শতাধিক তরুণ-তরুণীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হলো এক ভিন্নধর্মী জলবায়ু প্রতীকী অবস্থান ও ধর্মঘট।
এই কর্মসূচির আয়োজন করে শরুব ইয়ুথ টিম, আর এতে সহযোগিতা করেছে একশনএইড বাংলাদেশ। সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে অংশ নেয় শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত যুব প্রতিনিধিরা। বিশ্বের অন্যান্য স্থানে অনুষ্ঠিত হওয়া বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘটের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আয়োজকরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
ধর্মঘটে অংশগ্রহণকারী যুবদের দাবি, জীবাশ্ম জ্বালানি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। কল-কারখানা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও পরিবহন খাতে এই জ্বালানির অতিরিক্ত ব্যবহারে বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর চরম বিপর্যয় ডেকে আনছে। তরুণরা মনে করেন, শুধু উন্নত দেশগুলোর কারিগরি সক্ষমতা নয়, বরং রাজনৈতিক সদিচ্ছাই পারে এই বিনিয়োগ বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে বিশ্বকে এগিয়ে নিতে।
ধর্মঘট চলাকালে অংশগ্রহণকারীরা “জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ কর”, “জলবায়ু সুবিচার চাই”, “আমাদের ভবিষ্যৎ বিক্রি করোনা”, “নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াও” ইত্যাদি স্লোগানে মুখর ছিল। তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা মানবতার স্বার্থে প্রকৃত সিদ্ধান্ত নেয়।
এই উপলক্ষে শরুবের নির্বাহী পরিচালক এস এম জান্নাতুল নাঈম বলেন, “পশ্চিমা বিশ্ব প্রতিদিনের ব্যবহারে পৃথিবীর জলবায়ুকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাদের এ আচরণ পরিবর্তন করতেই হবে। আমরা দাবি করি, তারা জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধ করুক এবং আমাদের ক্ষতিপূরণ দিক।”
শরুবের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, “নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগই পারে এই পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করতে। কার্বন নির্গমন কমানোই এখন সময়ের দাবি।”
জলবায়ু কর্মী আবিদ হোসেন আপন বলেন, “শুধু পশ্চিমা বিশ্বই নয়, আমাদের দেশের সরকারকেও নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।”
এই কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন সংবাদকর্মী হুসাইন বিন আফতাব, উপকূল কন্যা তনুশ্রী মন্ডল, এস এম রাশিদুল ইসলাম, মাসুদ রানা, অর্পিতা মন্ডল, হালিমা খাতুন, বিশ্বজিৎ মন্ডল, রাজীব বৈদ্য, হাবিবুর রহমানসহ শরুব ইয়ুথ টিমের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্য এবং অন্য সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
উপকূলের এই কণ্ঠস্বর শুধু সাতক্ষীরার নয়—এটি আজ বৈশ্বিক তরুণ সমাজের সচেতন বার্তা।