ক্রাইমবার্তা রিপোট:স্টাফ রিপোর্টার,সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সীমান্ত অঞ্চলের মাদক রাজধানী খ্যাত লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়ন এলাকায় প্রত্যক্ষ কর্তাদের সহযোগীতায় প্রতিদিন বসছে মাদকের হাট। ফলে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এই এলাকায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে উঠতি বয়সের যুবকদের আনাগোনা দেখা যায় প্রতিনিয়ত। পাশে ভারত সীমান্ত হওয়ায় ওই এলাকায় স্থানীয় কর্তাদের ম্যানেজ করে মাদক ব্যবসায়ীরা অবাদে চালিয়ে যাচ্ছে ভারতীয় ফেন্সিডিল, ইয়াবা, মদ ও গাঁজাসহ নেশা জাতীয় দ্রব্যের রমরমা ব্যবসা। আর এর ভয়াল ছোবলে বিষাক্ত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকাসহ পৌরসদর জুড়ে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলাকে মাদক নির্মূল করার জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালিত করার নির্দেশ থাকলেও এ সব অঞ্চলে মাদকের ব্যবসা অজ্ঞাত কারণে বেড়েই চলছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু কর্মকর্তা মাদক চোরাচালান সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের সাথে আতাত করে রাতের আঁধারে গুছিয়ে নিচ্ছে অর্র্থ। ফলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অপতৎপরতায় ঝিমিয়ে পড়ছে মাদক নির্মুলের বিশেষ অভিযান। লোক দেখানে মাঝে মধ্যে দুই একটা অভিযান পরিচালনা করে খুচরা মাদক বিক্রেতাকে আটক ও মাদক উদ্ধার হলেও মাদক স¤্রাটরা বরাবরই থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। যার প্রভাবে এলাকার যুুব সমাজের উপর পড়ছে মাদকের ভয়াল আগ্রাসী থাবা। অনুুসন্ধানে জানা যায়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা পুলিশ, ডিবি, সিআইডি ও মাদক নিয়ন্ত্ররণ অধিদপ্তরের সাথে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক স¤্র্রাটরা সাপ্তাহিক, মাসিক চুক্তি থাকার কারণে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। আর এই সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা ও মাদক স¤্রাটরা নির্ভয়ে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের মাদকের রমরমা ব্যবসা। কত তারার অকালে জীবন প্রদ্বীপ নিভে গেছে মাদকের নীল ছোবলে। আইন শৃৃঙ্খলা মাসিক মিটিংয়ে কলারোয়ার নাম বারবার উঠে আসে মাদকে। সেখানে উত্তরে ১২টি ইউনিয়নের জন প্রতিনিধিরা অভিযোগ করে বলেন পাশে ভারত সীমান্ত হওয়ায় পৌরসদর ও ইউনিয়নে মাদকের জোঁয়ারে ভাসছে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ফেন্সিডিল, গাঁজা অবাদে আসছে ইয়াবা মদ, ড্রাগসহ বিষাক্ত ঔষধ। তাতে ফাঁয়দা লুুটছে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে সহযোগীতা করা কিছুু দূর্র্ণীতি পরায়ণ কর্র্মকর্তারা। মাদক ব্যবসায়ী চক্রটি সংঘবদ্ধ হয়ে নতুন ভাবে কৌশল পরিবর্তন করে মাদকের রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার এখন সাধারণ জনগণ আস্থা হারিয়ে ফেলেছে পুলিশ ও মাদক নিয়ন্ত্ররণ অধিদপ্তরের উপর থেকে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, সীমান্তবর্তী জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিজিবি ক্যাম্প। মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে বিজিবি সদস্যদের রয়েছে গভীর সখ্যতা। আর এ কারণেই তাদের সহযোগীতাই মাদক ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করায়। সুযোগ বুঝে মাদক স¤্রাট ও ব্যবসায়ীরা এ মাদকের ব্যবসা দেদারসে চালিয়ে যাচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীরা ফেন্সিডিলের বোতল প্রতি ৬/৭ শ’ত টাকা হারে নিচ্ছে সেবনকারীদের