আকবর হোসেন,তালা: তালা উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে, উপজেলা পরিষদ চত্বরে “স্বাস্থ্য পুষ্টি অর্থ চাই,দেশী ফলের গাছ লাগাই” এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে, তালায় তিন দিনব্যাপী ফলদ বৃক্ষমেলা ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় নার্সারী মালিকদের মাঝে পুরস্কার বিতরন ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও কৃষকদের মাঝে ফল গাছের চারা বিতরণের মধ্যদিয়ে সমাপ্ত হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ সামছুল আলম সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে মেলার সমাপনী বক্তব্য করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ফরিদ হোসেন। এসময় অন্যনাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তালা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসার আব্দূল সুবান ও শেখ আবুজাফর প্রমূখ।
আলোচনা শেষে মেলায় আগত নার্সারী মালিকদের মাঝে পুরস্কার বিতরন ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ও কৃষকদের মাঝে ফল গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
শিশু বান্ধব বিদ্যালয় পরিবেশ
মোঃ নজরুল ইসলাম, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার
সভ্যতার আদি ইতিহাস উদঘাটন করলে দেখা যায়, মানুয়ের উন্নয়ন চিন্তা চেতনার সাথে যে ভৌগলিক পরিবেশের সাজুষ্য রয়েছে সেই পরিবেশে মানুষ বসতি গড়ে তোলে, সেখানে পড়ে যায় নগরায়নের হিড়িক। শুরু হয় সভ্যতার অগ্রযাত্রা। সিন্ধু সভ্যতা, মিশরীয় সভ্যতা, সুমেরিয় সভ্যতা, মেসোপটেমীয় সভ্যতা ইত্যাদি এগুলোর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। কিন্তু গ্রীক সভ্যতার পটভূমিতে ছিল ভিন্ন আঙ্গিক। গ্রীক সভ্যতা ছিল মূলত: জ্ঞানী গুণিদের জ্ঞান বিস্তরণের ফলশ্রুতি। আর এই সভ্যতার ভিত্তি স্তরকে ভর করেই জন্ম হয়েছিল ইউরোপীয় রেনেসাঁর। এজন্য রেনেসাঁকে সভ্যতার পূর্ণজন্ম বলা হয়। অটোবন তুর্কি সুলতান সেলিম রাজ্য সম্প্রসারণের নেশায় উম্মত্ত হয়ে (মধ্যযুগে) গ্রীসের ভূখন্ড হতে “ঈড়হংঃধহঃরহড়ঢ়ষব” (যার নতুন নাম ইস্তাম্বুল। ইস্তাম্বুল নামের পটভূমি হল, সুলতান সেলিম যায়গাটা দখল করে তার নাম দেন ইসলামবুল, যা পরবর্তীতে ইস্তাম্বুল নামে রূপান্তরিত হয়) দখল করলে গ্রীক খ্রীষ্টান পন্ডিত ও জ্ঞানী গুনি ব্যক্তিরা ধর্ম হারানোর ভয়ে ইটালীয় আর্ডিয়াটিক সাগর পার হয়ে রোমে পাড়ি জমায় এবং সেখান থেকে তারা সমগ্র ইউরোপে ছড়িয়ে পড়েন এবং জ্ঞানের প্রসারণ ঘটান। জন্ম নেয় ইতালিতে রোম কেন্দ্রিক রোমানীয় সভ্যতার এবং একই সাথে উদ্ভব ঘটে ইউরোপীয় রেনেসাঁর। এখান থেকে পরিস্কার হয়ে যায় যে, সভ্যতার সৃষ্টির জন্য এক দিকে যেমন ভৌগলিক পরিবেশ মূখ্য ছিল অন্য দিকে তেমনি জ্ঞান বিস্তারের উপযুক্ত পরিবেশ প্রয়োজন ছিল। শিক্ষা বিস্তারের জন্য এবড়মৎধঢ়যরপধষ াধৎরবঃু বিবেচ্য বিষয় হয়ে একইভাবে বিভিন্ন পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজন হয়ে উঁকি দিতে থাকে। অঞ্চল ভেদে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে সামান্য পরিসরে সংস্কৃতিক ও ক্রিষ্টিগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। এজন্য এলাকার সাংস্কৃতিকে লক্ষ্যে রেখে শিশুদের জন্য বিদ্যালয় পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তবে মাথায় রাখতে হবে, কৃষ্টি কালচারের পার্থক্য যতই থাক না কেন সরকারের নির্ধারিত একীভুত শিক্ষা কিংবা সবার জন্য একই শিক্ষা নীতি বাস্তবায়নের যোগ্য পরিবেশ শিশুদেরকে উপহার দিতে হবে। শ্রেণি, বর্ণ, গোত্র, ধনী, গরীব, নির্বিশেষে সকল শিক্ষার্থীর পাঠ গ্রহণের উপযোগী পরিবেশের কিছু সাধারণ উপাদান অপরিহার্য।
