ক্রাইমবার্তা স্পোর্টস ডেস্ক: নিজের অফিসিয়াল ফেইসবুক পাতায় মাশরাফি বলেছেন, তরুণদের সুযোগ দিতেই এই অবসর। অথচ শ্রীলঙ্কা যাওয়ার ঠিক আগে বিডিনিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলে গিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টি নিয়ে তার স্বপ্নের কথা। বলেছেন, ওয়ানডের মত টি-টোয়েন্টি দলটিকেও শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে চান অবসরের আগে।
তাহলে হঠাৎ কেন এই অবসর? কেন এত দ্রুত বদলে গেল ভাবনা? ২০০৯ সালের পর আর টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারেননি শরীরের কারণে। কিন্তু ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সংস্করণ থেকে আনুষ্ঠানিক অবসর নেননি এখনও। টি-টোয়েন্টি থেকে কেন?
বিসিবির বেশ কয়েকটি সূত্র ও মাশরাফির ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে পর্দার আড়ালের অনেক কিছুই।
জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে বেশ কিছুদিন আগেই বিসিবি কর্তাদের জানিয়েছেন, মাশরাফি, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমকে তিনি টি-টোয়েন্টি দলে জরুরি মনে করেন না। আপাতত কোচের ভাবনার বাস্তবায়ন শুরু মাশরাফিকে দিয়েই।
টি-টোয়েন্টি দলকে দাঁড় করানোর মাশরাফির স্বপ্ন ধাক্কা খায় এবার শ্রীলঙ্কা যাওয়ার পরই। বিসিবির শীর্ষ কর্তারা তাকে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবতে বলেন। ‘ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবা’ মানে যে আসলে অবসর নিয়ে ভাবা, সেটি তো আর ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে না!
ওয়ানডে সিরিজ জুড়ে চাপটা ছিল প্রবাহমান। সেই চাপ নিয়েই ওয়ানডে সিরিজ খেলেছেন মাশরাফি, নেতৃত্ব দিয়েছেন দলকে। ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন, লড়াইটা চালিয়ে যাবেন। খেলে যাবেন টি-টোয়েন্টি।
কিন্তু ওয়ানডে সিরিজ শেষে কোচ আবারও বিসিবি কর্তাদের বলেন, টি-টোয়েন্টি নিয়ে মাশরাফির সঙ্গে কথা বলতে। বিসিবির একাধিক সূত্র বিডিনিউজকে নিশ্চিত করেছে, সোমবার রাতে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান দলের সিনিয়র চার ক্রিকেটারকে ডেকে কথা বলেন। জানিয়ে দেন, তিন সংস্করণে তিন অধিনায়ক চায় বিসিবি।
এরপরই ভবিষ্যতের ছবিটা পরিষ্কার হয়ে ওঠে মাশরাফির সামনে। ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন, লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছেটাও তখনই মরে যায়। কোচের ভাবনার সঙ্গে লড়াই করা যায়, কিন্তু নিজেদের অভিভাবক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তো লড়াই চলে না!
মঙ্গলবার ম্যাচের আগে দুপুরেই পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন মাশরাফি। এই সিরিজের পর আর খেলবেন না আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি।
গত নিউ জিল্যান্ড সফরেও খবরের শিরোনাম হয়েছিল মাশরাফির অবসর। দল নিউ জিল্যান্ডে, কিন্তু বিসিবি প্রধান দেশে বসে সংবাদ মাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছিলেন আর টি-টোয়েন্টি খেলবে না মাশরাফি। সেটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল বিস্তর। অবাক হয়েছিলেন স্বয়ং মাশরাফিও। পরে ঘোষণা বদলে দিয়েছিলেন বোর্ড প্রধান।
বিদায় বেলায় মাশরাফি অন্তত এই সান্ত¡না পাবেন, নিজের অবসরের ঘোষণা নিজেই দিতে পেরেছেন!