ক্রাইমর্বাতা রিপোট: চীনের মুসলিম সংখ্যালঘু জাতিসত্ত্বা উইঘুরদের মানবাধিকার রক্ষায় একটি আইন পাস হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আইনটি পাস হয় বলে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এই আইন অনুযায়ী উইঘুরদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে ‘জড়িত’ চীনের সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে ওয়াশিংটন।
আইনে বলা হয়েছে, ১৮০ দিনের মধ্যে হোয়াইট হাউস কংগ্রেসে একটি প্রতিবেদন জমা দেবে। চীনের কোন কোন সরকারি কর্মকর্তা উইঘুরদের ওপর নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত তাদের নাম পরিচয় উল্লেখ করতে বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
চীনের ওই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।
রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিও এবং ডেমোক্র্যাট সিনেটর বব মেনেনদেজ যৌথভাবে ‘উইঘুর হিউম্যান রাইটস পলিসি অ্যাক্ট’ উত্থাপন করেন। সিনেটের সর্বসম্মত বিধি অনুযায়ী আইনটি পাস হয়। এই বিধি অনুযায়ী আইন পাসে কোনো ধরনের ভোটাভুটি বা বিতর্কের প্রয়োজন পড়ে না।
ডেমোক্র্যাট সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, বার্নি স্যান্ডার্স, অ্যামি ক্লবুচার ও ক্রিস্টিন গিলিব্র্যান্ড আইনটিকে সমর্থন করেছেন। এই সিনেটররা সবাই ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন।
উইঘুরদের প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে চীন। দেশটির দাবি, ‘চরমপন্থা থেকে দূরে’ রাখতেই উইঘুর মুসলিমদের জন্য বিভিন্ন ক্যাম্পে কারিগরি শিক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েক হাজার উইঘুরকে ইতোমধ্যে চাকরিতে নিয়োগও দেওয়া হয়েছে।
তবে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার অভিযোগ, কারিগরি শিক্ষার আড়ালে চীন আসলে ওই ক্যাম্পগুলোতে উইঘুরদের আটকে রেখেছে। যেখানে তাদের ওপর বিভিন্ন সময় নির্যাতন চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত মঙ্গলবার সিনেটের রিপাবলিকান সদস্যরা চীনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার একটি আইন প্রস্তাব করেছেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়ে বেইজিং ‘সম্পূর্ণ জবাবদিহিতা’ না করলে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই প্রস্তাবিত আইনে।
করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। ওয়াশিংটনের দাবি, চীনের উহানের ল্যাব থেকে ছড়িয়েছে ভাইরাসটি। বেইজিং এ দাবিকে অসত্য বলে উড়িয়ে দিয়েছে।