তরিকুল ইসলাম তারেক, যশোর: নিখোঁজের পাঁচদিন পর বাঘারপাড়া যুবলীগ নেতা তরিকুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার সকালে নড়াইল সদর উপজেলার সীতারামপুর ব্রিজের কাছ থেকে লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় নড়াইল থানা পুলিশ।
তরিকুল বাঘারপাড়া উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলার জামদিয়া গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে।
নড়াইল সদর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা তরিকুল নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। ময়না তদন্ত শেষে লাশ যথাযথ স্থানে হস্তান্তর করা হবে।’
নিহত তরিকুলের বাম কানের নিচে গোলাকার দাগ রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
এর আগে তরিকুলের মা জাহানারা বেগম অভিযোগ করেছিলেন, গত ৩ আগস্ট সন্ধ্যার দিকে বাঘারপাড়ার হাটখোলার দত্তরাস্তা এলাকার তাদের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তার ছেলেকে আইনশৃংখলা বাহিনীর কয়েকজন সদস্য তুলে নিয়ে যায়। তবে বিষয়টি সেসময় অস্বীকার করে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বাঘারপাড়া ও যশোর কোতয়ালী থানাসহ সংশিষ্ট বিভিন্ন অফিসে খোঁজ নিয়েও তরিকুলের সন্ধান মেলেনি উল্লেখ করে জাহানারা বেগম বলেন, ‘আমি শুনেছি তারা আমার ছেলেকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। আমি মা হিসেবে জানি আমার ছেলে কোনো সন্ত্রাসী বা দুস্কৃতকারী ছিল না। আমার জানা মতে, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলাও নেই। ছেলে যদি কোনো অন্যায় করে থাকে তাহলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিচার করা যেতে পারে।’
জানতে চাইলে আজ বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল আলম বলেন, ‘এ বিষয়ে অনেকে ফোন করে জানতে চাইছে। আমি কিছু জানি না। তবে তরিকুল নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধারের খবর নড়াইল সদর থানার ওসি আমাকে জানিয়েছেন।’
এলাকাবাসী বলছেন, সকালে নড়াইল-যশোর সড়কের পাশে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলির চিহ্ন রয়েছে বলে জানান তারা। #
——————00———————–
ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সাদা পোশাকে তুলে নেয়ার পাঁচ দিন পর নড়াইলে মিলল যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের গুলিবিদ্ধ মরদেহ।
বুধবার সকাল ৮টার দিকে নড়াইল-যশোর সড়কের শহরসংলগ্ন সীতারামপুর ব্রিজ এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত তরিকুল বাঘারপাড়া উপজেলার জামদিয়া গ্রামের মিজানুর বিশ্বাসের ছেলে ও জামদিয়া বাজারের একজন সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী।
নড়াইল সদর থানার এসআই মাসুদ রানা জানান, সকালে স্থানীয় লোকজন নড়াইল-যশোর সড়কের সীতারামপুর ব্রিজ এলাকায় রাস্তার পাশে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়।
ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের দুলাভাই মামুন শেখ জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জামদিয়া বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সাদা পোশাকধারী ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে যায়। পরে যশোরে ডিবি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে।
এ বিষয়ে বাঘারপাড়া থানায় জিডি করতে গেলেও পুলিশ জিডি গ্রহণ করেনি। ঘটনার পাঁচ দিন পর তার গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া গেল।
নিহত তরিকুলের পরিবারের দাবি, তরিকুল স্থানীয় সংসদ সদস্য রণজিৎ রায়ের অনুসারী ছিলেন। দলীয় কোন্দলের কারণে প্রতিপক্ষের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান লিটন জানান, নিহত তরিকুলের বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। মাদকের সঙ্গেও তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে বিনা কারণে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনার সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।
বাঘারপাড়া থানার ওসি মো. মঞ্জুরুল আলম জানান, তরিকুলের নামে বাঘারপাড়া থানায় কোনো মামলা নেই। তাকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে সে ব্যাপারেও কিছু জানেন বলে তিনি জানান।
নড়াইল সদর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, স্থানীয় লোকজনের খবরের ভিত্তিতে নড়াইল-যশোর সড়কের সীতারামপুর এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।