হামলায় শিল্পমন্ত্রণালয়ের ট্রাক ব্যবহার করা হয় গাইবান্ধায় সাঁওতালদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার নতুন ভিডিও প্রকাশ

ক্রাইমবার্তা রিপোট:গাইবান্ধায় সাঁওতালদের বিরুদ্ধে পুলিশ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের সমর্থকদের হামলার নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে ঢাকা ট্রিবিউন। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে দুজন অচেতন ব্যক্তিকে হাত পা ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে তারা মৃত কি জীবিত তা বোঝা যায়নি।17

গাইবান্ধায় গত ৬ নভেম্বর সাঁওতালদের ওপর হামলায় ৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও নতুন ভিডিওতে যে দুই ব্যক্তিকে অচেতন অবস্থায় পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে দেখা যায়, তাদের এখনো কোনো খোঁজ মেলেনি। ঘটনার সময় নিহতের সংখ্যা ৩ জনের চেয়ে বেশি বলে স্থানীয়রা দাবি করলেও এখনো সাঁওতালরে অনেকে গ্রেফতার ও হয়রানীর ভয়ে পালিয়ে থাকার কারণে হতাহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই করা সম্ভব হচ্ছে না।

নতুন ফুটেজে যে দুইজনকে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাদের একজন সাঁওতাল মঙ্গল মার্দি বলে দাবি করা হচ্ছে যে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে বলে এর আগে দাবি উঠেছিল। তবে ফুটেজে নতুন করে দেখতে পাওয়া ওই দুই ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে এখনো প্রশ্ন রয়ে গেছে। এবং তাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তার কোনো হদিস মেলেনি।

এর আগে পুলিশ নিশ্চিত করেছিল গাইবান্ধায় ওই হামলার ঘটনায় ৩ জন সাঁওতাল মারা গেছে। তারা হচ্ছে, শ্যামল হেমব্রম, রামেশ টুডু ও মঙ্গল মার্দি। পুলিশ দাবি করে রামেশ স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে ও শ্যামল মারা গেছে হাসপাতালে। ১ মিনিট ১৮ সেকেন্ডের নতুন ওই ভিডিওর সূত্র ঢাকা ট্রিবিউন নিরাপত্তা সঙ্গে প্রকাশ করেনি। এর আগের ভিডিওতে গাইবান্ধায় পুলিশ সাঁওতালদের ঘরে আগুন দিচ্ছে এমন দৃশ্য দেয়া যায়। আগুনে একের পর এক ঘরগুলো পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। এসময় অনেকে ওসব ঘর থেকে লুঠপাট করে। গোবিন্দগঞ্জ চিনিকলের শ্রমিক, স্থানীয় অনেকে পুলিশের সঙ্গে সাঁওতালদের ওপর হামলায় অংশ নেয়। তারা পাথর নিক্ষেপ করে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে সাঁওতালদের ঘরে আগুন দেয়ার কথা অস্বীকার করা হয়।

যে ট্রাক থেকে লাঠি নিয়ে হামলাকারীরা নেমে আসে সেটির গায়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের নাম লেখা। হামলাকারীদের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের সমর্থকদেরও দেখা যায়। এলাকাবাসি জানায় হামলাকারীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছিল।

এ প্রসঙ্গে বাংলা ট্রিবিউনকে ব্যারিস্টার জ্যের্তিময় বড়–য়া বলেন, যারা সাঁওতালদের ঘরে আগুন দিয়েছে, লুঠপাট করেছে, হামলা করেছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না। ফলে তারা এক ধরনের দায়মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে এবং এর ফলে বিচার ব্যহত হচ্ছে। তিনি বলেন, আক্রান্ত সাঁওতালদের দ্রুত পুনর্বাসন দরকার যাতে তারা খোলা আকাশের নিচে বা তাবু থেকে নিজেদের জায়গায় ফিরতে পারে। গোবিন্দগঞ্জে যা ঘটেছে তা প্রকাশ্যে ঘটেছে। তাই এ ঘটনায় কোনটি সঠিক আর কোনটি ভুল তা নির্ধারণের দায় রাষ্ট্রের। ঢাকা ট্রিবিউন থেকে অনুবাদ

Please follow and like us:

Check Also

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তান নিয়ে ট্রেনের নিচে নারীর ঝাঁপ: মারা যান মা-ছেলে

হাজীগঞ্জে এক বছরের সন্তান আব্দুর রহমানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন মা তাহমিনা (২৩)। এতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।