ঢাকা: ভারতে পাঁচদিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তাকে স্বাগত জানাতে রোববার বিকেলে বিমানবন্দর সড়কে সংবর্ধনা দিতে প্রস্তুতি নিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
এ সময় বনানী থেকে উত্তরাগামী সড়কটি বন্ধ করে দেয়া হয়। রাস্তার একপাশ দিয়ে সীমিত আকারে যানবাহন চলাচল করে। এ কারণে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কে দেখা দেয় দীর্ঘ যানজট। ভোগান্তিতে নাকাল হয়ে উঠেন নগরবাসী।
রাজধানীর বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আযম মিয়া বলেন, ‘রাস্তার একপাশ দিয়ে সীমিত আকারে যানবাহন চলছে।’
বিমানবন্দর সড়কে এরশাদকে সংবর্ধনা দিতে অবস্থান করছেন জাতীয় পার্টি অস্থায়ী মঞ্চও তৈরি করে বিমানবন্দর সড়কে।
রাজধানীর উত্তরার সড়কে টানা দুই ঘণ্টা ধরে গাড়িতে আটকা রয়েছেন হাজার হাজার ভুক্তভোগী। নাঈম খান নামে এক যাত্রী বলেন, ‘এরশাদ আসবেন বলে সমর্থকরা সড়কের দু’ধারে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। জসীমউদদীনে (উত্তরা) ৪০ মিনিট ধরে এক স্থানে গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে। একটুও নড়ছে না। কে, কোথা থেকে আসছেন; এজন্য সড়ক বন্ধ করে দেয়ার কোনো মানে হয় না।’
এরশাদ ভারত সফর করে এমন কী অর্জন করে এলেন যে, তার জন্য রাজপথ বন্ধ করে নগরবাসীসে ভোগান্তিতে ফেলা হলো? এমন প্রশ্নও ছিল অনেকের মুখে।
তবে জাতীয় পার্টির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ভারতের দিল্লিতে ৫ দিনের এ সফরটি ছিল এরশাদের ব্যক্তিগত। যদিও সফরে পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারসহ দুজন প্রেসিডিয়াম সদস্যও ছিলেন।
সড়কে দুর্ভোগে পড়া মানুষের প্রশ্ন, সফর যদি ব্যক্তিগতই হবে তাহলে সংবর্ধনার প্রেক্ষাপট কী?
এদিকে নিক্সন মুস্তাকিম নামে এক ভুক্তভোগী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বনানী থেকে উত্তরার দিকে এয়ারপোর্ট রোডে গাড়ি চলছে না। জ্যামে বসে বৃষ্টিতে ভিজছি, কারণ বাসে জানালার কাচ নেই।’
এরশাদের আগমন উপলক্ষে দেয়া সংবর্ধনায় যানজটের মধ্যে আটকা পড়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। দীর্ঘ এক ঘণ্টা সড়কে আটকা থাকার পর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘এক ঘণ্টার ওপর উত্তরায় জ্যামে আটকে আছি। পুলিশ রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে নাকি এ অবস্থা। কেন? হু. মো. এরশাদ ভারত থেকে ফিরেছেন। তার বাসায় গমন সুগম করার জন্য পুলিশের না কি এ ব্যবস্থা। বিভিন্ন গাড়ির ড্রাইভাররা তাই বলাবলি করছেন। ডা. এর সাথে আমার এপয়েন্টমেন্টটা ক্যানসেল হোল। রংপুর থেকে আসা আমার দলের একজন রাতের বাসে ফিরে যাবেন। তা বুঝি আর হবে না। অজস্র গাড়ি আর মানুষ রাস্তাবন্দি হয়ে আছেন। তাদের না জানি আরও কত ক্ষতি হচ্ছে। এরশাদ সাহেব কি এগুলো জানেন? কী কাজে গেছিলেন তিনি যে পুলিশ তাকে এত খাতির করছে? অসভ্যতা আর কাকে বলে?’
জাতীয় পার্টি সূত্রে জানা গেছে, দলটির চেয়ারম্যান রোববার বিকেল ৪টা ৩৮ মিনিটে জেট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় অবতরণ করেন। তার সঙ্গে রয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি, পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চেয়ারম্যানের প্রেস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভ রায় এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য মেজর মো. খালেদ আখতার (অব.)।
সফরকালে এরশাদ আজমির শরিফে হজরত খাজা মঈনুদ্দীন চিশতীর (রহ.) পবিত্র মাজার জিয়ারত করা ছাড়াও বিজেপি সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক করেন।