ক্রাইমবার্তা রিপোট:দীর্ঘ সাত মাস পরে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি নেতা হুমাম কাদের চৌধুরী। আজ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে কে বা কারা তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। সেখান থেকে তিনি বাসায় যান বলে জানা গেছে। এই দীর্ঘ সময় তিনি কোথায় কি অবস্থায় ছিলেন তা জানা যায়নি। তার পরিবারের কেউ এ ব্যাপারে মুখ খুলছেন না।
গত বছরের ৪ আগস্ট রাজধানীর আদালত পাড়া থেকে তুলে নেয়া হয় মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সালাহ উদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুমাম কাদের চৌধুরীকে। একটি মামলায় তিনি এবং তার মা আদালতে গিয়েছিলেন হাজিরা দিতে। সেখানে গাড়ি থেকে নামার পরেই সাদা পোশাকধারীরা তাকে তুলে নিয়ে যায়। ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নেয়া হয়েছিলো বলে ওই সময় অভিযোগ করেন হুমামের আইনজীবীরা। ওই সময় থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও পুলিশ সেটি গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। সে থেকেই নিখোঁজ ছিলেন হুমাম কাদের চৌধুরী। গতকাল ভোররাতে তিনি ধানমন্ডির বাসায় ফেরেন বলে জানা যায়।
হুমামের একজন নিকট আত্মীয় নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, ভোররাতে রাজধানীর গুলশান এলাকায় হুমামের সন্ধান মেলে। সেখান থেকে তিনি তার বাসায় যান। হুমাম শারীরীকভাবে সুস্থ আছেন বলেও জানান তিনি।
পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখেন এমন একজন জানিয়েছেন, হুমামকে ধানমন্ডির একটি এলাকায় রাত তিনটার দিকে ফেলে রেখে যাওয়া হয়। কে বা কারা ফেলে রেখে গেছে তা জানা যায়নি। পরিবারের সদস্যরা অবশ্য হুমামের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। বাসায় ফেরার পরে তিনি সকালেই তার এক আত্মীয়ের বাসায় চলে যান। বর্তমানে ওই আত্মীয়ের বাসায় আছেন বলে জানা যায়।
হুমাম কাদের চৌধুরীর মতোই নিখোঁজ রয়েছেন, সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমান আযমী ও ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেম আরমান।
গত ২২ আগস্ট রাজধানীর মগবাজারের বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেয়া হয় সেনা বাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমীকে (৫৭)। তার মা আফিফা আযম অভিযোগ করেছেন, ২২ আগস্ট রাত অনুমান ৯টার দিকে রমনা থানার বড় মগবাজারস্থ কাজী অফিস লেনের বাসা থেকে ২০-৩০ জন লোক তার ছেলেকে তুলে নিয়ে যায়। সেই থেকেই তিনি নিখোঁজ।
গত ৯ আগস্ট রাতে ব্যারিস্টার মীর আহমেদ বিন কাসেম আরমানকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের ভাষ্য, সাদা পোশাকধারীরা রাজধানীর মিরপুরের ডিওএইচএস এর বাসা থেকে তাকে নিয়ে যায়।
আরমানের পরিবার জানায়, ওই রাত সোয়া ৯টার দিকে ৬/৭ জনের সাদা পোশাকের একদল লোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ব্যারিস্টার আরমানের মিরপুরের ডিওএইচএস এর বাসায় যায়। এসময় আরমান দরজা খুললে তাকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় ওই অজ্ঞাত লোকজন। সে থেকেই নিখোঁজ আরমান।