ক্রাইমবার্তা রিপোট:পিরোজপুরে সাদমান সাকিব প্রিন্স (১৪) নামের এক স্কুলছাত্রকে হত্যার দায়ে আপন দুই ভাইয়ের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলো, নাফিজ হাসান নাহিদ (১৯) ও তার বড় ভাই নাজমুল হাসান নাঈম (২৫)। আর এ মামলায় অপর আসামি নাহিদ ও নাঈমের পিতা শফিকুল আলম হাওলাদারকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকার পক্ষের আইনজীবী খান মো: আলাউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৯ আগস্ট নাহিদ ও নাঈম দুই ভাই মিলে ক্রিকেট খেলার কথা বলে সাদমান সাকিব প্রিন্সকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে খেলা নিয়ে তাদের সাথে সাকিবের ঝগড়া হয়। তখন তারা কৌশলে তাকে তাদের সিআই পাড়ার বাসায় নিয়ে হত্যা করে লাশ ঘরের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে। পরে রাতের কোনো এক সময় তারা সাকিবের হাত-পা বাঁধা লাশটি কাঠের সাথে রশি দিয়ে বেঁধে তাদের ভাড়া বাসার সামনে রায়ের পুকুরে ফেলে দেয়।
১ সেপ্টেম্বর এলাকাবাসী পুকুরে লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে খবর দিলে সদর থানা পুলিশ পুকুর থেকে লাশটি উদ্ধার করলে সাদমান সাকিব প্রিন্সের লাশ তার পিতা আদর্শ পাড়ার বাসিন্দা জাকির হোসেন সর্দার লিটন পুত্রের লাশ সনাক্ত করেন।
নিহত সাকিব পিরোজপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নিহতের পিতা ২ সেপ্টেম্বর উল্লেখিত তিনজনকে আসামি করে পিরোজপুর সদর থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন ঘটনার তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২৪ জুলাই পুলিশ তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
আজ বুধবার দুপুরে পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো: গোলাম কিবরিয়া সাদমান সাকিব প্রিন্সকে হত্যার দায়ে আসামি নাফিজ হাসান নাহিদ ও তার বড় ভাই নাজমুল হাসান নাঈমকে মৃত্যুদন্ড এবং হত্যার পর লাশ লুকিয়ে রাখার অপরাধে তাদের সাত বছরের কারাদন্ডাদেশ দেন। সাথে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও ধার্য করেন। অপর আসামি নাহিদ ও নাঈমের পিতা শফিকুল আলমকে বেকসুর খালাশ দেন।
আসামিদের গ্রামের বাড়ি ইন্দুরকানী উপজেলায়। রায়ের সময় নাজমুল হাসান নাঈম আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
এ দিকে মামলার বাদি জাকির হোসেন সর্দার লিটন শফিকুলের খালাস পাওয়ার ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমি উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
আসামি পক্ষে কৌসুলী ছিলেন অ্যাডভোকেট সিরাজুল হক।