খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসের ঝুঁকিতে বসবাস করছে হাজারও পরিবার। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফের টানা বর্ষণে জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিশ শরমিনের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ জেলা শহরের কলাবাগান, নেন্সিবাজার, শালবন, হরিনাথ পাড়া গ্যাপ, আঠার পরিবার এলাকায় ঝুকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারী লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে।
খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এলিশ শরমিন জানান, বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। যাতে জানমালে ক্ষতি না হয় সে জন্যে লোকজন আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। শালবনের জেলা প্রশাসনের স্টাফ কোয়াটারকে আশ্রয় শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সেখানে আশ্রিতদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের লিডার মো: জসিম উদ্দীন জানান, ঝুঁকি জেনেও অনেকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে চাচ্ছে না। তার পরও বুঝিয়ে তাদের আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেক মো. আব্দুল হান্নান জানান, বর্ষণ শুরু হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধস দেখা দিয়েছে। দুপুর পর্যন্ত অন্তত ৩০টি পরিবারকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।
মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা মো. আলী অভিযোগ করেন, কিছু খারাপ ব্যক্তি পাহাড় কেটে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করার কারণে ঝুঁকি আরো বেড়েছে।
বেলার নেটওয়ার্ক সদস্য আবু দাউদ অভিযোগ করেন, শহরের বেশ কয়েকটি স্পটে পাহাড় কেটে বা পাহাড়ের পাদদেশে অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ বেড়েই চললেও পাহাড় কেটে বাড়িঘর নির্মাণ বন্ধে প্রশাসন কোন পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
পাহাড় কাটা বন্ধে ২০১১ সালে জেলা প্রশাসনকে নোটিশ দিলেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
তবে প্রশাসক মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, পাহাড় কাটা ও পাহাড়ের ঢালে বসতি স্থাপনের বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই।
খাগড়াছড়িতে প্রতিনিয়ত পাহাড় কেটে পাহাড়ের পাদদেশে নির্মাণ করা হচ্ছে বাড়িঘর। বাড়িঘর নির্মাণে মানা হচ্ছে না বিল্ডিং কোড। ফলে খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসের ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে। পাহাড় কাটা বন্ধ ও পাহাড়ের ঢালে বসতি স্থাপন বন্ধের উদ্যোগ না নিয়ে যেকোনও সময় প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে বলেও মনে করেন জেলা প্রশাসক রাশেদুল ইসলাম।