পাইকগাছায় বদ্ধ মিনহাজ নদী জলমহল বিরোধ নিয়ে আবারো সংঘর্ষের আশংকা

আলাউদ্দীন রাজা, পাইকগাছা ॥11
পাইকগাছায় বহুল আলোচিত বদ্ধ মিনহাজ নদী জলমহল বিরোধ নিয়ে আবারো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে এলাকাবাসী। দ্বিতীয়পক্ষদ্বয় অনুপ্রবেশ বন্ধ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে একাধিক মামলার আসামী পুলিশের সহায়তায় আব্দুর রব, এনামুলের দখলীয় জলমহলের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে এবং নেটপাটা উদ্ধারের নামে বাড়ীতে বাড়ীতে তল্লাশী ও হুমকি প্রদর্শন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকাবাসী উর্দ্ধতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।
সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, উপজেলার লস্কর, চাঁদখালী ও গড়ইখালী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ২৫১ একরের মিনহাজ নদী জলমহল উপজেলার পূর্ব গজালিয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি জেলা প্রশাসকের নিকট থেকে ৩ বছরের জন্য ইজারা গ্রহণ করেন। উক্ত সমিতি গড়ইখালী ইউনিয়নের আমিরপুর গ্রামের এবিএম এনামুল হক ও সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জি,এম, আব্দুর রবকে পৃথক পৃথক খন্ডে নেটপাটা দিয়ে সাব-লীজ প্রদান করলে তারা মৎস্য চাষ করে আসছিল। পরবর্তীতে জলমহল ভাগাভাগি নিয়ে এনামুল ও রব বিরোধে জড়িয়ে পড়ায় সমিতির সভাপতি-সম্পাদকরা অসহায় হয়ে পড়ে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন হামলা, মামলা, দখল, পাল্টা দখলের কারণে এলাকায় আইনশৃংখলার চরম অবনতি ঘটলে প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারী করেন। এনামুল অভিযোগ করেছে, রব ষড়যন্ত্র করে পুলিশ দিয়ে সাজানো অস্ত্র মামলা সহ বিভিন্ন হয়রানীমূলক মামলা দিয়ে আমাকে জেলহাজতে পাঠায়। আদালত থেকে জামিন পেয়ে বাড়ী আসলে ২৬ জুলাই বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফকরুল হাসানের দপ্তরে উভয়পক্ষকে নিয়ে বসাবসি করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, ভাইস চেয়ারম্যান মাওঃ শেখ কামাল হোসেন, শাহানারা বেগম সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। বসাবসির এক পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এনামুল ও রব পক্ষকে জলমহলে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন। উক্ত জলমহল সমিতির নিয়ন্ত্রণে থাকার নির্দেশনা দেন। কিন্তু এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে একাধিক মামলার আসামী জামিন না নিয়ে জি,এম, আব্দুর রব তার লোকজন নিয়ে এস,আই শাহাবুদ্দীন ও এএসআই মেহেদী হাসানের সহযোগিতায় নেটপাটা, নৌকা উদ্ধারের নামে আমিরপুর ও কানাখালী গ্রামের সাইফুল সানা, খায়রুল ইসলাম, মুজিবর, মনিরুল সহ বিভিন্ন লোকের বাড়ীতে যেয়ে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয় বলে এলাকাবাসী জানায়। এ দু’পুলিশ কর্মকর্তার সহায়তায় রব পেশি শক্তি বলে এনামুলের বাড়ীর পুকুরে থাকা একটি নৌকা ও ঘর থেকে জাল নিয়ে যায় বলে এনামুলের পরিবার অভিযোগ করেছে। এ ঘটনা জানতে সাংবাদিকরা শুক্রবার সকালে এলাকায় গেলে শ’শ’ নারী পুরুষ বদ্ধ জলমহলের পাশে ভিড় জমিয়ে রবের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেন। এ অভিযোগ প্রসঙ্গে রব জানান, পুলিশ ঐ এলাকায় যায়নি। মালামাল উদ্ধারের নামে কোন তল্লাশীর ঘটনা ঘটেনি। জলমহলটি সমিতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এলাকাবাসী উর্দ্ধতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

পাইকগাছায় ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে বড় ভাইয়ের সাংবাদিক সম্মেলন
পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি ॥
বৃহস্পতিবার দুপুরে পাইকগাছার হাউলী গ্রামের আছিরুদ্দীন গাজী তার ছোট ভাই আজিরুদ্দীনের বিরুদ্ধে মামলাবাজ, জবর দখলকারীর অভিযোগ এনে পাইকগাছা প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার পিতা মৃত বেলায়েত গাজী জীবিত থাকাবস্থায় হাউলী গ্রামে নিজস্ব বসতবাড়ীতে বসবাস করতেন। ঐ সময় আমার ছোট ভাই আজিরুদ্দীনের উৎশৃংখলা ও সম্পত্তি তছরুপের আশংকায় তিনি তাকে পার্শ্ববর্তী প্রতাপকাটি মৌজায় বাড়ী ঘর বেঁধে দিয়ে পৃথক করে দেন। পিতার মৃত্যুর পর এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে প্রতাপকাটি মৌজায় ২টি খতিয়ান এবং হাউলী মৌজায় ৬টি খতিয়ানের সমুদয় সম্পত্তি ৫ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে বন্টন করা হয়। প্রতাপকাটি মৌজায় আমার পৈত্রিক ও খরিদা সম্পত্তি অন্যত্র বিক্রয় করি। আর আজিরুদ্দীন হাউলী মৌজায় তার পৈত্রিক ও খরিদকৃত সম্পত্তি হতে প্রায় ৮ শতক জমি পার্শ্ববর্তী জুলহাজ গাজীর নিকট বিক্রয় করে। সেখানে সে দখলে আছে এবং বাকী সম্পত্তি স্থানীয় সার্ভেয়ার নেছার উদ্দীন সরদারের দ্বারা জরিপ করতঃ তার অংশ সে বুঝে নেয়। যা সে অদ্যবদি পর্যন্ত ভোগ দখলে রয়েছে। অথচ সে নিজ সম্পত্তি বাদে আমার সম্পত্তি জবর দখলের জন্য প্রায় হামলা চালায়। এছাড়াও একের পর এক আমার ও আমার পরিবারবর্গের নামে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে হয়রানী করছে। এ পর্যন্ত আজিরুদ্দীন আমাদের নামে কমপক্ষে ৮টি অভিযোগ করেছে। যার মধ্যে পাইকগাছা থানায় ৭৯৮/১৭ নং জিডি রয়েছে। তার দায়ের করা পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের এম.আর ৪৬/১৫ নং মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আজিরুদ্দীন নিজ অপকর্ম ঢাকতে গত ২৪ জুলাই কপিলমুনি সিটি প্রেসক্লাবে আমার নামে একটি বানোয়াট সংবাদ সম্মেলন করেছে।

Check Also

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।