ছাত্রীর গর্ভপাতে উঠল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের নাম!

ক্রাইমবার্তা রিপোট:ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে। এরপর ওষুধ খাইয়ে ওই ছাত্রীকে গর্ভপাত করানো হয়।

 

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের সভাপতির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ছাত্রী। এই ঘটনায় বিচার না পেলে ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। তিনি আত্মহত্যার নোটও লিখে রেখেছেন বলে জানান।

ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শামসুর রহমানকে সভাপতি ও সিন্ডিকেট সদস্য ড. মৃণাল ভট্টাচার্য, প্রক্টর জাহিদুল কবীর ও জ্যেষ্ঠ মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. মমতাজ বেগমকে সদস্য করা হয়েছে।

ওই কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, “হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের স্যার (লেকচারার) আমার আত্মীয়। তিনি আমার অতীত সম্পর্কে সব কিছুই জানতেন। আমার জীবনে একটা বিয়ে হয়েছিল। আমার ডিভোর্স হয়েছিল। তিনি আমার সব ঘটনা জানার পরও প্রথমে আমার সাথে প্রেম করে, পরে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। গত এক মাস আগে আমার প্রেগনেন্সি প্রবলেম হয়েছিল। স্যার আমার মেসের সামনে এসে ওষুধ দিয়েছিল। ওষুধের নাম ছিল …।

অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী আরো উল্লেখ করেন, ‘তিনি (শিক্ষক) আমাকে অনেক কথা বলেছিল। তুমি আমার সাথে যে সম্পর্ক করেছ এই কথা কাউকে বলিও না। আমি তোমাকে বিয়ে করব। একটা সার্কুলার হবে আর তখন আমার চাকরী স্থায়ী হবে। পরে আমি তোমাকে বিয়ে কবর। …আমি (ছাত্রী) তাকে যখনি বলেছি, আপনি আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন, আমাকে বিয়ে করেন। তখনি সে আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার সাথে আমার সম্পর্কের দেড় বছর চলছে।’

জানতে চাইলে হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ওই ছাত্রী বলেন, ‘আমি এক বছর ছয় মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি। এই ঘটনার পর এখন আমার পাশে পরিবার বা অন্য কেউ নেই। কেউ আমার পাশে দাঁড়ায়নি। এ ঘটনায় বিচার না পেলে আমি আত্মহত্যা করব। আত্মহত্যার নোট লেইখা রাখছি।’

এসব বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ওই শিক্ষকের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের সভাপতি সুব্রত কুমার দে বলেন, ‘ওই ছাত্রীর অভিযোগপত্রটি পাওয়ার পর আমরা বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক করেছি। পরে বিভাগের শিক্ষকদের পরামর্শ অনুযায়ী ওই অভিযোগপত্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে দেওয়া হয়েছে। আজই বিভাগের সব শিক্ষক মিলে উপাচার্যকে ওই অভিযোগপত্রটি দেওয়া হয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘আমরা ওই ছাত্রীর অভিযোগপত্রটি পেয়েছি। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

Check Also

আশাশুনিতে শোভনালী ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার :আশাশুনির শোভনালী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ।সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকাল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।