সাতক্ষীরায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নে নেয়া প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবি

ক্রাইমর্বাতা রিপোট: মা: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নে গৃহীত পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছে নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরা। একই সাথে ভিন্ন প্রশ্নে তাদের ফের পরীক্ষা গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে তারা আরও বলেন কে বা কারা এই প্রশ্ন ফাঁস করেছে এবং তাদের উৎস কি তা সঠিকভাবে জেনেশুনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনেরও দাবি করেছেন তারা।

মঙ্গলবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি তুলে ধরেন নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ, সাতক্ষীরার নেতারা। এতে নাগরিক মঞ্চ সভাপতি এড. ফাহিমুল হক কিসলু স্বাক্ষরিত বক্তব্য পড়ে শোনান সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান মাসুম।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় গত ২৪ মে সাতক্ষীরায় অনুষ্ঠিত সাতক্ষীরা সদর, আশাশুনি ও শ্যামনগর অঞ্চলের প্রাথমিকে চাকুরি প্রার্থীরা অংশ নেন। কিন্তু পরীক্ষা শুরুর আগে কলারোয়া উপজেলা শহরের একটি ভবনে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা ও র‌্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত একটি চক্রকে হাতেনাতে আটক করে।

এই চক্রের ২১ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ২ বছর করে কারাদ- প্রদান করেন। এদিন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও আইন শৃংখলা বাহিন ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হন যে, গৃহীত পরীক্ষার জন্য প্রণীত প্রশ্নপত্রের সাথে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল রয়েছে।

কলারোয়ার সোনালী সুপার মার্কেটের ওপরতলায় কীডস কোচিং সেন্টারে এই প্রশ্নপত্র মোবাইলে ধারণ করে তা ব্ল্যাকবোর্ডে লিখে প্রশ্নক্রেতা পরীক্ষার্থীদের উত্তর শেখানো হচ্ছিল। এজন্য আগেভাগে প্রশ্ন ফাঁস সিন্ডিকেটটি ক্রেতা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে মাথাপ্রতি ৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেছে বলে তারা জানতে পারেন।

সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, প্রশ্ন ফাঁস চক্রের ৫ জন সদস্যের গুরুতর অপরাধের সাথে প্রশ্নক্রেতাদের অপরাধকে এক করে দেখা হয়েছে। এর ফলে প্রশ্নফাঁস চক্রের ৫ সদস্য বহুলাংশে সুবিধা লাভ করেছে। তাদেরকে নিয়মিত মামলার আসামি করে তদন্ত করলে তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারবেন। যার ফলে ফাঁস চক্রের মূল হোতাদের আইনের আওতায় আনার মত তথ্য পাওয়া যেতে পারে।

এসব বিষয় তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয় এদিন আটককৃত ২৯ জনের মধ্যে সাত নারীসহ ২১ জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ২ বছরের সাজা দিলেও পরীক্ষার্থীদের ৮ জন অভিভাবককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টিও যুক্তিসংগত হয়নি উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় অভিভাবকরা টাকা দিয়ে তাদের স্বজনের জন্য প্রশ্ন ক্রয়ের পথ তৈরি করে অপরাধ করেছেন।

নাগরিক আন্দোলন মঞ্চ ২৪ মে তারিখের ওই পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেছে, তা না হলে হাজার হাজার চাকুরিপ্রার্থী মেধাবী তরুণ-তরুণীদের সাথে প্রতারণা করা হবে। কারণ তারা পরোক্ষভাবে এই অপরাধের ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

অবিলম্বে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের ধৃত ৫ জনসহ মূল উৎস এবং তার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে তারা স্পষ্ট করে আরও জানতে চান প্রশ্ন ফাঁস কি ঢাকা থেকে হয়েছে নাকি জেলায় পাঠানো উৎস থেকে ফাঁস হয়েছে তা পরিষ্কার হওয়া দরকার। তারা এ ব্যাপারে অধিকতর তদন্তের দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের সভাপতি ফাহিমুল হক কিসলু, সিনিয়র সংবাদিক কল্যান ব্যানার্জি, সহ-সভাপতি স্বপন কুমার শীল, দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক এম. বেলাল হোসেন এবং শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক জাহিদা জাহান মৌসহ অন্যান্যরা।

Please follow and like us:

Check Also

২৮শে এপ্রিল খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারেও ক্লাসের পরিকল্পনা

আগামী ২৮শে এপ্রিল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সব রকমের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।