(১) শিক্ষকঃ শিখন কার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের মূখ্য উপাদান হল শিক্ষক। শিক্ষককে হতে হবে আদর্শ, যাকে নির্ভয়ে অনুসরণ করবে শিশুরা। শিক্ষকের আকর্ষণে আবেগময়ী শিশুরা বিদ্যালয়মূখী হবে। আমি মনে করি, শিশুদের বিদ্যালয় বিমুখ হওয়ার প্রধান কারণ শিক্ষকের বৈরী আচরণ। পুলিশী আচরণ মানব মনকে কাছে টানেনা বরং দূরে ঠেলে। আর মনের আকর্ষণ ছাড়া শিখন ফলপ্রসূ হয় না।
(২) পাঠ্যপুস্তকঃ ফলপ্রসূ শিখনের জন্য কর্মমূখী শিখন সবচেয়ে উপযোগী। হাতে কলমে কাজ কওে শিশুরা যা শিখতে পাওে তাত্ত্বিক পাঠে তা পারেনা। ভাষা শিক্ষার পুস্তক গুলোতে চৎধপঃরপব বহুল ঞবীঃ থাকতে হবে। এছাড়া বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং বিজ্ঞান পুস্তক গুলোও ঢ়ৎধপঃরপধষ কার্যক্রমে সমৃদ্ধ হবে। মোট কথা কর্মমূখী শিক্ষাই মানুষকে জীবন মূখী কওে তোলে।
(৩) শিক্ষা উপকরণঃ শিশুর শিখনে পূর্ণতা আনার জন্য এবং শিখনকে সহজবোধ্য করার জন্য পাঠ সংশ্লিষ্ট উপকরণ ব্যবহার করতে হয়। উপকরণের যথাযথ ব্যবহার পাঠের প্রায় ৩০ শতাংশ শিশুর কাছে বোধগম্য কওে তোলে। উপকরণ বলতে শুধু পাঠ্য পুস্তকের ছবি, হাতে আঁকা ছবি, কিংবা হাতে তৈরি কোন জিনিসকেই বুঝায়না বরং পাঠ সদৃশ্য কোন আবৃত্তি, ছন্দ সঙ্গীত, গল্প কৌতুক, গেইম ইত্যাদি হতে পারে। গণিতের ক্ষেত্রে বাস্তব উপকরণ হিসেবে শিশুদেরকেও ব্যবহার করা যায়। পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে সহজলভ্য বস্তুকে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। যেমন কাঠি, মার্বেল, তেতুলের বিচি, কলম, পেন্সিল ইত্যাদি।
(৪) সুশৃংখল শিক্ষার্থী দল ঃ শিশুদেরকে বিদ্যালয়ের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৃংঙ্খলা বজায় রাখায় শিক্ষককে ভূমিকা নিতে হবে। শ্রেণী কক্ষে শৃংঙ্খলা না থাকলে শিশুর মনে গ্রহণের চষধঃভড়ৎস সৃষ্টি হবে না। শিশুদের পাঠ গ্রহনের জন্য এমন আবেগে আপ্লুত করতে হবে যেনতারা নিজেরাই শৃংঙ্খলিত হয়ে পাঠের প্রতি পূর্ণ ভাবে মনোনিবেশ করতে পারে । শিক্ষকের একটু সতর্ক দৃষ্টিই এর প্রধান নিয়ামক।
(৫) ভালবাসা ঃ পৃথিবী তার এক বুক ভালবাসা নিয়ে সূর্যের চারিদিকে ঘুরে বেড়ায়। আর শিশুরা ভালবাসায় বুকটাকে ভরার জন্য শিক্ষকের চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। তারা যেন ভালবাসার কাঙ্গাল। শিশুর এহেন চাহিদাকে শিক্ষক বুঝতে পারলেই তিনি লক্ষ্যে পৌছাতে পারবেন। পুলিশী নীতি মন জয় করার পরিবর্তে মনে ঘৃণার উদ্রেক করে। অপর দিকে ভালবাসা দ্বারা মনকে সহজে জয় করা যায়। এই পরিবেশ শিশুর শিখনে অধিক সহায়ক।
(৬) পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ঃ বিদ্যালয়ের সুন্দর পরিপাটি শিশুর মনে বিদ্যালয়ের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি করে। বিদ্যালয়ের মনোরম এবঃঁঢ় শিশুকে বিদ্যালয়ের প্রতি আকৃষ্ট করবে। বিদ্যালয়ের প্রতি আকর্ষণই শিশুর সফল শিখন।
মো: আকবর হোসেন
মোবাইল নং ০১৭১৯৪৩২১০৪
তারিখ : ২৭-৭-১৭