ক্রাইমবার্তা রিপোট:রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সংবাদ সম্মেলনে বিশ্লেষকরা অভিযোগ করেছেন, ঢাকাসহ সারা দেশের গণপরিবহনে বিভিন্ন নামে ও অজুহাতে চাঁদাবাজি হচ্ছে। এ চাঁদাবাজি হচ্ছে শাসক দলের সংশ্লিষ্টতা ও পৃষ্টপোষকতায়। এ কারণেই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয় না।
সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এআই মাহবুব উদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য দেন আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া, বিপ্লবী সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. আলী রেজা প্রমুখ। এতে গণপরিবহন জনবান্ধব করতে ১৬টি সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
অধ্যাপক মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, গণপরিবহনে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। সিটিং সার্ভিসের নামে যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় চলছে। কয়েক দিন আগে সিটিং সার্ভিস বন্ধে অভিযানের সময় পরিবহন নৈরাজ্য হলেও সরকার কঠোরভাবে আইনি পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পরিবহন মালিকদের প্রভাবশালী ও অতি ক্ষমতাধর আখ্যা দিয়ে তাদেরকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। তিনি বলেন, ঢাকার সড়কে বাসের তুলনায় ৩৩ ভাগ বেশি প্রাইভেট কার।
অথচ এসব প্রাইভেট কারে মোট যাত্রীর ১৩ শতাংশ চলাচল করে। অধ্যাপক মাহবুব উদ্দিন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা উদ্বেগজনক মাত্রায় বেড়ে চলছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চার মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে ১ হাজার ৪৫৯ জন। এছাড়াও আহত হয়েছে ৪ হাজার ৫৪১ জন। জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল নামে একটি এপেক্স বডি থাকলেও এর কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়।
মো. আলী রেজা বলেন, সড়কে আইনের কঠোর প্রয়োগ করা হলে গণপরিবহনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির উন্নতি হবে। ট্রাফিক সিগনাল মানতে বাধ্য করা, লেন মেনে চলা, নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া পার্কিং না করা, কতগুলো জায়গায় ওভারটেক না করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, নিময় না মানলে জরিমানা আছে, শাস্তি হবে, কারও রেহাই নেই- এমন সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারলে পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। মাহবুব আলম বলেন, দেশের ৮৩ ভাগ চালকের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই।
সংবাদ সম্মেলনে যেসব সুপারিশ করা হয় তার অন্যতম হচ্ছে- ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সবিহীন চালকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে। রাস্তা নির্মাণে রোড সেফটি অডিট পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস ত্রুটি দূর করতে হবে। যেকোনো মূল্যে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।