কাছ থেকে। সীমান্ত এলাকায় অবৈধ মাদক পাচারের নির্বিঘেœ নিরাপদ রুট। যার কারণে এই সীমান্ত থেকে লাঙ্গলঝাড়া ও পৌর সদর বেছে নিয়েছে মাদক স¤্রাট ও গডফাদারা। সীমান্তে মাদক স¤্রাটরা প্রতিদিন ভারতীয় ফেন্সিডিল, ইয়াবা মদ ও গাঁজাসহ নেশা জাতীয় দ্রব্য এনে মজুুদ রাখে। সুযোগ বুঝে নসিমন, করিমন, মটর সাইকেল মাইক্রো, পিকআপ ও বাইসাইকেল করে উপজেলার লাঙ্গলঝাড়া পৌর সদরের ঝিকরা, মুুরারীকাটি, তুলশীডাঙ্গাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছায়ে দেয়। লাঙ্গলঝাড়া ও ঝিকরা কোল্ডস্টোর এলাকার প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আসা উঠতি বয়সের যুবকেরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নামি দামী ব্যান্ডের মটরসাইকেলে করে এসে লাঙ্গলঝাড়া ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে ও পাশে আদর্র্শ দাখিল মাদ্রাসার পাশে দাঁড়িয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে কম পক্ষে ৪/৫মিনিট পর মাদক ব্যবসায়ী এসে তাদের দেখানো গোপন জায়গায় টাকা রেখে এবং সেখান থেকে মাদক নিয়ে দেদারসে সেবন করে বিশ্রামে চলে যায় ইউপি পরিষদ ভবনে বা দাখিল মাদ্রাসার ভিতরে। নিজে হাতে মাদক বিক্রয় করতে চায়না মাদক ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনের ভয়ে নিজেদের গ্রেফতার এড়াতে তারা এমন কৌশল অবলম্বন করেন। পরিচিত লোক ছাড়া কোন প্রকার মাদক বিক্রয় করবেনা ব্যবসায়ীরা। এ ব্যপারে এলাকার অভিভাবক ও সূধীজনের সাথে কথা হলে তারা বলেন মাদকের আগ্রাসন থেকে এলাকার যুব সমাজকে বাঁচাতে ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার সাহায্যের জন্য উর্দ্ধতন প্রশাসনের উপর মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে এলাকায় কয়েকবার মাইকিং করে মাদক ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদারদের দিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের ধরে পুলিশের কাছে তুলে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। যদি কোন মাদক ব্যবসায়ী এই নির্র্দেশ অমান্য করে মাদক ব্যবসা করে আর সঠিক প্রমান পেলে আমরা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা একযোগে তাদেরকে ইউনিয়ন থেকে বিতরিত করবো। তবে শুনেছি বা দেখেছি কলারোয়ায় নামধারী কিছু উঠতি বয়সের যুবকরা সব সময় আমাদের ইউনিয়নে এসে মাদক ব্যবসায়ীদের শেল্টার দিয়ে তারা সেবন করে চলে যায়। এমনকি ইউপি পরিষদ ভবনে ও দাখিল মাদ্রাসার পাশে মাদক সেবনের আলামত রেখে যায়। যা ইউনিয়নবাসীর জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক উর্দ্ধতন কর্মকর্র্তা বলেন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক স¤্রাট এমনকি পুলিশের এমন কোন সদস্য জরিত যেই হোক না কেন কাউকে কোন ছাড় হবে না। এছাড়া এলাকায় নামধারী মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের তালিকা ধরে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এদিকে বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সীমান্ত অঞ্চল হলেও এলাকার পরিস্থিতি অনেকটা ভাল। বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আমরা প্রতিনিয়তই মাদক উদ্ধার করছি। পাশে ভারত সীমান্ত হওয়ায় এলাকায় মাদক পুরোপুরি নিমর্ূূল করা সম্ভব হচ্ছেনা। মাদক ব্যবসায়ীরা বর্তমানে খুবই চালাক আমাদের বিজিবি সদস্যদের চোখ ফাঁকি ও তাদের পোষা সোর্সদের দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় মাদক পাচার করায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে মাদক নিয়ন্ত্ররণে আমরা বিজিবি সীমান্তে সর্বদা সজাগ রয়েছি।
কলারোয়ায় ১৫দিন ধরে গৃহবধু রেবেকা নিখোঁজ’
