ক্রাইমবার্তা রিপোট:গাজীপুর সংবাদদাতা গাজীপুরের টঙ্গীতে র্যাব সদস্যের স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে দুইজনকে ফাঁিসর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে রায়ে দন্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। গাজীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক এ.কে.এম এনামুল হক বুধবার দুপুরে এ রায় দেন। এসময় দন্ডপ্রাপ্ত আবুল বাশার আসামী আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিল। অপর আসামিরা পলাতক রয়েছে।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, পটুয়াখালির সিকেওয়া বুনিয়া গ্রামের নাসির হাওলাদারের ছেলে আবুল বাসার হাওলাদার, একই জেলার তিওকাটা গ্রামের আপ্তের আলী ঘরামী ওরফে আফতাবের ছেলে মো. হারুন ঘরামী ওরফে বাবুল।
গাজীপুরের কোর্ট ইন্সপেক্টর মো: রবিউল ইসলাম জানান, গোপলগঞ্জের মুকসুদপুর থানার বাকসাখোলা এলাকার মৃত আব্দুল লতিফ শেখের ছেলে শেখ ওমর আলী বিজিবি-এর নায়েক পদে কর্মরত ছিলেন। পরে তিনি প্রেষণে র্যাব-৪-এ সাভারের নবীনগরের ক্যাম্পে যোগ দেন। এখানে কর্মরত থাকাকালে ২০১৪সালের ৮নবেম্বর দুপুরে খবর পান টঙ্গীর বড়দেওড়া খাঁপাড়া রোড এলাকার বাসায় তার স্ত্রী সালমা সুলতানা ওরফে সাথী দূর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে খুন হন। এখবর পেয়ে তিনি কর্মস্থল থেকে বাসায় যান এবং তার বাসার পূর্বের ভাড়াটিয়া কুলসুম ও প্রতিবেশী ডাক্তার মিজানের কাছে জানতে পারেন, বেলা পৌণে ১২টার দিকে কুলসুম তার মালামাল নেয়ার জন্য ওই বাসায় গিয়ে মেইন গেইটে নক করেন। শব্দ পেয়ে অজ্ঞাত দুইজন পুরুষ ভেতর থেকে গেইট খুলে কুলসুমকে টানা হেঁচড়া করে ভেতরে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। পরে ওই দুই ব্যক্তি দ্রুত ঘর থেকে বের হয়ে যায়। এসময় কুলসুমের ডাকচিৎকার শুনে প্রতিবেশি ডাক্তার মিজান এগিয়ে এসে ওই বাসার ভেতরে যান এবং দুই ব্যক্তিকে দৌড়ে পালিয়ে যেতে দেখেন। তিনি বাসার ভিতরে সালমাকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন এবং কিছুক্ষনের মধ্যে সালমার মৃত্যু হয়।
এঘটনায় ওইদিনই সালমার স্বামী শেখ ওমর আলী বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা দুইজনকে আসামি করে টঙ্গী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকর্মকর্তা এএসপি মো. সামসুল হক তদন্ত শেষে ওই মামলায় মো. আব্দুল বাশার হাওলাদার, মো. হারুন ঘরামী ওরফে বাবুল, মো. সোনা মিয়া, রাজীব মোল্লা ও পনু মিয়ার বিরুদ্ধে ২০১৫সালের ১৫আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১০জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য ও শুনানী গ্রহণ শেষে আসামী আবুল বাশার ও বাবুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় আদালত বুধবার তাদের দুইজনকে মৃত্যুদন্ড ও অর্থদন্ড দেন। অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাসের আদেশ দেয়া হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে গাজীপুরের পিপি অ্যাডভোকেট মো. হারিছ উদ্দিন আহম্মদ এবং আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. আসলাম সিকদার মামলা পরিচালনা করেন।