আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিগত সরকারের আমলে দায়ের করা ৭ হাজার ১৮৪টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। আরও এক লাখ মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জমা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া মডেল মেঘলা আলমকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেফতার করে ডিটেনশন দেওয়া হয়েছে। তাকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়াটি ঠিক হয়নি। তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং সে অভিযোগ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু তাকে গ্রেফতারের প্রক্রিয়া ঠিক ছিল না।
মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণের মামলায় পুলিশ চার্জশিট প্রস্তুত করেছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, তারা আশা করছেন চার্জশিট রোববারই আদালতে দাখিল করা হবে।
আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, আদালতের দেওয়া জামিনের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে দায়ী করা হয়। প্রকৃতপক্ষে জামিন দেওয়া বা না দেওয়ার একক এখতিয়ার উচ্চ আদালতের। সেখানে দোষী করা হচ্ছে আইন মন্ত্রণালয়কে।
প্রবাসীদের অবদানের কথা স্বীকার করে উপদেষ্টা বলেন, তারা যেভাবে রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছেন তাদের প্রতি সরকার ও দেশবাসীর কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। তিনি আরও বলেন, তারা ভোটার হওয়া এটা তাদের নাগরিক অধিকার।
রোববার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে এক সংবাদ জরুরি সম্মেলনে আইন উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ইতোমধ্যে ৭ হাজার ১৮৪টি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে। আরও প্রায় ৫০ হাজার থেকে এক লাখ মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জমা আছে। পর্যায়ক্রমে সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হবে।
রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, অনেক সময় এমন সব মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশের জন্য আসে যা প্রকৃত পক্ষে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা না। অনেকে কৌশলে এসব মামলা তালিকায় ঢুকিয়ে দিচ্ছে। এ বিষয় আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে বলেও দাবি করেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, মডেল মেঘনার ব্যাপারে কিছু অভিযোগ আছে সে বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে। তবে তার গ্রেফতারের প্রক্রিয়া ঠিক হয়নি। তার ব্যাপারে যাচাই-বাছাই করে খুব দ্রুত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নেবে। তার বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা তদন্ত সাপেক্ষে নেওয়া হবে।
এই উপদেষ্টা বলেন, মেঘনাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেফতার করা ঠিক হয়নি-এটা আমরা নির্দ্বিধায় স্বীকার করছি। আমাদের কাজে ভুল হবে এবং আমরা তা স্বীকার করব। অতীতের সরকার ভুল করলেও স্বীকার করত না। এ ভুলের দায় কার এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, আইন মন্ত্রণালয় তো আইন প্রয়োগ করে না।
গত বুধবার রাতে মডেল মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী, পরদিন বৃহস্পতিবার রাতে আদালত তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন। তিনি এখন কারাগারে।