অপারেশন ‘অ্যাসল্ট ১৬’ সমাপ্ত, চার ‘জঙ্গি’ নিহত

ক্রাইমবার্তা রিপোট:ট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের কলেজ রোডের ছায়ানীড় ভবনের জঙ্গি আস্তানায় যৌথ বাহিনীর অপারেশন ‘অ্যাসল্ট ১৬’ এর সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ভোর ৬টার দিকে এ অভিযান শুরু হয়। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টার এ অভিযান সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে শেষ হয়।

অপারেশন ‘অ্যাসল্ট ১৬’ সমাপ্ত, চার ‘জঙ্গি’ নিহত

অভিযান শেষে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, অভিযানে ৪ জঙ্গি নিহত হয়েছে। ২ সোয়াত সদস্যসহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বুধবার থেকে ওই ভবনে আটকা পড়া ৫ পরিবারের শিশুসহ ২০ নারী-পুরুষকে নিরাপদে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান তিনি।

অভিযান শুরুর আগে জঙ্গিরা নিজেরাই শক্তিশালী গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আত্মঘাতী হামলা চালায়। এর পরপরই সোয়াত কাউন্টার টেররিজম ইউনিট, র‌্যাব ও পুলিশের সম্বন্বয়ে গঠিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী যৌথ বাহিনী অপারেশন শুরু করে।

শক্তিশালী আত্মঘাতী গ্রেনেড বিস্ফোরণের কারণেই ৪ জঙ্গি নিহত হয়েছে উল্লেখ করে ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রেনেড বিস্ফোরণে তাদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। এ জন্য তাদের পরিচয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

ডিআইজি শফিকুল ইসলাম জানান, অপারেশন শেষ হলেও এখনো কাজ চলছে। ভেতরে বোম ডিসপোজাল টিম পাঠানো হয়েছে। সেখানে বিপুল পরিমাণ শক্তিশালী গ্রেনেড ও বিস্ফোরক রয়েছে। এসব নিষ্ক্রিয় করার কাজ চলছে।

তিনি বলেন, জঙ্গিরা মারা যাওয়ার বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পরপরই ভবনের বিভিন্ন বাসায় আটকে পড়া ৫ পরিবারের সদস্যদের বের করে আনা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় জানালার গ্রিল কেটে, পেছনের দরজা ভেঙে এবং ব্যালকনি দিয়ে আটকে পড়াদের বের করা হয়েছে। আজ যেহেতু ১৬ মার্চ, তাই এ অপারেশনের নামকরণ ‘অ্যাসল্ট-১৬’ রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।

অভিযানস্থলে উপস্থিত পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ঢাকার অতিরিক্ত উপকমিশনার আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের জানান, সফলভাবে অভিযান শেষ করা গেছে। সময় নিয়ে ভেবেচিন্তে এবং ব্যাপক প্রস্তুতি থাকায় জঙ্গি সদস্য ছাড়া সাধারণ কোনো লোকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে ভবনে আটকে পড়া শিশুসহ ২০ জনের অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের কয়েকজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বজনরা। এর মধ্যে স্থানীয় ইউপি সদস্য সেলিম মেম্বার ও আনিসুর রহমানের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন।

উল্লেখ্য, বুধবার (১৫ মার্চ) দুপুরে সীতাকুণ্ড সদরের নামার বাজার এলাকায় একটি বাড়িতে জঙ্গির আস্তানা আবিষ্কার করে বাড়ির মালিকরা। স্বামী-স্ত্রী দুই জঙ্গিকে আটক করে তারা পুলিশকে খবর পাঠালে পুলিশ সাধন কুঠির নামে বাড়িটি ঘিরে ফেলে স্বামী-স্ত্রী দুই জঙ্গিকে আটক করে ৪ মাস বয়সী এক শিশুসহ। এবং সেখান থেকে বিপুল গ্রেনেড ও বিস্ফোরক উদ্ধার করে।

আটক দুইজনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে সীতাকুণ্ড ডিগ্রী কলেজের পিছনে প্রেমতলা চৌধুরী পাড়ার ছায়ানীড় নামে অপর একটি ভবনে জঙ্গি আস্তানা খুঁজে পায়। সেখানে অভিযান চালাতে গেলে বাসার ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য গ্রেনেড হামলা চালায়। এতে সীতাকুণ্ড থানার ওসি তদন্তসহ ২ জন আহত হয়।

এর পরপরই পুলিশ অভিযানে পিছু হটে। পরে রাতে চট্টগ্রাম থেকে সোয়াত টিম, বোমা বিষেশজ্ঞ টিম ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এবং ঢাকা থেকে রওনা হয় সোয়াতের আরেকটি টিম।

Check Also

আশাশুনিতে শোভনালী ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার :আশাশুনির শোভনালী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ।সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকাল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।