ক্রাইমবার্তা রিপোট:মাত্র আটমাস আগে ইভটিজিং করার অপরাধে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিয়ে করেছিলেন রুস্তম চৌকিদার (২৫)। এবার সুখের সংসার সাজানোর পালা। কিন্তু এমনটা হলো না তাদের। বরং নিজের স্ত্রীকে তার ফেসবুকে পরিচয় হওয়া প্রেমিকের সাথে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দিল বর্তমান স্বামী। হাসি মুখেই স্বামীর তালাক গ্রহণ করে বিদায় নিয়ে চলে গেল ভালোবাসার সেই মানুষটি।
ফিল্মি স্টাইলে তালাক দিয়ে স্ত্রীর ফেসবুক প্রেমিকের হাতে তুলে দিয়ে নজির গড়লেন এই স্বামী। আর এমন এক বিরল ঘটনার সাক্ষী হল শরীয়তপুর সদর উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নবাসী।
গত রবিবার রাতে জেলার সদর উপজেলার রুদ্রকরের সোনামুখি গ্রামে প্রবাসী মো. সায়েম চৌকিদারের মেয়ে জাকিয়ার এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা যায়। সে বর্তমানে সুবচনি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
স্থানীয় ও ওই পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রুদ্রকর ইউনিয়নের সোনামুখি গ্রামের প্রবাসী সায়েদ চৌকিদারের মেয়ে জাকিয়া (১৪) সঙ্গে আট মাস পূর্বে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ইভটিজিং করার অপরাধে বিয়ে করে একই এলাকার হানিফ চৌকিদারের ছেলে রুস্তম চৌকিদার (২৭)।
কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর ফেসবুকে পরিচয় হয় একই উপজেলার মনহরবাজার এলাকার মনুউল্লা চৌকিদারের ছেলে আসিফের (২৪) সঙ্গে। আস্তে আস্তে তাদের মধ্যে সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। এক পর্যায়ে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গতকাল রবিবার গভীর রাতে ফেসবুকের সেই প্রেমিক আসিফ দেখা করতে যায় জাকিয়ার বাড়িতে।
সেখানে জাকিয়ার স্বামী রুস্তম তাদেরকে ধরে ফেলে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য টুটুল ঢালী উভয় পক্ষের সঙ্গে দেন-দরবার শেষে স্বামীর উপস্থিতিতে ফেসবুকে পরিচয় হওয়া সেই প্রেমিক আসিফের সঙ্গে রেজিস্ট্রি ছাড়া বিয়ে সম্পন্ন করেন। এর আগে বিয়ের বয়স না হওয়ায় পূর্বের স্বামী রুস্তমের সঙ্গে জাকিয়া রেজিস্ট্রি ছাড়াই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছিল।
স্থানীয় ইউপি সদস্য টুটুল ঢালী বলেন, জাকিয়া আমার প্রতিবেশি ভাগ্নি হয়। গত রবিবার রাতে ঘটনাটি শোনার পর জাকিয়াদের বাড়িতে আসি। পরে সাবেক স্বামী রুস্তম জাকিয়াকে খোলা তালাক দিলে (ফেসবুকের প্রেমিক) আসিফ জাকিয়াকে বিয়ে করে। রেজিস্ট্রি ছাড়াই বিয়ে সম্পন্ন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কথাটি এড়িয়ে যান।
রুদ্রকর ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ঢালী বলেন, সরকার বাল্য বিয়ের ব্যাপারে আইন করেছে। কিন্তু সে আইন তারা না মেনে রেজিস্ট্রি ছাড়াই বিয়ে সম্পন্ন করেছে বলে জানতে পেরেছি। কিন্তু এ বাল্য বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জিয়াউর রহমান বলেন, এমন কোনো বাল্য বিয়ের ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।