অবিলম্বে সুপ্রিমকোর্ট থেকে গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণ করুন

ক্রাইমবার্তা রিপোট:সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গনে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপনের প্রতিবাদে আজ শনিবার রাজধানীসহ সারাদেশের বিক্ষোভ করেছে ইসলামী দলগুলো। এসব বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সংগঠনের নেতারা অবিলম্বে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গন থেকে গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।

খেলাফত মজলিস: খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে ‘সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণের দাবিতে এবং পাঠ্যপুস্তক ও পাঠ্যসূচির বিষয়ে নাস্তিক্যবাদী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে’ আজ বাদ জুমা জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। পরে পল্টন মোড়ে এক সমাবেশে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গন থেকে অবিলম্বে গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট থেকে মূর্তি অপসারণ না করলে জনতার আন্দোলন থামবে না। ঢাকা হচ্ছে মসজিদের নগরী। এ নগরীকে মূর্তির নগরী করা যাবে না।

ঢাকা মহানগরী সভাপতি শেখ গোলাম আসগরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেনে নায়েবে আমির মাওলানা সৈয়দ মজিবুর রহমান।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা নোমান মাযহারী, অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী প্রমুখ।

এছাড়া সংগঠনের বিভিন্ন জেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ: সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রিক দেবীর মূর্তি অপসারণ এবং শিক্ষানীতি নিয়ে নাস্তিক্যবাদী চক্রান্তের প্রতিবাদে বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সংগঠনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ইসলাম ও মুসলিম সাংস্কৃতিক চেতনা ধ্বংসের জন্যই মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে দেবীমূর্তি স্থাপন ইসলামী সভ্যতা সংস্কৃতি ও মুসলমানদের ঈমান আকিদা পরিপন্থী। মূর্তি হলো গজব ও ধ্বংসের প্রতীক। ইতিহাস প্রমাণ করে ইতোপূর্বে যারা মূর্তির পেছনে পড়েছে এবং মূর্তির ভালবাসায় লিপ্ত হয়েছে তারা সবাই নির্মমভাবে ধ্বংস হয়েছে। সমাবেশে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে মূর্তি অপসারণের দাবিতে ১২ ফেব্রুয়ারি জেলায় জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও জেলা জজের কাছে এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতির কাছে স্মরাকলিপি প্রদানের কর্মসুচি ঘোষণা করেন। এরপরও দাবি না মানলে কঠোর কর্মসুচি পালনের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, দক্ষিণ সেক্রেটারি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, উত্তর সেক্রেটারি মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, শ্রমিকনেতা ঈমান উদ্দিন, ছাত্রনেতা শরীফুল ইসলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস: দলটির মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেছেন, যেখানে মূর্তি থাকবে সেখানে ইসলাম থাকে না। সুপ্রিম কোর্টে মূর্তি থাকলে এ অঙ্গনে ইসলাম থাকবে না। কারণ মূর্তি অপসারণের জন্যই ইসালম ও রাসূল সা. এর আগমন। তাই রাসূল সা. বলেন, ‘আমি এসেছি মূর্তি ধ্বংস করতে।’ এরপর কোনো মুসলমান মূর্তির বিষয়ে নিরব থাকলে সে ঈমানদার হবে না।

আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, একজন মুসলমানের সবচেয়ে বড় সম্পদ ঈমান রক্ষা করা। ঈমান রক্ষা করতে না পারলে সে জান্নাতি হবে না। তাই ঈমান দৃঢ় করার জন্য রাসূল সা. এর সুন্নাহ মূর্তি অপসারণে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখা প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য। মুসলমানদের এ ঈমান রক্ষা এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে মূর্তি অপসারণের দাবিতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী গণ সংযোগের মাধ্যমে ঈমান রক্ষার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে অচিরেই কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন: সংগঠনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও ঢাকা মহানগর আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদীর বলেছেন, বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মানুষ ইসলামে বিশ্বাসী। অনেক অমুসলিম দেশেও ইনসাফের প্রতিক হিসেবে ইসলামের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নাম বিবেচনা করা হয়। অথচ আমাদের দেশে সুপ্রিম কোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায় -যার পাশে রয়েছে জাতীয় ঈদগাহ সেখানে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে যা এদেশের মানুষের কাছে অকল্পনীয় একটি ব্যাপার। এটিকে অনতিবিলম্বে অপসারণ না করলে ধর্মপ্রাণ জনতা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।

আজ রাজধানীর পল্টনে খেলাফত আন্দোলনের পল্টন থানা শাখার কমিটি গঠন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। হাফেজ মাওলানা আবুল হাসানাতের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুর রহমান, প্রচার সম্পাদক মো: মোফাচ্ছির হোসেন প্রমূখ।

সভা শেষে হাফেজ মাওলানা আবুল হাসানাতকে আহবায়ক ও মাওলানা জাফর আহমাদকে সদস্য সচিব করে পল্টন থানার আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়।

Check Also

৩০ জুলাই পর্যন্ত অনেক দল সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, সংগ্রামে যুক্ত হবে কি না: সারজিস আলম

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।