ক্রাইমবার্তা রিপোট:ফিরোজ হোসেনঃসাতক্ষীরার কলারোয়ার চন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম মনি তার পরিষদের নারী সদস্য মাজিদা খাতুনকে কিল চড় ঘুষি লাথি মেরে চুলের মুঠো ধরে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিয়েছেন। পরিধেয় বসন ছিড়ে তাকে প্রায় বিবস্ত্র করে ফেলেন। এ নিয়ে অভিযোগ দিতে গেলে কলারোয়া থানায় যেয়ে চেয়ারম্যান আবারও তার ওপর চড়াও হন। এমনকি নারী সদস্যকে সহায়তাকারীদের মারপিট করে জেলে পুরবার হুমকি দিয়েছেন ।
এদিকে কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার নাথ বলেন এ বিষয়ে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন মাজিদা খাতুন। ঘটনাস্থলে একজন এসআইকে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে চেয়ারম্যান বলেছেন আমার সাথে তর্ক হয়নি। মারপিটও আমি করিনি।
সোমবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে চন্দনপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য মাজিদা খাতুন বলেন চেয়ারম্যান আমাকে বেশ কিছুদিন ধরে সরকারি বেসরকারি সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন। আমি বারবার তা প্রত্যাখ্যান করে আসছি। এ কারণে তিনি আমার ওয়ার্ডের একজন প্রতিবন্ধী সদস্য কার্ড দিতে চেয়েও দেননি। এমনকি এতোদিনে ভিজিডি, ভিজিএফ বয়স্ক ও বিধবা ভাতার তালিকা করতেও আমার সহায়তা নেননি। এসব নিয়ে রোববার তার সাথে পরিষদের চত্বরে দাঁড়িয়ে কথা কাটাকাটি হলে তিনি আমার ওপর চড়াও হন। কিল চড় ঘুষি লাথি মেরে পরিধেয় বস্ত্র ছিড়ে ফেলেন। চিৎকার করে বলেন এই মহিলাকে পরিষদ থেকে বের করে দে। এ সময় সেখানে উপস্থিত ইউপি সদস্য পলাশ, আবদুল হামিদ, আবদুস সালাম ও লাভলু আহমেদ ও চৌকিদাররা চেয়ারম্যানের রোষ থেকে আমাকে উদ্ধার করেন। মাজিদা বলেন আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টু ও সাবেক চেয়ারম্যান সম মোরশেদকে সাথে নিয়ে কলারোয়া থানায় যেয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এ খবর জানতে পেরে চেয়ারম্যান তার বাহিনী নিয়ে থানায় ঢুকে বলেন তুই আমার বিরুদ্ধে মামলা করতে এসেছিস। দেখাচ্ছি মজা। চেয়ারম্যান থানার গেটে দাঁড়িয়ে আস্ফালন করে বলেন দেখি তোর কোন বাপ আছে। আরও বলেন এর সাথে আর যারা এসেছে সব ক’টাকে ধরে পিটিয়ে জেলে পুরে দেবো। আজ রাতের মধ্যে তোর বাড়ি লাল করে দেবো।
তবে চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম বলেন আমার সাথে মাজিদার কোনো বিতর্ক হয়নি। পরিষদে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাসিরের সাথে মাজিদার তর্ক বিতর্ক হয়েছে। আমি সেটাকে নিষ্পত্তি করার কথা বলেছি মাত্র। তিনি বলেন ‘আমি আওয়ামী লীগ করি । আর মহিলা সদস্য মাজিদা জামায়াতের লোক। তিনি আমার ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার জন্য মিথ্যা বলে বেড়াচ্ছেন। থানা ক্যাম্পাসে যেয়ে কোনো হুমকির বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি। কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার নাথ বলেন মাজিদা খাতুনের অভিযোগ পেয়েছি। তবে তিনিসহ তার সহযোগীরা বলেছেন পরিষদে বসে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে নিতে। তা সত্ত্বেও তদন্ত চলছে। সত্যতা মিললে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা আওয়ামী লীগ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেন নারী সদস্যের সম্মতি নিয়ে মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু তার স্বামী মো. ইউনুস আলি বলেছেন আমার স্ত্রীর অসম্মান করা মেনে নেবো না। মামলার মাধ্যমেই নিষ্পত্তি হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এলাকার প্রবীন ব্যক্তি আবদুল মজিদ, আবদুল আহাদ ও মাজিদার স্বামী ইউনুস আলি।
Check Also
সাতক্ষীরা জেলা জলবদ্ধতা নিরসন কমিটির সভা
শাহ জাহান আলী মিটন , সাতক্ষীরা :সাতক্ষীরা জেলা জলবদ্ধতা নিরসন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।সাতক্ষীরা জেলা …