সরকারী সহায়তায় কম্পিউটার শিখছে আদিবাসীসহ শিক্ষার্থীরা

রানীশংকৈল প্রতিনিধিঃ-বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে পড়ালেখার পাশাপাশি কম্পিউটার শেখার খুব ইচ্ছে কিন্তু অর্থনেতিক অভাবে শিখতে পারছিলাম না। বাবার অভাবী সংসার। পরিবারের খরচের পাশাপাশি আমার পড়ালেখার খরচ চালাতে হিমশিম খেয়ে যাই বাবা। এদিকে কম্পিউটার শিখতে চাইলে ফি বাবদ দিতে হবে মোটা অংকের টাকা। তাই অর্থনৈতিক অভাবে ইচ্ছা থাকা সত্বেও শেখা সম্ভব হয় নি।কিন্তু এখন আমি কম্পিউটার শিখছি।,আমি একটি মাধ্যম দিয়ে জানতে পারি আমাদের উপজেলায় সরকারী সহায়তায় গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের উপজেলা পরিষদে কম্পিউটার প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা রয়েছে। তখন আমি সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের সাথে যোগাযোগ করি। এবং কম্পিউটার প্রশিক্ষন নেওয়ার সুযোগ পাই। আমাকে এখন অনেক ভাল লাগছে আমি অনেক খুশি আমি কম্পিউটার শেখার সুযোগ পেয়ে এ কথাগুলো শনিবার সকালে বলছিলেন ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলার প্রত্যন্ত রাউতনগর গ্রামের উচ্চ মাধ্যমিকের আদিবাসী শিক্ষার্থী সুহালা কিসমু।
এছাড়াও একই অনুভতি প্রকাশ করে এলিসতিনা কিসমু বলেন,অর্থনেতিক অভাবে শিখতে না পেরে এক সময় কম্পিটারটি ন্যাড়ে দেখার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল। কিন্তু সে ইচ্ছেও পুরন হয়নি। তবে এখন শুধু ঐ ইচ্ছেটে নই। সব ইচ্ছে পুরন হচ্ছে আমি কম্পিউটার প্রশিক্ষন গ্রহন করছি। কম্পিটারের বিভিন্ন প্রোগামের কাজ শিখছি। একইভাবে অনুভুতি প্রকাশ করেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থী শারমিন,মাহবুব আলমসহ অনেকে। তারা সবাই গরীব পরিবারের সন্তান অর্থনৈতিক অভাব অনটনের স্বীকার হয়ে কম্পিউটার শেখার ইচ্ছা থাকলেও টাকার অভাবে শিখতে না পেরে অনেক আক্ষেপ ছিলো তাদের মনে। সরকারী সহায়তায় কম্পিউটার শিখতে পেরে তাদের সে আক্ষেপ আর নেই। তারা এখন খুশি।
ইউএনও অফিস সুত্রে জানা যায়, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের বিশেষ এলাকার জন্য কম্পিউটার প্রশিক্ষন গ্রহনের প্রকল্প অনুযায়ী রানীশংকৈল উপজেলায় এই প্রশিক্ষন কেন্দ্রটি স্থাপিত হয়। মোট ১৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দে কম্পিউটার ঘর নির্মান সহ ১০টি কম্পিউটার ক্রয় করে এবং একজন প্রশিক্ষক নিয়োগ করে এ কার্যক্রম ২৮ ফেব্রুয়ারী/২০৬ইং শুরু হয়। ইতিমধ্যে ৩মাস মেয়াদী ২০ জনের ৪টি ব্যাচ শিখিয়ে ৫ম ব্যাচে মোট ৪০ জনের ২ভাগে প্রশিক্ষন চলছে। তবে প্রশিক্ষনার্থীর চাহিদা অনুযায়ী কম্পিউটার সংর্কীণ। একটি কম্পিটারে ২জন করে শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষন গ্রহন করতে হয় বলে জানা যায়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একটি কম্পিউটারের টেবিলে পাশাপাশি ২টি চেয়ার নিয়ে কম্পিটার প্রশিক্ষন গ্রহণ করছে শিক্ষার্থীরা। কম্পিউটার স্বল্পতার কারনেই এমনভাবে ভাগাভাগি করে বসা বলে জানান প্রশিক্ষক সুমন। তিনি মনে করেন সরকারীভাবে যদি কম্পিউটার আরো বৃদ্বি করা যায় তাহলে প্রশিক্ষানার্থীদের জন্য ভাল হয়। পাশাপাশি আরো অনেক শিক্ষার্থী প্রশিক্ষনে অংশ গ্রহনে সুযোগ পাবেন। তাই তিনি সরকারের উচ্চ মহলের দৃষ্টি আর্কষন করেন।
এ ব্যাপারে ইউএনও খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান বলেন,প্রশিক্ষন কেন্দ্রটি উপজেলায় ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে প্রশিক্ষন গ্রহন করেছে। তিনি আরো বলেন,কম্পিউটার প্রশিক্ষন কেন্দ্রটি প্রসারিত করার জন্য ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সাথে যোগাযোগ করেছি । বরাদ্দ পেলে প্রসারিত করার ব্যবস্থা দ্রুত করা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

 

Check Also

সাতক্ষীরা টু শ্যামনগর মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন

দেবহাটা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা টু শ্যামনগর মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। মঙ্গলবার (১৯ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।