ক্রাইমবার্তা রিপোট:তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ভারত কর্তৃক নদীর পানি প্রত্যাহার ও সরকারের নতজানু নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। পানিসম্পদের ন্যায্য অধিকারের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে সরকার যথার্থ দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে পারেনি।
আজ বৃহস্পতিবার রংপুরে ভারত কর্তৃক তিস্তা-ব্রহ্মপুত্রসহ অভিন্ন নদীর পানি একতরফা প্রত্যাহার এবং বাংলাদেশের ওপর তার প্রভাব ও আমাদের করণীয় শীর্ষক কনভেনশন অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
রংপুর মহানগরীর টাউন হলে বাসদ (মার্কসবাদী) রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের আয়োজনে দিনব্যাপী কনভেনশনে সভাপতিত্ব করেন বাসদ (মার্কসবাদী) গাইবান্ধা জেলা আহবায়ক কমরেড আহসানুল হাবীব সাঈদ। বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্র্রীয় কার্য পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, জল পরিবেশ ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, নদী গবেষক মাহবুব উদ্দিন সিদ্দিকী, কারমাইকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. রেজাউল হক, সিপিবির কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য কমরেড শাহাদৎ হোসেন, সাবেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোজাহার আলী, অধ্যাপক আব্দুস সোবাহান, অ্যাড. মনির চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন, ডা. মফিজুল ইসলাম মান্টু প্রমুখ।
এসময় আনু মুহাম্মদ বলেন, ভারত কর্তৃক নদীর পানি প্রত্যাহার ও সরকারের নতজানু নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প আন্তর্জাতিক নদী আইনের সুস্পষ্ট লংঘন। বাংলাদেশের ৫৪টি নদী ভারত থেকে এবং ৩টি এসেছে মিয়ানমার থেকে। ভারত আন্তর্জাতিক নীতিমালা ও আইনের তোয়াক্কা না করে ভারত একতরফাভাবে নদীসংযোগ পরিকল্পনা অগ্রসর করছে। দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য, ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট, রামপালে বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ অর্থনৈতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব ক্ষেত্রগুলোতে ভারত আধিপত্য বিস্তার করে আছে।
তিনি আরো বলেন, পানিসম্পদের ন্যায্য অধিকারের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে সরকার যথার্থ দায়িত্ববোধের পরিচয় দিতে পারেনি। এতদিনেও আন্তঃনদী সংযোগ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট এবং জোরালো কোনো প্রতিবাদ দৃশ্যমান হলো না কেন? খোদ ভারতেই বড় বড় পানি বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদরা প্রকল্পটির বিরোধিতা করছেন।
তিনি বলেন, নদীবাহিত পলি দিয়ে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। শরীরে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হলে যেমন মানুষের মৃত্যু ঘটে, তেমনি নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে বা বাধাগ্রস্ত হলে ভূ-খন্ডের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। ধীরে ধীরে সেটাই হচ্ছে। সে কারণে একসময়ে ১২০০ নদীর দেশে এখন মাত্র ২৩০টি নদী। এক ফারাক্কা বাঁধই দেশের মানচিত্র থেকে মুঁছে দিয়েছে ২০টি নদী।
কনভেনশন থেকে আগামী ৬ জেলায় জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি ডাক দেওয়া হয়। কনভেনশনের মাঝে একটি র্যালি নগরী প্রদক্ষিণ করে।