সাতক্ষীরা-২ আসনে জামায়াত মনোনিত ধানের শীষের প্রার্থীকে হয়রানি ও আচারণ বিধি লঙ্গনের অভিযোগে স্ত্রীর প্রেস ব্রিফিং

ক্রাইমবার্তা রিপোট:সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ সাতক্ষীরা-০২ আসনে ২০ দলীয় জোট মনোনিত ধানের শীষের প্রার্থী মুুহাদ্দিস আব্দুল খালেকের স্ত্রী সাজেদা বেগম অভিযোগ করেছেন, তার স্বামীকে হয়রানি মূলক মিথ্যা গায়েবী মামলায় শোন এরেষ্ট দেখিয়ে নির্বাচন থেকে দুরে রাখার ষড় যন্ত্র করা হচ্ছে। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও পেন্ডিং মামলায় তাকে আটক দেখানোর কারণে তিনি কারাগার থেকে বের হতে পাচ্ছে না।
তিনি আজ দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক প্রেস ব্রিফিংএ এমন অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, আমার স্বামী মুহাদ্দীস আব্দুল খালেক, জন্ম লগ্ন থেকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আগরদাঁড়ি ইউনিয়নের ধলবাড়ীয়া গ্রামে বসবাস করেন। বর্তমানে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১০৬, সাতক্ষীরা-২ আসনে ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী হয়ে তিনি নিবাচন করছেন। রাজনৈতিক ও হয়রানি মূলক মামলায়, তিনি দীর্ঘ ৫ (পাঁচ) মাস সাতক্ষীরা কারাগারে আছেন। তার বিরুদ্ধে দায়েকৃত সবকটি মামলায় আদালত থেকে তিনি জামিন পেয়েছেন। বর্তমানে যে সকল মামলায় চার্জশিট দেওয়া হচ্ছে সেসব মামলায় নতুন করে তাকে আসামী করা হচ্ছে। যার ফলে তিনি কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না। আইনের তোয়াক্কা না করে একের পর এক নতুন মামলায় তার নাম অর্ন্তভুক্তি করা হচ্ছে। এভাবে তার মৌলিক ও মানবিক অধীকার হনন করা হচ্ছে। যা বাংলাদেশের সংবিধান পরিপন্থি।
এছাড়া নির্বাচনি আচারণ বিধি লঙ্গন করে সরকার দল ও পুলিশ তাদের নির্বাচনি নেতা কর্মীদের আটক ও হয়রনি করছে। ধানের শাীষের প্রচার মাইক ভাংচুর করা হচ্ছে। পোষ্টার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। কোন প্রতিকার না পেয়ে গণমাধ্যমের সহযোগীতা চান তিনি।
নির্বাচনি আচারণ বিধি লঙ্গনের বিষয়ে তিনি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লিখিতি ভাবে জানিয়েছে। এর পরও তিনি কোন প্রতিকার পায়ননি।
প্রেস ব্রিফিংএ তিনি জেলা প্রশাষকের দেয়া সেই লিখিত কপি তুলে ধরেন। সেই কপিতে তিনি অভিযোগ করেন, আমার স্বামী মুহাম্মাদ আব্দুল খালেক, পিতা- মৃত- আফতাব উদ্দীন, গ্রাম- ধলবাড়ীয়া, ডাক- আগরদাঁড়ী মাদ্রাসা, থানা- সাতক্ষীরা সদর, জেলা- সাতক্ষীরা। তিনি বিগত ২৬/০৬/১৮ ইং তারিখে স্চ্ছোয় আইনের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে জামেিনর জন্য সাতক্ষীরা আদালতে হাজিরা দিলে মহামান্য আদালত আমার স্বামীর জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠায়। ১৪/৮/১৮ ইং তারিখে আমার স্বামীর স্বেচ্ছায় হাজিরা দেওয়া সবগুলো মামলায় জামিন পেলে তাকে কারাগার থেকে বাহির হওয়ার সুযোগ না দিয়ে ২/৯/১৮ ইং তারিখে জি.আর ৮২/১৮ নং মামলায় শোন এরেস্ট দেখিয়ে আমার স্বামীকে কারাগার থেকে বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। উক্ত মামালায় তিনি জামিন পেলে পুনরায় আবারও ৪/১১/১৮ ইং তারিখে জি.আর-৭৫/১৪ নং মামলায় শোন এরেস্ট দেখিয়ে আমার স্বামীকে কারাগার থেকে বের হওয়ার পথ পূনরায় বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমার স্বামী আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার জন্য ১০৬ সাতক্ষীরা-২ থেকে নমিনেশন ফরম ক্রয় করা করেছেন। অথচ তার নমিনেশন জমা দেওয়ার দিনে তার বিরুদ্ধে ২৮/১১/১৮ ইং তারিখে আবারো একটি পেন্ডিং মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এভাবে একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে কারাগারে থাকা অবস্থায় বার বার গায়েবী মিথ্যা মামলায় শোন এরেস্ট দেখিয়ে কারাগার থেকে বের হতে না দেওয়ার ষড়যন্ত্র হতে প্রতিকার চাচ্ছি।

