বিশ্ব ইতিহাসে মধ্যযুগ কে বলা হয় অন্ধকার যুগ।প্রচীন যুগে কোথাও কোথাও নগর সভ্যতা উন্নয়ন জ্ঞান, বিজ্ঞানে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন হয়।কিন্তু মধ্যযুগে এসে মানব জাতির অগ্রগতি বাধাপ্রাপ্ত হয়। এই হতাশার যুগে আরব ভূমিতে চলে উঠে আলোর মশাল । 610 খ্রিস্টাব্দ “ইসলাম” নামের সত্য বাণী নিয়ে এলেন মুহাম্মদ (সা)। ইসলামের বাণীতে ছিলো মানুষের প্রতি ভালোবাসার কথা, সাম্যের কথা । তাই দ্রুত ইসলামের প্রচার ঘটতে থাকল। ইসলাম বিস্তারের এই ঢেউ লাগে ভারতবর্ষেও। এরই পথ ধরে ত্রয়োদশ শতক থেকে এ দেশে মুসলমানদের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
ইসলাম ধর্মের উদ্ভব হয় আরব দেশে। তাই বাংলার সকল মুসলিম শাসক ছিলেন বিদেশি। রাজ্য বিজয় এবং বাণিজ্য করা দুইভাবে মুসলমানরা আরববিশ্ব,আফ্রিকা, ইউরোপ এবং ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পরে।সময়টা সাত শতকের মাঝামাঝি তখনকার দিনে ধন সম্পদ কৃষিজ পণ্য উৎপাদনের ভারতের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময়। বাণিজ্য করার জন্য সে সময় ভারত ছিল উর্বর ভূমি। এদেশে বাণিজ্য করার লোভ কম বেশী সকল দেশের বণিকদের ছিল। ওদিকে আরবের মুসলিম বণিকরা ও বাণিজ্য বিস্তার শুরু করে একপর্যায়ে তারা পাড়ি দেয় আরব সাগর এই সময় ভারতের পশ্চিম উপকূল গুজরাটে এসে নোঙ্গর করে আরব বণিকদের বাণিজ্য জাহাজ।এখানে বাণিজ্য করে খুব লাভ হয় তাদের। তাই বণিকগণ আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে। এবার জাহাজে চলতে থাকে দক্ষিণ দিকে গুজরাট কর্ণাটক হয়ে মাদ্রাজ বর্তমান চেন্নাই ।বছরের পর বছর চলতে থাকে এ বানিজ্য অভিযান ।আর তাদের কারণে এলাকাগুলোতে ইসলাম ধর্ম ছড়িয়ে পড়তে থাকে। এবার জাহাজ আরো কিছুদূর দক্ষিনে এগিয়ে যায় তারা ।এসে পড়েন বঙ্গোপসাগরে একপর্যায়ে বাংলার চট্টগ্রাম নোয়াখালী উপকূলের নোঙ্গর করে আরব বণিকদের বাণিজ্য জাহাজ । এটাই ছিল সর্বপ্রথম বাংলার মাটিতে মুসলমানদের আগমন।
তবে এ আগমন রাজ্যে বিজয় বা বাংলা শাসনের উদ্দেশ্য ছিল না। এ আগমন ছিল নিছকই বাণিজ্য করার উদ্দেশ্যে ।রাজ্য বিজয় এবং শাসন করার উদ্দেশ্যে মুসলমানদের বাংলা অভিযান শুরু হয় ত্রয়োদশ শতকে শুরুতে। বাণিজ্য অভিযান হলেও এই অভিযানের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসার ঘটতে থাকে বিশেষ করে বিয়ে-শাদির সম্পর্কের মাধ্যমে ইসলাম ধর্ম ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রাম এবং নোয়াখালী উপকূল থেকে মূলত এ অভিযানের মাধ্যমে বাংলার মুসলিম আধিপত্য বিস্তার শুরু হয় ।