থানায় কোন অভিযোগ দারের করেনি কোন পক্ষ
ফিরোজ জোয়ার্দ্দার,স্টাফ রিপোর্টার,
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় রেবেকা খাতুন (২৩) নামের এক গৃহবধু ১৫দিন ধরে নিখোঁজ হয়েছে। নিখোঁজ হওয়া গৃহবধু উপজেলার জালালাবাদ ইউপির বদ্দিপুর গ্রামের আব্দুল গফ্ফারের মেয়ে ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রায়পুর গ্রামের মোসলেম সরদারের ছেলে নেছার সরদারে স্ত্রী। নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় উভয় পরিবারের পক্ষ থেকে কলারোয়া ও সদর থানায় কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি কেহ। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ২১শে এপ্রিল বর্র্দ্দিপুর গ্রামের আব্দুল গফ্ফারের মেয়ে রেবেকা খাতুনের সঙ্গে রায়পুর গ্রামের নেছার সরদারের সাথে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের পর উভয় পরিবারের মধ্যে লোকজন যাতায়াত করতো। যাতাযাতের এক পর্র্যায়ে মেয়ের পিতা আব্দুল গফ্ফার জামায় নেছারের বাড়িতে গিয়ে মেয়েকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। মেয়ে ৪/৫দিন বাবার বাড়িতে থাকার পর জামাই পক্ষ থেকে রেবেকা নিতে আসেন নেছারের বড় ভাইয়ের ছেলে ইয়াছিন। সেই দিন দুুপুরে ইয়াছিন খাওয়া-দাওয়া শেষ করে মেয়ের বাবা গফ্ফার ইয়াছিনের কাছে মেয়ে রেবেকাকে দিয়ে জামাই এর বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ২৮ শে এপ্রিল মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে এসে স্বামীর সাথে সংসার করতে থাকে। ১মে সোমবার সন্ধ্যার পর মেয়ের পিতা জামাই নেছারের কাছে মোবাইল ফোন করে মেয়ের কথা জানতে চাইলে জামাই বলে রেবেকা বাড়িতে আছে কোন সমস্য নেই। এদিকে ওই দিন রাতে মেয়ের চাচা বহু নাশকতা মামলার আসামী আজগর আলী ভাতিজি রেবেকার সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে আজগরকে মেয়ের শ্বশুর বাড়ির পাশে ঘটক রুহুল আমিন বাড়িতে আসতে বলে। মেয়ের কথামত আজগর ঘটক রুহুল আমীনের বাড়িতে আসলে যথাসময়ে রেবেকার শ্বশুর বাড়ির পাশে ঘটকের বাড়িতে হাজির হয়। হাজির হয়ে মেয়ে আজগরের কু-মতলবে স্বামীর দেওয়া নতুন শাড়ী গচ্ছিত নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে আজগর ও ঘটক রুহুল আমিনের সাথে চলে যায়। স্বামী নেছারসহ তার বাড়ির লোকজন রেবেকাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করে কোন সন্ধান পায়নি। রেবেকাকে না পেয়ে জামাই নেছার তার শ্বশুর আব্দুল গফ্ফারের কাছে ফোন করে বিষয়টি জানায়। মেয়ের পিতা বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে মেয়ে রেবেকাকে কোন সন্ধান করতে পারেন নি। এদিকে গোপন সংবাদে নেছারের বাড়ির লোকজন ওই রাতে দেখেছে গৃহবধু রেবেকা তার চাচা আজগর এবং ঘটক রুহুল আমিনের সাথে মটর সাইকেল করে শ্বশুর বাড়ি থেকে পালিয়ে অন্যত্র চলে যায়। পালিয়ে যাওয়া গৃহবধুকে আজগর আটক রেখে ভারতের পাচার করে দেবে বলে নেছারের বাড়ির লোকজনের ভাষ্য। এদিকে মেয়েকে আটক রেখে পাচারের ঘটনা আজগর অন্যদিকে ঘোঁরানোর জন্য জামাই নেছারের উপর চাপ দিতে থাকে। সহজ সরল নেছার আইনের আশ্রয় যাতে নিতে না পারে সেই জন্য আজগর মেয়ের বাবা আব্দুল গফ্ফারকে বিভিন্œ প্রকার প্রলোভন দেখিয়ে জামাই নেছারকে কাবু করতে চাই। আজগর মেয়েকে ভাগিয়ে নিয়ে জামাই নেছারের উপর চাপ প্রয়োগ করে মোটা অংকের অর্র্থ হাতিয়ে নেবে বলে জামাই নেছারের ভাষ্য।
Check Also
আশাশুনি সদর ইউনিয়ন জামায়াতের ৮টি ওয়ার্ডে আংশিক কমিটি গঠন
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি প্রতিনিধি।।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আশাশুনি সদর ইউনিয়নের ৮টি ওয়ার্ডে আংশিক কমিটি গঠন করা …