চুয়াডাঙ্গা: ঈদের জামাতে উসকানিমূলক ও রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার ঈদগাহ মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২ পক্ষের সংঘর্ষে কম পক্ষে ২৪ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার সকালে উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের ঈদগাহ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ১৬ জনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ও ৭ জনকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতদের ২ জন গুলিবিদ্ধ এবং বাকিদের শরীরে বোমার স্প্লিন্টারের আঘাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষ।
জানা গেছে, হাপানিয়া গ্রামে শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঈদগাহে জমা হয় হাজারো মুসল্লি। নামাজের জামাত শুরু হওয়ার আগে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি মেম্বার ইমদাদুল হক ইমামের স্থানে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগের অন্য গ্রুপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম উসকানিমূলক ও রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া শুরু করেন।
এ সময় সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। তার প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দিতে বাধা দিলে শুরু হয় ২ পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এক পর্যায়ে গোলাগুলি শুরু হয়। এ সময় ৩টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মাঠে পর পর দুটি বোমা হামলার পর কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। স্থানীয় হাপানিয়া পুলিশ ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনার সময় সাধারণ মুসল্লিরা আতংকে ছোটাছুটি শুরু করেন। ক্যাম্পের পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়ে ২ পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ সময় গুলিবিদ্ধ ও বোমাঘাতে আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে জয়নাল আবেদীন নামে গুলিবিদ্ধ একজনকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়।
অন্য আহতরা হলেন- হালিম আলী, সৌরভ হোসেন, মতিয়ার হোসেন, সেলিম শেখ, মিলন আলী, হাসান আলী, আজিজুল হক, সোহরাব হোসেন, নজরুল ইসলাম, করম আলী, মকলেছুর রহমান, ফিরোজ আহমেদ, সুইট আলী, কায়েম আলী ও মাজেদ আলী। অপর পক্ষের রাহাত আলী ও মন্টু জানান, জামাল উদ্দিন, আবু তাহের, ওহাব, কালু, লিটন. মিলন ও রানাকে প্রতিপক্ষের লোকজন কুপিয়েছে। তাদেরকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জাতীয় সংসদের হুইপ সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার হাসপাতালে এসে আহতদের খোঁজখবর নেন। এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, ‘ইমদাদুল মেম্বারের নেতৃত্বে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় অন্যরা বোমা হামলা চালায়।’
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার নিজাম উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গোটা গ্রামে পুলিশি টহল শুরু হয়েছে বলে তিনি জানান।
আলমডাঙ্গা থানার ওসি আকরাম হোসেন জানান, এ ঘটনায় ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।