স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের অবিচল সমর্থন রয়েছে: শেখ হাসিনা

ক্রাইমবার্তা রিপোট: ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার পাশাপাশি তাদের সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
12
‘আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবস’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রাধিকারের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে এবং শান্তি, স্থিতিশীল ও ন্যায়বিচারের জন্য তাদের দীর্ঘ পাঁচ দশকের সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে।’

১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে পূর্ব জেরুসালেমকে দেশটির রাজধানী করে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপক্ষে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফিলিস্তিনি ভাইদের প্রতি এবং বিশ্বব্যাপী সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশিকতাবাদ বা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামরত জনগণের প্রতি সমর্থনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থেকেই একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তাদের ন্যায়সংগত আকাক্সক্ষার প্রতি আমাদের অবিচল সমর্থন রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আগ্রাসন এবং মানবতার বিরুদ্ধে সংগঠিত অপরাধের অভিজ্ঞতা থেকেই ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর জঘন্য হামলার নিন্দা জানায় বাংলাদেশ। এছাড়া সম্প্রসারণ পরিকল্পনাসহ অবৈধ বসতিগুলো এবং ‘দুই-রাষ্ট্র’ ভিত্তিক সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনাকে বাধাগ্রস্ত করে দখলদার বাহিনীর অন্য যেকোনো কর্মকা-ের নিন্দা জানায় বাংলাদেশ।’

প্রতিনিয়ত মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন বন্ধে দখলদার শক্তির ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। কেননা, এই অন্যায়ের ফলে ফিলিস্তিনি জনগণ, বিশেষত গাজার বাসিন্দারা কষ্ট পাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বাস করে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবসমূহ, রোডম্যাপ, আরব শান্তি পরিকল্পনা এবং চার-দেশীয় উদ্যোগ বাস্তবায়নই দীর্ঘদিনের ফিলিস্তিন সমস্যার একটি টেকসই সমাধানের জন্য প্রযোজ্য হবে।”

১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২৯ নভেম্বরকে ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে সংহতি প্রদর্শনস্বরূপ ‘আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিন সংহতি দিবস’ হিসেবে গ্রহণ করে। এর ১০ বছর পরে ১৯৮৭ সালের ২৯ নভেম্বর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ‘ইউনাইটেড নেশনস পার্টিশন প্ল্যান ফর প্যালেস্টাইন’ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এরপর থেকে এ দিনটি “আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিনি সংহতি দিবস” হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনকে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয়া হয়। ইহুদিবাদি ইসরাইলসহ পাশ্চাত্য শক্তির নানা ষড়যন্ত্র চক্রান্ত মোকাবিলা করে জাতিসংঘে পূর্ণ সদস্যপদ লাভের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ফিলিস্তিন। ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশে ফিলিস্তিন পতাকা স্থান পেয়েছে। একই সময়ে পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে ভ্যটিকান সিটির পতাকাও জাতিসংঘে উত্তোলনের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। সাধারণতঃ জাতিসংঘ দপ্তরে পূর্ণ সদস্য অর্থাৎ স্বাধীন রাষ্ট্রের পতাকা উত্তোলনেরই রেওয়াজ রয়েছে। সেদিক থেকে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে এটি একটি বড় অগ্রগতি।

সূত্র: পার্সটুডে

Check Also

ক্ষমতায় গেলে নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে জামায়াত : ডা. শফিকুর রহমান

ক্ষমতায় গেলে নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে জামায়াত মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।