ক্রাইমবার্তা রিপোট: আলমগীর হোসেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা টুমচর হত-দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত ১০ টাকার চাল নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদ করার মত কেউ নেই। এ কারণে সদর উপজেলাতে সরকারের খাদ্য বান্ধব এ কর্মসূচির সুফল পাচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগ রয়েছে ভোক্তাদের কাছে চাল বিক্রি না করে কালো বাজারে বিক্রি করা, ওজনে কম দেয়া , বিত্তভান ও সচ্ছল ব্যাক্তিদের কার্ড দেয়া, কার্ড পেলেও চাল না দেয়া, টাকার বিনিময় কার্ড বিক্রি, তালিকার এক ব্যাক্তির নাম একাধিকবার স্থান পাওয়া এবং একই পরিবারের একাধিক ব্যক্তিকে কার্ড দেয়া। এরই মধ্যে ১৫ নং লাহার কান্দি ইউনিয়নের ডিলার সাইফুল ইসলাম বাজারে ১০ টাকার চাল বিক্রয় অভিযোগে হাতে নাতে ধরা পড়েছেন। তার ডিলাশিপ বাতিল করা হয়েছে। এর পরেও বন্ধ হয়নি সরকারের এ সমসূচি নিয়ে চলা অনিয়মের দূর্নীতি।
লক্ষ্মীপুর পুর সদর উপজেলার নয় হাজার পাচঁ শত ঊনপঞ্চাশ দরিদ্র ব্যাক্তির মাঝে ১০ টাকা দরে চাল বিক্রির কথা রয়েছে এ জন্য ২১ টি ইনিয়নে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ২৩ জন ডিলার।
জানা গেছে , সদর উপজেলা ২১ নম্বর টুমচর ইউনিয়নের ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি নিয়ে সবচেয়ে বেশি অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সৈয়াল বাড়ির হারুনুর রসিদ মেম্বারের মা জোবেদা খাতুনের নামে কার্ড ইস্যূ করা হয়েছে, ৬ নং ওয়ার্ড চান মিঞা মুন্সী বাড়ীর একই পরিবারের তিন জন কে ১০ দরে চালের কার্ড দিয়েছেন চেয়ারমান নুরুল আমিন রোলা।তারা হলেন, গরু ব্যবসায়ী বেল্লাল মাঝি কার্ড নং ২৪৭, স্ত্রী শিউলি আক্তার কার্ড নং ২৪৮, পুত্র সৈকত হোসেন কার্ড নং -২৪৫। অপর দিকে ৩ নং ওয়ার্ড জামাল মেম্বার কার্ড দিয়েছেন পলকন বাড়ির উচ্চ দালালেন অধিকারী- মিলন বেগম, ও পিয়ারা বেগমের নামেও কার্ড ইস্যূ করা হয়েছে। কার্ড পেয়েছে ডাক্তার বাড়ির উচ্চ দালানের অধিকারী মমিন উল্যা।
এ দিকে দরিদ্র ও প্রতিবন্ধী খোকন (৭০), ওজুফা খাতুন (৬০) ,আবুল খায়ের (৮০) পারভিন আক্তার (২০), নজির আহম্মেদ (৭০) যমুনা নিউজকে বলেন, গরীব, অসহায় , কোনো রকম দিন আনি দিন খাই, অনেক সময় ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চলে, এক দিকে প্রতিবন্ধী অন্যদিকে স্বামী ও সন্তান হারা। আমাদেরকে মেম্বার চেয়ারমানেরা ১০ টাকার চাল না দিয়ে দালান কোটা তাদের আপত্মীয় ও দলীয় লোকজনকে ১০ টাকার চাল দিয়েছে। আমাদেরকে বৃদ্ধা ভাতা প্রতিবন্ধী ভাতা, ১০ টাকার চালের কার্ড দেয়নি । আগামীতে পাবো কিনা জানি না।
লক্ষ্মীপুরে খাদ্য বান্ধব কমসূচির সুফল পাচ্ছে না সুবিধা ভোগীরা। অন্য দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা ২০ নং চররমোনী এলাকায় ৪ নং ওয়ার্ডের মাহমুদা কার্ড নং ১০৭, আহসান উল্ল্যা কার্ড নং ১২০,কার্ড পেয়েছেন। কিন্তু চাল পাননি। অপর দিকে ২ নং ওয়ার্ডে হাওয়ালাদার বাড়ির মো: ফারুক প্রতিবন্ধী:১০ টাকার কার্ড পাওয়ার যোগ্য থাকার সত্যও কার্ড পায়নি এমন অভিযোগ করেন। ৩ নং ওয়ার্ড মাঝি বাড়ির হাসিমের ছেলে, মা,চাচী পরিদা কার্ড পেয়েছে।
কাদির মাঝি,মাঝির স্ত্রী, ভাইসহ একই পরিবারের তিন জনের নামে কার্ড ইসূ করা হয়েছে। করাতির হাট আশ্রয় কেন্দ্র থাকায় এলাকার জোবোদা, নিলুপা, মাহফুজা বেগম, নুরুল নেছা, ছকিনা যমুনা নিউজকে বলেন , ৩০ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও আমরা প্রতি বস্তা চাল পাচ্ছি ২৮, ২৯ কেজি মতো ডিলার ফিরোজ আলমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। সরকারি চাল নিয়ে নয় ছয়ের কারণে অসচ্ছল ও দরিদ্র পরিবার বঞ্চিত হচ্ছে ।
২ নং দক্ষিন হামছাদীর ৩ নং ওয়ার্ডের সোরদ্দী বাড়ির সৌদি প্রবাসি রফিকে স্ত্রী শিরিন , ও মেয়ে কার্ড পেয়েছে।পশ্চিম লক্ষ্মীপুর এলাকায় মৃত আবুল কাশেমের ছেলে নজির আহম্মদ যমুনা নিউসকে জানান, এ ইউনিয়নের চেয়ারমান, ইউপি সদস্য এবং ডিলাররা মিলে ১০ টাকা চাল নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতি করছেন । হত- দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দকৃত এ চাল তাদের পরিবর্তে বিত্তশালীদের এবং ইউপি মেম্বারদের পরিবারও পাচ্ছেন।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা ইউনিও নিরুলজ্জামান যমুনা নিউসকে বলেন , টুমচর ,চররমোনী, দক্ষিন হামছাদী সহ সব স্থানে ১০ টাকার চাল নিয়ে অনিয়মের প্রমাণ দিতে পারলে ও সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে লক্ষ্মীপুর জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা নয়ন জ্যোতি চাকমা (আ:দা:) যমুনা নিউসকে বলেন , অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়া পর তিনি নিজেও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করছেন। আজ কালের মধ্যে ১০ টাকার চাল বিতারণ নিয়ে যে সব অনিয়ম দূর্নীতি- অভিযোগ উঠেছে তা তদন্ত করে রির্পোট প্রেরণ করা হবে। এতে গরমিল পাওয়া গেলে অভিযুক্তরে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Check Also
সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে দুবলার চরে গেলেন ৪০১জন পূণ্যার্থী
উপকূলীয় অঞ্চল (শ্যামনগর): পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ থেকে অনুমতি নিয়ে বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরে রাস মেলায় গেছেন …