ক্রাইমবার্তা রিপোট:রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাও) প্রতিনিধি ঃ ঠাকুরগাওয়ের রাণীশংকৈলের ঐতিহ্য রাজা টংকনাথের স্বপ্ন সাগর কুলিক নদীর বুক চিরে ধান চাষের মহোৎসব চলছে। নাগর নদীর উপনদী হচ্ছে কুলিক নদী।
এক সময় যার স্রোতধারা রাণীশংকৈল, হরিপুর, বালিয়াডাঙ্গীর ভৌগলিক সীমানায় বইয়ে যেত। আজ ভূমি দস্যুদের রোষানলে পড়ে নদীটি তার ঐতিহ্য, প্রাণ হারাতে বসেছে। নদীর বুক চিরে চলছে অমানবিক ভাবে ধান চাষ। পাড় কেটে নদী গর্ভ ভরাট করা হচ্ছে। তাইতো নাব্যতা হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। যে নদীর বুকের উপর ভেসে যেত পাল তোলা নৌকা, জেলেরা মনের আনন্দে গান গেয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো। আজ আর তা হয়না। নদীতে নেই পানি ধরা পড়ছে না মাছ, জীবিকা নির্বাহ হচ্ছে না জেলেদের।
রাণীশংকৈল পৌর শহরের পূর্ব ও উত্তর দিক দিয়ে নদীটি বয়ে গিয়ে শহরকে আরো সৌন্দর্য মন্ডিত করে রেখেছে। পূর্ব পাড়ে কুলিক নদীর তীরে মালদুয়ার জমিদার রাজা টংকনাথের রাজবাড়ি। নদীতে নামার জন্য রাজা টংকনাথ পাকা সিঁড়ি তৈরী করেছিলেন। সেই সিঁড়ি বেয়ে নদীতে গোসল করতে নামতেন রাজা বাবু। বর্তমান কলেজ হাট সংলগ্ন ঈদগাহ থেকে যে নালাটি জুঁই ফিলিং স্টেশন হয়ে নেকমরদ পর্যন্ত চলে গেছে সেটি ছিল কাইছা নদী। কুলিক নদীর প্রবাহ থেকে যার জন্ম হয়। কুলিক নদীর প্রাণ হারিয়ে যাওয়ার ফলে সেটিও আজ মরে গেছে। কুলিক নদীর কোথাও কোথাও পানির দেখা মিললেও কাইছা নদীর বুকে পানির দেখা মিলেনা। দুই নদীর পুরো বুক চিরে চলছে ধান চাষের মহোৎসব। নদীগুলোয় ড্রেজিং ব্যবস্থা না করলে নদীর যেটুকু প্রাণ আছে অচিরেই তা হারিয়ে যাওয়ার শংকা রয়েছে। কথা হয় আঃ আজিজের সাথে তিনি বলেন, কুলিক নদী এলাকার মানুষের প্রাণ ছিল। বিলের পানি থেকে এই নদীর প্রবাহ ছিল। আজ বিভিন্ন কারনে নদীটি মরতে বসেছে দেখার কেউ নাই। জরুরী ভিত্তিতে নদীর দিকে সরকারের সুদৃষ্টি দেওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাও-৩ সাংসদ অধ্যাপক মোঃ ইয়াাসিন আলি বলেন, কুলিক নদীটি আজ বিভিন্ন কারনে মরতে বসেছে। সংকট মোকাবেলায় কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে দেশের নদীগুলোর হারানো নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে সরকার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। সেই প্রকল্পের আওতায় উপজেলার নদীগুলোতেও ড্রেজিংয়ের কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।