ক্রাইমবার্তা রিপোট:সিরাজগঞ্জের চৌহালী থানায় এক এসআইয়ের হেফাজতে থাকা দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশের মারপিটে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি চলন্ত মটরসাইকেল থেকে লাফ দিয়ে পালাতে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার রাত ৮টার দিকে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার কোদালিয়া বৈন্যা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ঠান্ডু মিয়া (৪৫) টাঙ্গালইলের নাগরপুর উপজেলার দেওজান সলিল গ্রামের হিরু মিয়ার ছেলে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে নিহতের শ্বশুর রায়হান আলী অভিযোগ করে বলেন, বুধবার সন্ধ্যার পর বৈন্যা মোড়ে দিনমজুর জামাতা ঠান্ডু মিয়া অবস্থান করছিল। এমন সময় চৌহালী থানার উপ-পরিদর্শক রবিউল ইসলাম মটরসাইকেলযোগে সাদা পোশাকে একা সেখানে পৌছে ঠান্ডুর হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে টানাহেচড়া শুরু করে। সেখানে আশপাশের বেশ কিছু লোকজন জমায়েত হয়ে তার কাছে আটকের কারণ জানতে চাইলেও তিনি বলেননি। একপর্যায়ে জোরপূর্বক ঠান্ডুকে মটরসাইকেলের পিছনে তুলে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরই জানতে পারি জামাতাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। এখানে এসে পেলাম জামাতার লাশ। তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে। ঠান্ডুকে এএসআই রবিউল অন্যায়ভাবে আটকের পর মারপিট করে হত্যা করেছে। আমরা এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই। ঠান্ডুর বিরুদ্ধে কোন থানায় একটি মামলাও নেই বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে এএসআই রবিউল ইসলাম বলেন, থানার ওসির নির্দেশে ঠান্ডু মিয়াকে আটক করেছিলাম। মোটর সাইকেলে আনার পথে সে লাফ দিয়ে পালানোর সময় মাথায় গুরুতর জখম হয়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধারের পর নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঠান্ডুকে মৃত ঘোষণা করেন। নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ রাম প্রসাদ জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঠান্ডুকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে পৌঁছার আগেই ঠান্ডু মারা গেছে। তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। মাথা থেঁতলে গেছে।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে টাঙ্গাইলের নাগরপুর সার্কেলের এএসপি শাহাদত হোসেন, নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকরাম হোসেন হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। সংবাদ পেয়ে নিহতের স্বজনরাও হাসপাতালে ভিড় করে। এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে সহকারী পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) আবুল হাসনাতের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ রির্পোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতের লাশ ময়না তদন্ত শেষে চৌহালীতে আনার পক্রিয়া চলছে বলে পুলিশের একটি সুত্র নিশ্চিত করেছেন।
তবে নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত জহীরুল ইসলাম বলেন, নিহত ব্যক্তি নাগরপুর এলাকার বাসিন্দা হলেও ঘটনাস্থল চৌহালী উপজেলায় হওয়ায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে চৌহালী থানা পুলিশের কাছে ঠান্ডুর লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা পরবর্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এ বিষয়ে জানতে চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকরাম হোসেনের সরকারী নম্বরে একাধিকবার মোবাইল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।