ঢাকা, ২৭ মে, এবিএন ওয়ার্ল্ড : আবেগ কি শুধু মানুষের মধ্যে সীমাবদ্ধ? না। অবোলা প্রাণীর মধ্যেও আবেগ আছে। এমনি এক নজির দেখালো দুই ঘোড়া। তাদের অসুস্থ মনিবকে দেখতে ১৫০ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে স্বশরীরে হাসপাতালে ছুটে এসেছে রিংগো ও সুগার নামে ওই দুই ঘোড়া। তাও আবার সাবেক মনিব। আমরা সাধারণ মানুষ- আমাদের প্রিয় কোন মানুষের কিছু হলে আবেগের তাড়নায় ছুটে চলি তাকে এক নজর দেখার জন্য। আবার আবেগের বসে বলেও থাকি মানুষ মানুয়ের জন্য। কিন্তু মানুষের এই আবেগকে হার মানিয়ে দিলো ঘোড়া দুইটি।
মজার বিষয় হলো হাসপাতালে ঢুকেই বিছানায় শোয়া মনিবের মুখে ও চোখে চুম্বন করে তারা। এ দৃশ্য দেখে উপস্থিত সবাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। সৌভাগ্যবান ওই মনিবের নাম হলো রবার্তো গঞ্জালেস। তিনি পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত হয়ে ১০ মাস ধরে হাসপাতালে আছেন। কথাও বলতে পারেন না। হাসপাতালে ঘোড়া দুটি দেখে যেন তিনি শক্তি ফিরে পেয়েছেন। তিনি টেক্সাসের সান অ্যান্টোনিও ভিএ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
জানা যায়, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে প্রিয় ঘোড়া দুটি দেখতে চান গঞ্জালেস। তার ইচ্ছানুযায়ী রিংগো ও সুগারকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার পরিবারের সদস্যরা। ১৫০ মাইল পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে আনা হয় রিংগো ও সুগারকে।
প্রসঙ্গত গঞ্জালেস ১৯৭০ সাল থেকে ঘোড়ার প্রশিক্ষকের কাজ করছেন। তিনি ঘোড়াকে খুব ভালোবাসেন। দীর্ঘদিন প্রশিক্ষক থাকায় ঘোড়ার সঙ্গে তার দারুণ বন্ধুত্ব হয়ে যায়। এ বিষয়ে গঞ্জালেসের স্ত্রী রোসারিও বলেন, ঘোড়া দুটি তার জীবন। আমরা ঘোড়া দুটিকে ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে লালনপালন করছি। আমার স্বামী ঘোড়া ভালোবাসে। ঘোড়াকে খাওয়াতে ও লালনপালন করতে ভালোবাসে। তিনি ঘোড়াদের সেবা করার জন্য গর্ববোধ করেন। তিনি জানান, তার স্বামী টেক্সাসের একমাত্র প্রতিবন্ধী ঘোড়ার প্রশিক্ষক। তবে তার প্রতিবন্ধীত্ব কোনোভাবেই তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।
রোসারিও আরও বলেন, তিনি (গঞ্জালেস) কথা বলতে পারেন না। কিন্তু ঘোড়াদের দেখার পর তার চোখে আবেগ দেখা গেছে। ঘোড়া দেখে তার চোখ খুলেছে। ঘোড়া দুটি তার চোখে ও মুখে চুম্বন করেছে। স্বামীর অসুস্থতার বিষয়ে তিনি বলেন, চিকিৎসকরা খুব বেশি আশাবাদী নয়। কিন্তু আমরা আশা ছাড়িনি। আমরা সব কিছু সৃষ্টিকর্তার হাতে ছেড়ে দিয়েছি। তবে তিনি বলেন, আমরা এখন কঠিন সময় পার করছি। কিন্তু ঘোড়া দুটির হাসপাতালে আসার ঘটনা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
এবিএন/শুক্র/আন্তর্জাতিক/ডেস্ক/এফকে