কুয়েটের বহিষ্কারাদেশ থেকে নির্দোষ শিক্ষার্থীদের অব্যহতি প্রদানের দাবি ছাত্রশিবিরের

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ৩৭ জন শিক্ষার্থী বহিষ্কারের ঘটনায় নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য তদন্তের ভিত্তিতে নির্দোষ শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। সোমবার (১৫ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এ প্রতিক্রিয়া জানান।

নেতৃবৃন্দ বলেন, “গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট ক্যাম্পাসে একটি দল বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর পরিকল্পিত ও বর্বর হামলা চালিয়ে ক্যাম্পাস রক্তাক্ত করে। হামলাকারীদের রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ্যে আসার পর সংশ্লিষ্ট সংগঠনও তাদের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট হামলার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তথ্য ও দোষীদের পরিচয় থাকা সত্ত্বেও তারা সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ফলস্বরূপ প্রকৃত অপরাধীদের একটি বড় অংশ শাস্তির আওতার বাইরে থেকে যায় আর অনেক নির্দোষ শিক্ষার্থী অন্যায়ভাবে শাস্তির সম্মুখীন হন।”

তারা আরও বলেন, “উদ্বেগের বিষয় হলো, প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ চিহ্নিত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে ব্যবস্থা না নিয়ে, বরং অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুরো ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নির্মম তামাশার শামিল।’’

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “শিক্ষাঙ্গন কোনো দলীয় কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার স্থান হতে পারে না; ক্যাম্পাস হবে জ্ঞানচর্চা, গবেষণা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রাণকেন্দ্র। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা প্রশাসনের মৌলিক দায়িত্ব। কিন্তু কুয়েট প্রশাসন দীর্ঘ প্রায় দুই মাস ক্যাম্পাস বন্ধ রেখে একাডেমিক কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টি করে তদন্তের নামে প্রহসনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ওপর মনগড়া সিদ্ধান্ত আরোপ করেছে, যা স্পষ্টতই পক্ষপাতদুষ্ট, শিক্ষার্থীবান্ধব মনোভাবের পরিপন্থি এবং কর্তৃত্ববাদী মানসিকতার প্রতিফলন।’’

বিজ্ঞপ্তিতে প্রশাসনের অবস্থানকে নিন্দা জানিয়ে বলা হয়, “আমরা ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের নামে তাদের এই মনগড়া সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে নির্দোষ শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, পাশাপাশি একটি গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীবিধিমালা লঙ্ঘন, বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সহযোগিতা ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক ও বোঝাপড়ার ঘাটতি দূর করে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’’

Check Also

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয় করণ ঘোষনা বাস্তবায়নের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও স্মারক লিপি প্রদান

ফিরোজ হোসেন, সাতক্ষীরা : মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত অনুদানভুক্ত ও অনুদান বিহীন সকল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।