ক্রাইমবার্তা ডেস্ক রিপোট:মেয়েটির নাম রুবি ইবারা। বাড়ি মেক্সিকোর ছোট্ট একটা এলাকা লা জয়ায়। সোমবার মেয়েটি ১৫তম জন্মদিন পালন করেছে। এই জন্মদিন ঘিরেই যত আলোচনা আর উন্মাদনা! কিন্তু কেন? সে কথা জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
মেক্সিকোতে কোনো মেয়ের বয়স যখন ১৫ বছর হয়, তখন বেশ ধুমধাম আনন্দ-উৎসব করে তা উদ্যাপন করা হয়। এই অনুষ্ঠানকে বলা হয় কুইনসিনেরা। দিনটিতে মা-বাবা তাঁদের মেয়েটিকে নিজেকে রাজকন্যা ভাবার সুযোগ করে দেয়। তো রুবির জীবনেও দিনটি এসেছে। আর সে নিজেকে রাজকন্যার চেয়েও বেশি কিছু ভাবতে পেরেছে। কারণ, তার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এক হাজার, দুই হাজার নয়; হাজার হাজার মানুষ এসেছে। সবাই মিলে উৎসবে মেতেছে।
তেমন ধনী পরিবারের মেয়ে নয় রুবি। তাহলে? এতজনের উপস্থিতি কেন? এত উপস্থিতির পেছনের কারণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। রুবির বাবা ক্রেসেনসিও মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। ভিডিওতে কাউবয়ের মতো হ্যাট পরে তিনি বলেন, ‘হাই! কী খবর সবার? ২৬ ডিসেম্বর লা জয়ায় আমার মেয়ে রুবির ১৫তম জন্মদিনের অনুষ্ঠান। আমরা আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’ ভিডিওতে তিনি যখন আমন্ত্রণ জানিয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন রুবি ও তার মাকে পাশেই দেখা গেছে। রুবির বাবা ক্রেসেনসিও সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ওই ভিডিওতে বলেন, জন্মদিনের অনুষ্ঠানে স্থানীয় ব্যান্ড দল গান গাইবে। থাকবে ঘোড়দৌড়ের প্রতিযোগিতাও। এই প্রতিযোগিতায় জয়ী ব্যক্তি পুরস্কার হিসেবে পাবেন ৫০০ ডলার।
যদিও রুবির বাবা ক্রেসেনসিও তাদের ছোট গ্রামটির ২০০ লোককে আমন্ত্রণ জানাতে ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করেছিলেন; কিন্তু এটি তাঁর গ্রামের সীমা পেরিয়ে জাতীয় পর্যায়ে চলে যায়। ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। একজন, দুজন নয়; ১৩ লাখ মানুষ রুবির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগ্রহ দেখায় ফেসবুকে। স্পনসর হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চলে আসে সহায়তা করতে। মেক্সিকোর ইন্টারজেট এয়ারলাইন রুবির জন্মদিনে যোগ দিতে আগ্রহী ব্যক্তিদের জন্য বিমানের ভাড়ায় ৩০ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করে। রীতিমতো রুবির জন্মদিন নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়। রাতারাতি তারকা বনে যায় রুবি।
অবশেষে আসে ২৬ ডিসেম্বর, রুবির জন্মদিন। ১৩ লাখ না হলেও হাজারে হাজারে মানুষ দল বেঁধে যোগ দেয় এ অনুষ্ঠানে। আর এমন আয়োজনে রাজকন্যার মতো সেজেছিল ১৫ বছরের রুবি—পরনে ফুলেল গাউন আর মাথায় মুকুট। অন্তত ১০ হাজার অতিথি তার সঙ্গে জন্মদিনের নাচে অংশ নেয়।