ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নারীদের বিক্ষোভ

ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক :যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পরদিনই দেশটির একাধিক শহরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন লাখ লাখ মানুষ। নারীদের নিয়ে ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রতিবাদে প্রথমে ওয়াশিংটনে ওই বিক্ষোভ মিছিল হওয়ার কথা থাকলেও, পরে দেশটির আরো অনেক শহরে তা ছড়িয়ে পড়ে। মেক্সিকো সিটি, প্যারিস, বার্লিন, লন্ডন আর সিডনিতেও বিক্ষোভ করেছে সাধারন জনগণ।

প্রধানত নারী সংগঠনগুলোর আয়োজনে ওয়াশিংটনে ওই বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হলেও, তাতে অনেক পুরুষও অংশ নেন।7

নারীদের নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত ‘পুরুষতান্ত্রিক আচরণের’ প্রতিবাদ জানাতে এ বিক্ষোভ ডাকা হয়। নারী অধিকার কর্মীদের আশঙ্কা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় তাদের অধিকার ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।

সারা বিশ্ব জুড়ে অন্তত ৬০০ বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। সবচেয়ে বড় সমাবেশ হয়েছে ওয়াশিংটনে। সেখানে পাচঁ লাখের বেশি মানুষ অংশ নেয়।

পরিকল্পনা ছিলো যে, তারা হোয়াইট হাউজের সামনে মিছিল নিয়ে যাবেন। কিন্তু মিছিলের পথ জুড়েই লাখ লাখ বিক্ষোভকারী অবস্থান নেয়ায় তা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে।

এই বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিতি ছিলো গতকাল শুক্রবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের চেয়েও বেশি, যাদের মধ্যে রয়েছেন অনেক তারকা শিল্পীও। তাদের মধ্যে আছেন সদ্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি, সংগীতশিল্পী ম্যাডোনা, গায়িকা কেটি পেরি, সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, অভিনেত্রী জুলিয়ান মোর ও স্কারলেট ইয়োহানসন, নারী অধিকারকর্মী গ্লোরিয়া স্টাইনহ্যাম।

সমাবেশে মার্কিন সংগীতশিল্পী ম্যাডোনা বলেন, এই দিন আমাদের জীবন শুরু করার দিন। বিপ্লব এখান থেকেই শুরু হচ্ছে। এটা আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের পরিচয়, আমাদের সম অধিকারের লড়াই। এই অন্ধকারের বিরুদ্ধে চলুন সবাই একসাথে লড়াই করে জানিয়ে দেই যে আমরা ভীত নই, আমরা একা নই এবং আমরা পিছনে ফিরবো না।

এরপর তিনি নিজেকে তুলে ধরার বক্তব্য সম্বলিত একটি গানও গেয়ে শোনান।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে অনেকেই শ্লোগান দেন, ‘তুমি আমার প্রেসিডেন্ট নও’। বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘ঘৃণা নয় ভালোবাসা’, ‘দেয়াল নয়, সেতু’ ইত্যাদি।

ওয়াশিংটনের এই বিক্ষোভ পরে যুক্তরাষ্ট্রের আরো কয়েকটি বড় শহরে ছড়িয়ে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রে সব মিলিয়ে দশলাখের বেশি মানুষ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিক্ষোভ হয়েছে মেক্সিকো সিটি, প্যারিস, বার্লিন, লন্ডন আর সিডনিতেও।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সমাবেশ এটাই প্রমাণ করছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সমাজে গভীর বিভক্তি আর ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড নিয়ে ভীতি তৈরি হয়েছে।

ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনে অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড এবং জাপানেও তার বিরোধীরা বিক্ষোভ করেছেন।

এদিকে ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠান নিয়ে মার্কিন গণমাধ্যমগুলো মিথ্যাচার করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র শেন স্পাইসার।

তিনি বলেন, অভিষেক অনুষ্ঠানে সর্ব্বোচ্চ মানুষের উপস্থিতি থাকলেও, সেটি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে গণমাধ্যম এবং এজন্য তাদের জবাবদিহি করতে বাধ্য করবে হোয়াইট হাউজ। এর আগে একই ধরণের অভিযোগ তোলেন ট্রাম্পও।

সূত্র : বিবিসি।

Please follow and like us:

Check Also

বেইজিং ঘনিষ্ট মুইজ্জুর জয়: ভারত থেকে আরও দূরে সরবে মালদ্বীপ

মালদ্বীপে দীর্ঘদিন ধরে থাকা ভারতের প্রভাব কমাতে ‘ইন্ডিয়া আউট’ স্লোগান দিয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।