হাকালুকিতে শুধু প্রাণী সম্পদ বিভাগের ক্ষতি ২৬ কোটি টাকা
এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে শুধু প্রাণী সম্পদ বিভাগের ক্ষতি হয়েছে ২৬ কোটি ১০ লাখ টাকা। হাওরের প্রাণী সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি স্বচক্ষে দেখতে শনিবার হাওর পরিদর্শন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মাকসুদুল হাসান খানের নেতৃত্বে মৎস বিভাগের একটি টিম।
প্রাণী অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাকালুকিতে মারা গেছে মাত্র ৩৬৭টি হাঁস। প্রতিটি হাঁসের গড় মূল্য ধরা হয়েছে ২শ৫০ টাকা। বন্যায় আক্রান্ত ৩ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ ১৫টি ইউনিয়নে ৬৭ হাজার ২২টি গরু, ১৫ হাজার ৭২টি মহিষ, ২১ হাজার ৮৬৫টি ছাগল,২ হাজার ৭১৯টি ভেড়া, ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮৯০টি মুরগি ও ৮৯ হাজার ৭৫৬টি হাঁস এবং ১৮ হাজার ৫শ হেক্টর চারণ ভূমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাছাড়া ১২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা মূল্যের পশু পাখির দানাদার খাদ্য ১২ হাজার ৯৩ মেট্রিক টন। ১২ কোটি ১৬ লাখ টাকা মূল্যের ৪৮ হাজার ৬৫২ মেট্রিক টন খড় এবং ১৮ কোটি ৭৯ লাখ ২ হাজার ৮০ টাকা মূল্যের ৯ হাজার ৩৯৩ মেট্রিক টন ঘাস নষ্ট হয়েছে। এবং ৫৩ হাজার ৪০০ টাকার পশু পাখি মারা গেছে।
প্রাণী সম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তা হাকালুকিতে মাত্র ৩৬৭টির বেশি হাঁস মারা যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলছেন রোগাক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে পর্যাপ্ত ঔষধ মজুত রয়েছে এবং ৭টি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে। হাওর এলাকায় গোখাদ্য সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। হাওর তীরের বাসিন্দারা গবাদিপশু বিশেষ করে গরু ছাগল নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
শনিবার হাকালুকি হাওর বিভিন্ন বিল পরিদর্শন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মাকসুদুল হাসান খান, অতিরিক্ত সচিব ড. নজরুল আনোয়ার, মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক শেখ মুস্তাফিজুর রহমান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (সম্প্রসারণ) গোলাম মাহমুদ, সিলেট বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশারেফ হোসেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ও এডিসি (রেভিনিউ), মৌলভীবাজার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও জুড়ি, উপজেলা মৎস্য ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখা। পানি পরিক্ষা করে দেখা যায় পানির গুনগত মান খুবই ভাল। আগামীতে হাওরে মাছের উৎপাদনের স্বাভাবিক ধারা বজায় রাখতে সম্ভাব্য সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করবে মৎস্য অধিদপ্তর। এছাড়া শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল হাকালুকি পরিদর্শণ করে গেছেন।
হাকালুকি হাওরের এলাকায় গবাদিপশু আক্রান্ত হচ্ছে খুরা রোগসহ নানা পানিবাহিত রোগে। জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের দাবি হাকালুকি বেষ্টিত ৩ উপজেলায় সার্বক্ষণিক মেডিকেল টিম কাজ করছে এবং আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ কারণে নতুন করে কোন গবাদিপশু মারা যায়নি।
কুলাউড়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইফুৃদ্দিন আহমেদ জানান, যতদিন পর্যন্ত হাকালুকি হাওরে বন্যা ও দুর্যোগ থাকবে ততদিন মেডিক্যাল টিম কাজ করবে। সকল সীমাবদ্ধতা মোকাবেলা করে সার্বক্ষণিক কাজ করবে মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা।