বেনাপোল প্রতিনিধি
আজ মংগরবার পহেলা আগস্ট থেকে দেশের সর্ববৃহৎ স্থল বন্দর বেনাপোল সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হচ্ছে। বেনাপোল বন্দরের সাথে ভারতের সঙ্গে আমদানি রফতানি বাণিজ্যে গতিশীলতা রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও বন্ধুত্ব সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বেনাপোল বন্দর রাত দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ইতিমধ্যে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ রাতে বন্দরে সার্বক্ষনিক কাজ করার জন্য ব্যপক প্রস্তুতি নিয়ে সর্ভিলেন্স টিম গঠন করে আজ রাত থেকে টহল ব্যবস্থা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বর্তমানে বেনাপোল স্থলবন্দরে ভয়াবহ পণ্যজট এবং যানজট’র কারনে দু’দেশের আমদানি রফতানি বানিজ্য ব্যহত সহ বন্দরের স্বাভাবিক কাজকর্মে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি হচ্ছিল। ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যানজটের কারণে ভারত এবং বাংলাদেশের উভয় পাশে ব্যবসায়ীরা দ্রুত মালামাল খালাস নিতে পারছে না। কোলকাতা থেকে রওনা হবার পর একটি পন্যবাহি ট্রাক বেনাপোল বন্দরে পৌছাতে বর্তমানে সময় লাগছে ১৫ থেকে ২০ দিন। এর পর রয়েছে কাস্টমস এর শুল্কায়ন জটিলতা। ফলে মালামাল খালাসে সৃস্টি হয় অহেতুক বিলম্ব । অখচ কোলকাতা থেকে বেনাপোল বন্দওে একটি ট্রাক প্রবেশ করতে সময় লাগে মাত্র ৪ ঘন্টা। বন্দর ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার নিমিত্তে ইতিমধ্যে বন্দর এবং কাস্টমস এর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় গত মাসের ১৩ তারিখে বেনাপোল কাস্টমস ক্লাবে প্রশাসনের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন। তাতে উঠে এসেছে বন্দরের সার্বিক অব্যবস্থাপনার কথা।
বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, বেনাপোল বন্দরে এই মুহূর্তে মালামাল রাখার ধারণ ক্ষমতা ২০ থেকে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু মালামাল রয়েছে দুই লাখ মেট্রিক টন। যত্রতত্র খোলা আকাশের নীচে, রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে আমদানিকৃত এ সব মালামাল। ভারতের অংশে ২০/২৫ দিন আমদানিকৃত পণ্যবাহী ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকার পর যখন বাংলাদেশে প্রবেশ করছে তখন বেনাপোল বন্দরে মালামাল রাখার জায়গার অভাব এবং ক্রেন ও ফরক্লিপট না থাকার কারণে এ সব মালামাল আনলোডের অপেক্ষায়ও ১০/১২ দিন দাঁড়িয়ে আছে। রাতে বিদ্যুত না থাকায় বেনাপোল বন্দও এলাকায় নিরাপওার বিষয়টি ব্যবসায়ীদেও ভাবিয়ে তুলেছে।
বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট ব্যবসায়ীরা এবং আমদানি-রফতানিকারকগণ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ২৪ ঘণ্টা ঘোষণা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। সে ক্ষেত্রে প্রতিদিন ভারত থেকে আটশ’ থেকে এক হাজার পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করতে হবে। বর্তমানে মাত্র ২৫ ট্রাক পন্য আমদানি হচ্ছে ভারত থেকে। গত বছরও এর সংখ্যা ছিল ৫০০ ট্রাক। অনতি বিলম্বে বাংলাদেশ অংশে বন্দরের নিজস্ব ট্রাক টার্মিনাল, আমদানিকৃত বিভিন্ন কোম্পানির নতুন গাড়ির চেসিস রাখার জন্য দুইশ’ একর জমির উপরে ওপেন ইয়ার্ড, ভারী মালামাল মেশিনারি বা অন্যান্য মালামালের ক্ষেত্রে নতুন নতুন ইয়ার্ড এবং শেড প্রয়োজন ।
ভারতীয় ট্রার্মিনাল হতে বেনাপোলের আমড়াখালী পর্যšত ৩ কিলোমিটার বাইপাশ সড়কটি জরুরি মেরামত কওে চালু করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমসের কমিশনার শওকাত হোসেন বলেন, ৭দিনে ২৪ ঘন্টা কাস্টমস ও বন্দর খুলে রাখার সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রাতে ও দিনে দুই শিফটে কাজ করার জন্য অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে ২৪ ঘন্টা যাত্রী পারাপারের জন্য চেকপোস্ট খুলে রাখার কোন নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।
মসিয়ার রহমান কাজল।বেনাপোল