কামাল হোসেন আজাদ/শাহজালাল শাহেদ কক্সবাজার : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মগসেনাদের অমানুষিক নির্যাতনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলমানদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট। উখিয়া ও টেকনাফের আঞ্চলিক মহাসড়কের দু’পাশে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের আর্তনাদ থেমে নেই। যেদিকে তাকাই শুধু মানুষ আর মানুষ। কারো কোলে শিশু, কারো কাঁধে বয়সের ভারে নূইয়ে পড়া মা-বাবা। তারা ছুটছে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে।
অনেকের পরনে ভেজা কাপড়। সড়কে খাদ্যবাহী কোন গাড়ি দেখলেই ছুটছে নারী-পুরুষ আর অভুক্ত শিশুরা। সংবাদকর্মীদের গাড়ি থামিয়ে জানালায় খাবার আর পানির আকুতি জানাচ্ছে এসব মানুষ। নারীরা তাদের অবুঝ সন্তানদের দেখিয়ে খাবার ভিক্ষা চাইছে রোহিঙ্গা ভাষায়। উখিয়া-টেকনাফের সড়ক জুড়ে ও রাবার বাগানসহ বন-জঙ্গলে বাঁশ আর পলিথিনের ছাউনীতে তৈরি করছে নতুন রোঙ্গিাপল্লী। মিয়ানমারে নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সীমান্ত পথে এসব আশ্রয়স্থলে মাথা গোজার ঠাঁই নিতে লাইন ধরে আসছে রোহিঙ্গা মুসলমানরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দু’পাশে রোহিঙ্গাদের ¯্রােত। কেউ আশ্রয়স্থলের খোঁজে মাথায় ঝুঁড়ি, কাপড়-চোপড় নিয়ে হাঁটছে। কেউ খাবারের টাকার জন্য হাত পাতছে মানুষের কাছে। এদিকে, রাখাইনের সহিংসতা থেকে বাঁচতে স্রোতের মতো ধেয়ে আসা বিপন্ন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষরা অমানবিক দিন যাপন করছেন বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে। প্রয়োজনীয় খাবার আর পানির অভাবে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে তাদের জীবন। কোনও রকমে নিজেদের জন্য মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিলেও তারা ক্ষুধা-তৃষ্ণার যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাওয়ার পথ পাচ্ছে না।
একটি অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া আলি জোহার ও তার স্ত্রী খুদিজা জানান, ‘আমি দুই দিন আগে বাংলাদেশ এসেছি। কারণ কয়েকজন বৌদ্ধ এসে আমাদের ছুরিকাঘাত করতে থাকে এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। আমার বাড়ি পুড়ে গেছে। সঙ্গে কিছুই নিয়ে আসতে পারিনি।’ তাছাড়া মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ পালিয়ে আসার পথে জঙ্গলে তাদের এক মেয়ে শিশুর জন্ম হয়েছে।