নতুন সিইসির সরে যাওয়া উচিত : রিজভী

ক্রাইমবার্তা রিপোট: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ আজ বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইলে মির্জা আবু রায়হান জগলুর ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।বর্তমান নির্বাচন কমিশন দিয়ে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা তীব্র হওয়ার আগেই তাঁর সরে যাওয়া উচিত। 

আজ বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইলে মির্জা আবু রায়হান জগলুর ৩০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন রিজভী।

এ সময় রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের যিনি প্রধান হয়েছেন এবং তাঁর সঙ্গে আরো কয়েকজন তাঁদের সঙ্গে সরকারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে।

বিভিন্নভাবে সরকার যে লাইনে হাঁটে বা সরকার-সমর্থিত বলে যথেষ্ঠ প্রমাণ আছে। সরকার-সমর্থিত আমলারা যখন অবসরে যাওয়ার পর কোনো দায়িত্ব পান আমরা দেখেছি, কাজী রকিবউদ্দিনের সাহেবের মতো যে একেবারে দলীয় কর্মীর মতো তাঁরা কাজ করেন। এখন যিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হয়েছেন তিনি জনতার মঞ্চের লোক ছিলেন বলে চারদিক থেকে আমরা খবর পাচ্ছি, সংবাদ পাচ্ছি। যদিও তিনি বলেছেন, তিনি ছিলেন না। একটি জেলার তিনি ডিসি ছিলেন। তো জেলাগুলোতেও আপনার জনতার মঞ্চ হয়েছে। সেখানেও আমলা বিদ্রোহ করা হয়েছে, সে সময়ে এক্সিসটিং সরকারের বিরুদ্ধে। যাঁরা একবার ডিসিপ্লিন ব্রেক করেন, শৃঙ্খলা ব্রেক করেন, বিদ্রোহ করেন তাঁদের পক্ষে নিরপেক্ষভাবে কোনো কাজ করা খুব কঠিন। তাঁরা করতে পারেন না।’

‘সেই ক্ষেত্রে আমার মনে হয়েছে এবং আমাদের বলে না, মানুষের যথেষ্ট কারণ আছে যে এই কারণে তাঁকে বাছাই করা হয়েছে। সরকার বাছাই করেছে যে তাঁকে দিয়ে কাজী রকিবউদ্দিন সাহেব যে পারপাজ সার্ভ করেছেন একতরফা নির্বাচন করা, ফেনী স্টাইলে নির্বাচন করা, তাঁকে দিয়ে সেটা করা সম্ভব বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে, এক। দুই হচ্ছে, অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটিও কিন্তু, একজন সদস্য বলেছেন, আমরা যে ১০ জন বাছাই করেছিলাম, সুপারিশ করেছিলাম তার মধ্যে কিছু প্রফেশনাল মানুষও ছিলেন। তাঁদের করা হয়নি বলে একটা উষ্মা প্রকাশ করেছেন। তাতে মনে হচ্ছে যে সার্চ কমিটিরও যে প্রস্তাবগুলো যেখানে কিছু নিরপেক্ষ লোক ছিলেন দুই-তিনজন, সেটাও গ্রহণ করা হয়নি। একেবারে বেছে বেছে দলের অনুগত, সরকারের অনুগত লোকদের এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। আমার মনে হয়, সবার বিশ্বাস করা অত্যন্ত কঠিন হচ্ছে এই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের অধীনে একটা অবাধ, সুষ্ঠু, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এবং প্রভাবমুক্ত নির্বাচন হওয়া খুব দুষ্কর। এটা হওয়া সম্ভব না।

সেক্ষেত্রে আমার মনে হয়, তাঁর (সিইসি) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা তীব্র হওয়ার আগেই তাঁর পদ থেকে সরে যাওয়া উচিত।’ বলছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের সময়ে ১৯৮৭ সালে বাস ভাড়া বৃদ্ধি আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত আবু রায়হান জগলুর স্মরণসভার আয়োজন করে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদল। স্থানীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এ স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি খন্দকার রাশেদুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) আবদুস সালাম আজাদ ও শহীদুল ইসলাম বাবলু এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম তোফাসহ অনেকেই। এর আগে বিএনপি নেতারা শহীদ জগলুর কবর জিয়ারত করে দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন।

Check Also

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে : অ্যাটর্নি জেনারেল

র্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।