প্রেসব্রিফিংএ তিনি আরো বলেন, সাতক্ষীরার প্রাণ পুরুষ ও গণমানুষের নেতা দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন, মরহুম কাযী শামসুর রহমান সাতক্ষীরা সদর থেকে ১৯৮৬, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে পর পর তিনবার ই জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সাতক্ষীরার আপমর মানুষ মরহুম কাযী শামসুর রহমানের রাজনৈতিক র্দশনকে ভালবাসে ২০০১ এর নির্বাচনেও সাতক্ষীরা সদরের আপমর জনগণ জামায়াতের প্রার্থী অধ্যক্ষ মাও. আব্দুল খালেক কে নির্বাচিত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসাবে সাতক্ষীরার সকল মানুষের প্রিয়ভাজন ব্যক্তিত্ব, দেশ বরেণ্য আলেমে দ্বীন, দুর্নীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন, আমার স্বামী মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক কে প্রার্থী করেছে। সাতক্ষীরার মানুষ তাকে প্রাণদিয়ে ভালোবাসে। দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের নিকট তিনি আস্থাভাজন ও গ্রহনযোগ্য ব্যক্তিত্ব। সে কারনে ২০ দলীয় জোট তাকেই সদর আসনের ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক সদালাপি, জনদরদী, পরোপকারী, জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হওয়ার কারণে রাজনৈতি প্রতিহিংষার শিকার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ৩৮ টি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি স্বেচ্ছায় গত ২৬/০৬/২০১৮ তারিখে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করে। সকল মামলায় আদালত হতে জামিন হওয়ার পর সরকার তার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে পুলিশের দ্বারা একের পর এক মিথ্যা মামলায় তাকে শোন এরস্টে করে চলেছে। সরকার দেশের সংবিধান ও মানবিক অধীকার লঙ্ঘন করে তাকে কারাগারে আটকে রাখার ষড়যন্ত্র করছে এবং যাতে তিনি নির্বাচনের পূর্বে কারাগার হতে বের হতে না পারেন তার নীল নকশা তৈরী করছে।
তিনি আরো বলেন, আমার স্বামী ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি জামায়াতের সদস্য (রুকন) হন। প্রথমে শিবপুর ইউনিয়নের জামায়াতের সভাপতি, ১৯৮৭-৮৯ সাতক্ষীরা সদর উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী, ১৯৮৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ১৪ বছর তিনি জেলা সেক্রেটারী ছিলেন। এ সময়ে মরহুম কাযী শামসুর রহমান (রহ:) এর নির্দেশনা ও তৎকালীন জেলা আমীর অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহর সাহচর্যে তার সাংগঠনিক যোগ্যতার বিকাশ ঘটে। ২০০২ সালে তিনি সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমীর নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মনোনীত হন। ২০১১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১০ বছর তিনি যোগ্যতার সাথে জেলা আমীরের দায়িত্ব পালন করেন । ২০১৮ সালে তিনি কেন্দ্রীয় জামায়াতের অন্যতম সাংগঠনিক সেক্রেটারী নির্বাচিত হন। সেই সাথে তিনি খুলনা অঞ্চল পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি, সাতক্ষীরার সর্বস্তরের মানুষের কাছে এক জন গ্রহণযোগ্য মানুষ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন। শুধু মাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংষার কারণে তাকে বার বার মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আমার স্বামীর বিরুদ্ধে সকল হয়রানিমূলক মামলা, নির্যাতন ও সরকার কতৃক কারাগারে আটকে রাখার ষড়যন্ত্র আপনাদের মাধ্যমে দেশবাসীর নিকট তুলে ধরার আহ্বান জানাচ্ছি। সেই সাথে প্রশাসনের নিকট অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় না জড়ানোর জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন এবং জেলা রিটার্নিং অফিসারের সদয় পদক্ষেপ গ্রহনে বিনীতভাবে অবেদন করছি।

Please follow and like us:

Check Also

রাফায় ইসরাইলি হামলায় একই পরিবারের ৯ জন নিহত

ফিলিস্তিনের রাফায় ইসরাইলি হামলায় একই পরিবারের ৯ সদস্য নিহত হয়েছেন। তবে বেঁচে গেছে ওই পরিবারের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।