একতরফা নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে সরকার : মওদুদ

ক্রাইমবার্তা রিপোট:বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ অভিযোগ করেছেন, এই সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে ফেলেছে। বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে না দিয়ে সরকার আবারো একতরফা নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে।

আজ শুক্রবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণাভিযানে নেমে গেছেন। তিনি বগুড়ায় জনসভা করেছেন, নৌকায় ভোট চেয়েছেন মানুষের কাছে। এটা দেখে মনে হচ্ছে, একরতফা একটা নির্বাচন করার তারা ষড়যন্ত্র করছে। আমরা বলতে চাই, গণতন্ত্রের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদেরকে জনসভা করতে দিতে হবে, আমাদেরকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে দিতে হবে, আমাদেরকে প্রতিবাদ করার সুযোগ দিতে হবে। যাতে করে আমরা দেশের সকল রাজনৈতিক সমান্তরালভাবে সমান সুযোগ-সুবিধা এখন থেকেই পাই নির্বাচনে অংশ গ্রহন করার জন্য। নির্বাচন কমিশন এখন সরকারকে বলুক যে, এখন থেকে কোনো বিধি-নিষেধ থাকবে না বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের জনসভা আয়োজন করার জন্য।
জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক কাউন্সিলের উদ্যোগে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। সংগঠনের সভাপতি এম এ হালিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, আইন বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
নির্বাচন কমিশনকে সকলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে মওদুদ বলেন, সত্যিকার অর্থে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ উন্মুক্ত করতে চাই, তাহলে এখন থেকেই লেভেল প্লেইন ফিল্ড সৃষ্টি করতে হবে। যে নির্বাচন কমিশনের কথা আমরা বলছি, তাদের বড় দায়িত্ব হচ্ছে, এখন থেকে সকল রাজনৈতিক দলকে সমান সুযোগ দেয়ার ব্যবস্থা করা।
জনসভায় লোকসমাগমের ভয়ে সরকার বিএনপিকে জনসভা করতে দেয় না অভিযোগ করে তিনি বলেন, আজকে যদি বেগম খালেদা জিয়া একটি জনসভা করার সুযোগ পান, তাহলে প্রমাণ করে দেবে বাংলাদেশের জনগণ কাদের পক্ষে আছে। সেই ভয়ে তারা আমাদের জনসভা করতে দেয় না। সরকারকে বলবো, সমঝোতার পথে আসুন। আমরা সংলাপ চাই, রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমেই তা করতে চাই। আর যদি সমঝোতা না হয়, আন্দোলনের বিকল্প থাকবে না।
মওদুদ আহমদ অভিযোগ করে বলেন, যে রাজনৈতিক পরিবেশ সরকার সৃষ্টি করেছে, এটা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থি এবং এই চেতনাকে এই সরকারই আজকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আমি বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের এই চেতনাকে ধবংস করা যাবে না এবং এই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র আবার ফিরে আসবে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দু’টির খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সরকারের প্রতিহিংসামূলক মামলা হিসেবে অভিহিত করে মওদুদ আহমদ বলেন, এই দুইটি মামলায় সরকারের কোনো অর্থ জড়িত নয়। তারপরও রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় এই দ্ইুটি মামলা চলছে। কেউ যদি তার পিতার নামে বা তার স্বামীর নামে ফাউন্ডেশন বা ট্রাস্ট করেন-এটা কী বিশ্বাসযোগ্য যে, সেই স্ত্রী বা সন্তান তার স্বামী ও পিতার নামে যে ট্রাস্ট থেকে অর্থ আত্মসাৎ করতে পারেন, এটা দেশের একটি মানুষও বিশ্বাস করে না। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, আইনবর্হিুভুত মামলা দাঁড় করিয়েছে তাকে অপমাণিত করার জন্য, হয়রানি করার জন্য। আমি আইনজীবী হিসেবে বলতে চাই, যদি নিরপেক্ষ আদালত খাকে, যদি নিরপেক্ষতার সাথে বিচারকরা দায়িত্ব পালন করেন এবং এই মামলায় যদি সুবিচার করেন, তাহলে ইনশাল্লাহ খালেদা জিয়া খালাস পাবেন এবং তাকে শাস্তি দেয়া সম্ভবপর হবে না বলে আমি মনে করি।
আইনের দুই রকম প্রয়োগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নাইকো মামলাতেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও আসামি ছিলেন, আমাদের নেত্রীকেও আসামী করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে। আর আমাদের নেত্রীর মামলাটি চালু রাখা হয়েছে। অর্থাৎ আইনের শাসন যে বাংলাদেশে নাই, এটা একটি মাত্র উদাহরণ দিলাম, আরো হাজার হাজার উদাহরণ আছে।

Check Also

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করেননি সমাজী

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।