বগুড়ার শেরপুরের মহিপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাস থামিয়ে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে দুর্বৃত্তরা বগুড়া শহর ছাত্রলীগের সভাপতি আতাউর রহমান আতার বাবা আবু জাফর ও ভাতিজা তৌহিদুল ইসলামকে চোখে বেঁধে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে।
দুর্বৃত্তরা পাঁচ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার পর তাদের সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ভুঁইয়াগাতি বাসস্ট্যান্ডের কাছে ফেলে রেখে যায়।
রোববার দুপুরের এ ঘটনায় পুলিশ রাতে উল্লাপাড়া থেকে একটি মাইক্রোবাসসহ তিন দুর্বৃত্তকে গ্রেফতার করেছে।
শেরপুর থানার ওসি খান মো. এরফান জানান, ডিবি পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণাকারী ‘গ্যাং’ শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের অপর সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
গ্রেফতার তিনজন হলেন- সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার পশ্চিম উল্লাপাড়া এলাকার আজাদ রহমানের ছেলে কাওসার হোসেন (৩০), একই এলাকার হায়দার আলীর ছেলে আবদুল আজিজ (৩৫) ও শ্রীকোলা এলাকার রমজান আলী বাবুর ছেলে আবদুর রাজ্জাক (২৫)। তারা সবাই মাইক্রোবাসচালক।
বগুড়া শহর ছাত্রলীগের সভাপতি আতাউর রহমান আতা ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, তিনি শহরের জলেশ্বরীতলায় বাসা নির্মাণ করছেন। তার বাবা আবু জাফর ও ভাতিজা তৌহিদুল ইসলাম রড কেনার জন্য ৫ লাখ টাকা উত্তোলন করতে রোববার বেলা পৌনে ১১টার দিকে ইসলামী ব্যাংক শেরপুর শাখায় যান।
ব্যাংকে চেক জমা দেয়ার ৪০ মিনিট পর তারা টাকা বুঝে পান। এরপর সোয়া ১১টার দিকে দাদা ও নাতি একটি ব্যাগে টাকা নিয়ে করতোয়া গেটলক বাসে বগুড়া শহরের দিকে রওনা হন।
বাসটি কলেজ রোড এলাকায় পৌঁছলে কিছু যাত্রীর আচরণ সন্দেহ হওয়ায় তারা বাস থেকে নেমে যান। এরপর বগুড়া শহরগামী অপর একটি বাসে ওঠেন।
শেরপুরের মহিপুর সরকারি দুগ্ধ খামারের সামনে পৌঁছলে ৩টি মাইক্রোবাসে আসা দুর্বৃত্তরা ব্যারিকেড দিয়ে বাসটি থামায়।
এরপর ডিবি পুলিশের জ্যাকেটপরিহিত ৪-৫ জন ব্যক্তি নিজেদের পুলিশ পরিচয়ে বাসে ওঠে এবং আবু জাফর ও নাতি তৌহিদুল ইসলামকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তোলে। তাদের কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে মারধর করা হয়।
সোয়া ১২টার দিকে আবু জাফর ও তৌহিদের কাছ থেকে টাকা এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার পর তাদের সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ভুঁইয়াগাঁতি এলাকায় ফেলে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
পরে তারা স্থানীয়দের সহায়তার বগুড়ায় ফেরেন। তারা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ছাত্রলীগ নেতা আতা জানান, তার বাবা ও ভাতিজাকে অপহরণের বিষয়টি শেরপুর থানা, ডিবি ও সিআইডি পুলিশকে অবহিত করা হয়।
এরপর রোববার সন্ধ্যার দিকে শেরপুর থানা পুলিশ অভিযানে নামে। তারা রাত ৯টায় উল্লাপাড়ায় পৌঁছান। এরপর সোমবার ভোর ৬টা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে কাওসার, আজিজ ও রাজ্জাককে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া অপহরণ কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি (ঢাকা-মেট্রো-চ-১৫-৮৬৩৪) জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনায় জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করেছে বলে জানান শেরপুর থানার এসআই আরিফ।
তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া দুর্বৃত্তরা অপহরণের ঘটনায় ১০/১২ জন জড়িত ছিল জানিয়ে তাদের নাম-ঠিকানা জানিয়েছে। তবে ছিনিয়ে নেয়া টাকাগুলো পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত মাসে বগুড়ার সান্তাহারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক আলু ব্যবসায়ীর কাছে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।যুগান্তর