নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের বড়াইগ্রামে চুরির অভিযোগে ফারুক হোসেন নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে বড়াইগ্রাম পৌরসভার কাউন্সিলর মাসুদ রানা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে আহত ওই শ্রমিক নাটোর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত ফারুক হোসেন উপজেলার মৌখড়া চৌকিদারপাড়ার কাশেম আলীর ছেলে। আহতের বাবা কাশেম আলী ও স্থানীয়রা জানান, গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাজারের একটি চায়ের স্টলে চুরির অভিযোগে বড়াইগ্রাম পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাসুদ রানা ও তার সহযোগী মোস্তফা, করিম, বাবু, সাইদসহ কয়েকজন ফারুক হোসেনকে তুলে নিয়ে যায় কাউন্সিলরের চেম্বারে। পরে তারা চুরি যাওয়া টাকা ফেরৎ দিতে বললে সে চুরি করেনি বলে জানায়। এতে কাউন্সিলর মাসুদ রানা ও তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ফারুক হোসেনকে এলোপাথারী পিটিয়ে জখম করে এবং তার ডান পায়ের হাটু গুড়িয়ে দেয়। এসময় ফারুক হোসেন আঘাত সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে পরে তাকে একটি ঘরে আটকে রাখে। পরদিন সকালে তার স্বজনদের ডেকে তাকে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। ঘটনার পর আঘাতের স্থানে ক্ষত সৃষ্টি হলে এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ফারুককে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে কাউন্সিলরের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজী হচ্ছে না এবং থানায় কোন অভিযোগ করতে পারছে না। আহত ফারুক হোসেন জানান, কাউন্সিলর মাসুদসহ কয়েকজন লাঠি দিয়ে আঘাত করার পর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে কবিরাজের কাজে চিকিৎসা করান। ধীরে ধীরে আরও অসুস্থ হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ফারুকের বড় বোন ফাহিমা খাতুন জানান, তার ভাইকে যারা আহত করেছে তাদের বিচার হওয়া উচিত। ডাক্তরা ফারুককে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেছে। তাদের কাছে চিকিৎসা করার মতো টাকা নেই। বড়াইগ্রাম পৌরমেয়র বারেক সরকার জানান, বিষয়টি লোকমুখে শুনে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। প্রকৃত ঘটনা জেনে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। এ বিষয়ে কাউন্সিলর মাসুদ রানার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনাটি অস্বীকার করে প্রথমে বলেন ফারুক হোসেন নামে কাউকে চেনেন না। একটু পর বলেন, শুনেছি পড়ে গিয়ে ফারুকের পা ভেঙ্গে গেছে। কিছুক্ষণ পরে বলেন, ফারুক একজন মাদকাসক্ত। চুরির অপরাধে এলাকাবাসির গণপিটুনিতে তার পা ভেঙ্গে গেছে। আমি পাঁচজনের সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করে কাউন্সিলর হয়েছি। প্রতিপক্ষ আমাকে ফাঁসাতে উঠেপড়ে লেগেছে। নাটোর সদর হাসপাতালের সিনিয়র সার্জন ডাঃ গোলাম কিবরিয়া জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় ছেলেটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার ডান পা গুরুতর জখন হয়েছে। বেশ কয়েকটা অপারেশন করতে হবে। প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহরিয়ার খাঁন জানান, এ ঘটনায় কোন মামলা দায়ের হয়নি। তবুও সংবাদকর্মীদের কাছে খবর পেয়ে ওসি তদন্ত সৈকত হাসান বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
নাটোরে আরো চার ক্লিনিককে ছয় লাখ টাকা জরিমানা
নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরে আরো চারটি ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারকে বিভিন্ন অকেজো যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে অদক্ষ জনবল দিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষার মাধ্যমে ভুয়া ব্যবস্থাপত্র প্রদান, অপারেশন সহ স্বাস্থ্য সেবায় অনিয়মের অভিযোগে র্যাবের ভ্রাম্যমান আদালত আরো ছয় লাখ টাকা জরিমানা করেছে। ঢাকার র্যাব হেড কোয়ার্টারের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আনিসুর রহমানরে নতেৃত্বে বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতালে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানে মুক্তি ক্লিনিককে দুই লাখ, শেফা ক্লিনিককে দুই লাখ, নাটোর জেনারেল হাসপাতালকে দেড় লাখ ও চামেলী ডায়াগনষ্টিক সেন্টারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর আগে একই অভিযানে সকালে পপুলার ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিক ও ডাক্তার সহ চারজনকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। নাটোর র্যাব-৫ এর কোম্পানী কমান্ডার এএসপি শেখ আনোয়ার হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসব প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় জরিমানা ছাড়াও কোন কোন হাসপাতালের প্যাথলজী ল্যাব, আলট্রাসনোগ্রাম ও অপারেশন থিয়েটার রুম সিলগালা করে দেয়া হয়েছে।